দেশের ব্যাংকিং খাতের শীর্ষ খেলাপী প্রতিষ্ঠান সমূহের তালিকায় রয়েছে আব্দুল কাদির মোল্লার থার্মেক্স গ্রুপ। গ্রুপটির কাছে রাষ্টায়ত্ব সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রুপালীসহ একডজন কমার্শিয়াল ব্যাংকের পাওনা রয়েছে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা। বছর বছর বিপুল পরিমাণ সুদযুক্ত হয়ে এ টাকার অংক বৃদ্ধি পেয়ে সরকারি ব্যাংকগুলোর জন্য ক্যানসার রূপ ধারণ করছে। বেসরকারি ব্যাংকংগুলোর জন্য অশণী সংকেত বলে মনে করছেন ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞদের অনেকে।
জানা যায়, ১৯৯৭ সালে তৈরী পোষাক কারখানার জন্য রাষ্টায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে ৯২ লাখ টাকার ক্যাপিটাল মেশনারিজ আমদানির মাধ্যমে ব্যাংকটির সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক শুরু হয় আব্দুল কাদির মোল্লার। অক্টোবর ২০২৪-এর হিসাবে আব্দুল কাদির মোল্লার প্রতিষ্ঠিত থার্মেক্স গ্রুপের ছয় প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাংকটি পাওনা হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা; ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে পুরো টাকাই ক্লাসিফায়েড হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের এই ঋণ আদায়ে কোনো তৎপরতা নেই গ্রুপটির, এমনই জানিয়েছে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠার প্রথম যুগে থার্মেক্স গ্রুপ সফলতার চুড়ায় পৌঁছায় একটি আদর্শিক একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত ছিলো। ২০১০ সালের পর আব্দুল কাদির মোল্লা অপরিকল্পিতভাবে বাড়াতে থাকেন নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান। এ সকল প্রতিষ্ঠানকে লুফে নিয়ে বিশাল অংকের বিনিয়োগ করে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। একে একে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ও বিনিয়োগ বাড়লেও আনুপাতিক হারে বাড়েনি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। শতভাগ রপ্তানিমূখী এ সকল প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানি-রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্যভাবে সফল না হওয়ায় থার্মেক্স গ্রুপের ব্যাংকগুলোতে লোন লায়াবিলিটি বেড়েছে গাণিতিক হারে। এ ছাড়া আমদানি-রপ্তানি সূচকের নিম্নমূখীতা, ঋণ প্রবাহের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে অসমতা এবং এক্সপোর্ট প্রসিডেও ব্যাংকিং বিধি-বিধান পরিপালিত না হওয়ায় ফোর্স লোন সৃষ্টি করতে হয়েছে কয়েকটি ব্যাংককে। ফোর্স লোনগুলোও যথারীতি পরিশোধে থার্মেক্স সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক যথাযথভাবে রক্ষা করেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের অনেকে। ব্যাংকারদের কেউ কেউ বলেছেন, এক যুগ ধরে থার্মেক্সের ব্যবসার গতি-প্রকৃতি, ঋণের পরিমাণ, আমদানি-রপ্তানির আনুপাতিক অবস্থার সার্বিক বিবেচনায় সরকারি ব্যাংকগুলোতে ঋণ পরিশোধের ধারা অনিয়মিত। এ পরিস্থিতিতে সরকারি ব্যাংকগুলো থেকে ভবিষ্যৎ সহায়তা পাওয়ার কোনো পথও খোলা রাখেনি থার্মেক্স ।
জানা যায়, আইনী ফাঁক-ফোকর বের করে কোর্টের মাধ্যমে এর মালিক আব্দুল কাদির মোল্লা তার সিআইবি ক্লিন রাখার কৌশল অবলম্বন করে টিকে আছেন। এটিকে কোনো দীর্ঘমেয়াদী সমাধান মনে করছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যাংকাররা। তারা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটিকে সামনের দিনগুলোতে ব্যবসায়িকভাবেই টিকে থাকার চেষ্টা করতে হবে। এর বিকল্প কোনো পথ নেই বলে জানিয়েছেন রুপালী, সোনালী, জনতা ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট পদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তা। তারা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়িক পথে যদি না হাঁটে ব্যাংকও লোন আদায়ের বিকল্প পথ বের করে নিতে বাধ্য হবে।
কয়েকজন ব্যাংকার জানান, প্রতিষ্ঠাটিকে অনেক ছাড় দিয়েও রেগুলার রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। থার্মেক্স সে সম্মান রক্ষা করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বিধি-বিধান লংঘন করে এ প্রতিষ্ঠানটিকে অতিমাত্রায় সুযোগ দেওয়ায় সরকারি ব্যাংকগুলো আরো বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এ কারণে ব্যাংক লোন আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ব্যাংকগুলোর দায়ীত্বশীল কর্তাব্যাক্তিরা এ দায় কোনোভাবে এড়িয়ে যেতে পারেন না।
