শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন শুরু হয় গত বছরের জুলাইয়ে। পরে ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
ওই সময়টিতে অস্থির ছিল দেশ। তার প্রভাব ফুটে উঠেছে দেশের বাইরে থেকে আসা বিনিয়োগেও। ওই সময়ের তিন মাসে সরাসারি বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৭১ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে দেশে নিট সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) গত অর্থবছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় প্রায় ৭১ শতাংশ কমেছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বিদেশ থেকে সরাসরি বিনিয়োগ আসে ৯৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর এ সময় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৮৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার নিয়ে গেছেন। তাতে নিট বিনিয়োগ দাঁড়ায় ১০ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বিদেশ থেকে সরাসরি বিনিয়োগ আসে ৯০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এসময় আগের বিনিয়োগের অর্থ পরিশোধ হয় ৫৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। সে হিসাবে তখন নিট বিনিয়োগ দাঁড়ায় প্রায় ৩৬ কোটি ডলার। এতে এক বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগ কমেছে ২৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ৭১ শতাংশ।
আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের বিদেশি বিনিয়োগ যেমন কমেছে তেমনি আগের প্রান্তিকের চেয়েও সেটি অনেক কমেছে।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিক এপ্রিল থেকে জুন সময়ে নিট বিনিয়োগ ছিল ২৭ কোটি ২২ লাখ ডলার। সেসময় ১০৮ কোটি ডলার দেশে এলেও আগের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পরিশোধ হয় ৮১ কোটি ১০ লাখ ডলার।
সেই হিসাবে আগের প্রান্তিকের চেয়ে চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে নিট বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৬১ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে সে সময়ের রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল ছিল। এ কারণে সেই প্রান্তিকে বিদেশি বিনিয়োগ কম এসেছে। ১৫ বছরের মধ্যে তো এমন রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। তাই এদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন বিদেশিরা।
তার মতে, ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এখনো পরিবেশ অনুকূলে নেই। এ কারণে সামনে বিদেশি বিনিয়োগ আরো কমতে পারে।
তিনি বলেন, সামনে যে রাজনৈতিক দলই সরকারে আসুক, তারা ব্যবসার পরিবেশ তৈরি করতে পারলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