এ ছাড়া, প্রতিষ্ঠানটির মালিক আব্দুল কাদির মোল্লার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর পর দুই গভর্নরের সুসম্পর্ক ছিল বলে জানা যায়। তিনি যেভাবে চাইতেন সেভাবেই গভর্নরদ্বয় তার লোন নিয়মিত রাখার পথ করে দিয়েছেন। ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের এই দুইজন গভর্নরের অযাচিত হস্তক্ষেপও লোন দানকারী ব্যাংক সমূহকে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে করেন অনেকে।
নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার পাঁচকান্দি গ্রামের আব্দুল মজিদ মোল্লা ও নূরজাহান বেগমের পুত্র আব্দুল কাদির মোল্লা। তিনি ১৯৬১ সালের ৮ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন । ১৯৭৪ সালে ৮ম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় তার বাবার মৃত্যু হলে সংকটাপন্ন পারিবারিক অবস্থার মধ্যেও এসএসসি পাশ করেন। এসএসসি পাশের পর রিক্তহস্তে ভাগ্যান্বেষণে বের হওয়া আব্দুল কাদির মোল্লা স্টাইফেন নিয়ে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি থেকে ডিপ্লোমা শেষ করেন। এরপর সিংগাপুরে পাচ বছর একটি শিপইয়ার্ডে চাকরি করে দেশে ফিরে আসেন। ১৯৮৫ সালে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডে ছোট একটি পদে চাকরি নেন। সেখানে ১২ বছর চাকরি শেষে ১৯৯৭ সালে স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি। তিতাস গ্যাসে চাকরিকালীন আব্দুল কাদির মোল্লা অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদ অর্জন করেন বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ। ইংরেজী দৈনিক ডেইলি স্টারসহ কয়েকটি পত্রিকায় ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিতাসের সাবেক এই চার হাজার টাকা বেতনের বিক্রয় সহকারী কাদের মোল্লাকে নিয়ে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, টাক্সফোর্স দুই হাজার ১০০ কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে আব্দুল কাদের মোল্লার। রহস্যজনক কারণে ওই তদন্ত বেশিদূর এগোয়নি। তখন বিষয়টি ছিল টক অব দ্য কান্ট্রি।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিচক্ষণ কাদির মোল্লা তিতাসে মাত্র ১২ বছরের চাকরি জীবনে বিপুল সম্পদ অর্জন, বিপদের কারণ হতে পারে আঁচ করতে পারেন। ১৯৯৭ সালে চাকরি ছেড়ে শিল্প উদ্যোক্তা হন। এরপর এক যুগের প্রচেষ্ঠায় আব্দুল কাদের মোল্লা থার্মেক্স গ্রুপ গড়েন। থার্মেক্স গ্রুপের অধীনে বর্তমানে ১৬টি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ব্যবসায়িক জীবনে তিনি হয়েছেন একটি বীমা কোম্পানির পরিচালক ও এসবিইসি ব্যাংকের পরিচালক ও চেয়ারম্যান। হয়েছেন কর বাহাদুর, পেয়েছেন মাদার তেরেসা পুরস্কারও। দেশব্যাপী জনকল্যাণ ও শিক্ষা বিস্তারে খ্যাতি রয়েছে তার। নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্খনে বহু স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। কয়েকশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার দেওয়া এফডিআর রয়েছে বলেও জানা যায়। এ ছাড়া দেশের উল্লেখযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাপক সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন তিনি। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণ করে দিয়েছেন হল বা মসজিদ, কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করে দিয়েছেন কনভেনশন সেন্টার; আবার কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে দিয়েছেন পরিবহন সুবিধা।
কাদির মোল্লা ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘পাঁচকান্দী ডিগ্রি কলেজ’। তিতাসের এক সময়ের চার হাজার টাকা বেতনের কর্মচারী একটি ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠিত করার মতো টাকা কোথায় পেলেন এ নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। এদিকে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তার দেওয়া দান-অনুদান গ্রহণ ও নামকরণ নিয়ে শিক্ষাবিদদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জনকল্যাণে, শিক্ষা বিস্তারে নিয়োজিত দেশের ব্যাংকিং খাতের শীর্ষ ঋণ খেলাপীদের একজন শিল্পপতি আব্দুল কাদের মোল্লা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে থার্মেক্স গ্রুপের বিনিয়োগ ট্রেন্ড শুরু হয় ২০১০ সালের পর। এই ব্যাংকগুলোরও কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে থার্মেক্সে। সরকারি ব্যাংকগুলোর গ্রুপটিতে থাকা বিনিয়োগের মান ও বাণিজ্যিক শিষ্টাচার, আমদানি-রপ্তানি সূচকের ভারসাম্যতা আরো কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া আবশ্যক ছিল বলে মনে করছেন ব্যাংক খাতের কয়েকজন বিশ্লেষক। তারা মনে করছেন, কোনোভাবে একটি ব্যাংক আটকে গেলে সবগুলো ব্যাংকেরই অবস্থা খারাপের দিকে যাবে। এ ধরনের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কতা থাকা আবশ্যক ছিলো বরং সতর্কতা অবলম্বন না করে পরপর দুজন গভর্নর ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার রহস্যজনকভাবে উদার হস্তে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, শুধু থার্মেক্স গ্রুপের অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ঋণের পরিমাণ বর্তমানে প্রায় আচ হাজার কোটি টাকা। এ ঋণের প্রায় চার হাজার কোটি টাকাই নিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক থেকে। এ ছাড়া আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়াসহ দেশি ও বিদেশি কয়েকটি ব্যাংক থেকেও প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে থার্মেক্স গ্রুপ। এর বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ রয়েছে বলেও জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইন (২০২৩) অনুযায়ী, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে গ্রাহক ঋণ পরিশোধ করবে না, তাদের ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে ঋণ গ্রহণ ও ব্যাংকের কাছে ঘোষিত উদ্দেশ্যে ঋণের টাকা ব্যয় না করলে ওইসব গ্রাহককে বিবেচনা করা হবে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হিসেবেও। ঠিক ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির এই কাজটিই করেছেন থার্মেক্সের মালিক আব্দুল কাদের মোল্লা। বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তিনি বলেছেন, তার উপার্জনের ২৫ পার্সেন্ট জনকল্যাণে ও শিক্ষা বিস্তারে ব্যয় করছেন। বছরে বিশাল অংকের টাকা তিনি ব্যয় করছেন সিএসআরের এই খাতে। সে হিসেবে তার ব্যবসায়িক স্ট্যাবিলিট যথেষ্ট মজবুত। অধিক ব্যবসা না করলে তিনি বিপুল পরিমাণের এ ব্যয় করছেন কীভাবে, এ প্রশ্ন আসে। এসব দিক বিবেচনা করে অনেকে তাকে একজন ইচ্ছাকৃত খেলাপী হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন।
এদিকে সোনালী ব্যাংকে থাকা প্রায় দেড় হাজার দায় পরিশোধ করছে না থার্মেক্স। উল্টো পুনঃতপশিলের নির্দিষ্ট ডাউন পেমেন্ট না করেই ঋণ নবায়নের সুবিধা চেয়েছে গ্রুপটি। তাদের দ্বিতীয় দফার আবেদন সোনালী ব্যাংক নাকচ করে দিলেও চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে থার্মেক্স গ্রুপ। অপরদিকে সোনালী ব্যাংক যাতে এ গ্রুপের সিআইবি আনক্লাসিফায়েড রাখে এ জন্য ব্যাংকটির বিরুদ্ধে রিটও দায়ের করে রেখেছে। আদালতের এ রিটের নির্দেশনার কারণে সোনালী ব্যাংক থার্মেক্স গ্রুপের ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ক্লাসিফায়েড দেখাতে পারেনি । জানা যায়, এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে অন্যান্য সরকারি ব্যাংকগুলো। এ অবস্থায় ব্যাংকগুলো না পারছে ক্লাসিফায়েড দেখাতে, না পারছে রেগুলার দেখাতে। তবে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী থার্মেক্স গ্রুপের সোনালী ব্যাংকে থাকা সব কয়টি প্রতিষ্ঠানই ক্লাসিফায়েড হয়েছে বলে জানা যায়।
ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোনো ঋণখেলাপির ব্যাংক পরিচালক হওয়ার সুযোগ নেই। অথচ বিভিন্ন ব্যাংকে থার্মেক্স গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো খেলাপি হয়ে পড়লেও উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের (এসবিএসি) পরিচালক ও চেয়ারম্যানও হয়েছেন থার্মেক্সের মালিক আবদুল কাদির মোল্লা।
থারমেক্স গ্রুপকে দেওয়া ঋণের বিভিন্ন ব্যাংকের তথ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধান ও পর্যবেক্ষণ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শুরুর প্রথম দশকে স্বাভাবিক গতিতেই অগ্রসর হয়েছে থার্মেক্স গ্রুপ। এ সময়ে গ্রুপটির ব্যাংক ঋণ ও ব্যবসায়িক টার্নওভার ছিল সমান্তরালভাবে। বেশ সুনামের সঙ্গেই ব্যবসা পরিচালনা করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। তার এই সুনামের ফলে সর্বোচ্চ সুবিধাও দিয়েছিল ব্যাংকগুলো।
২০১০ সালের পর থেকে থার্মেক্সের ব্যাবসায়িক গতিবিধির পরিবর্তন শুরু হতে থাকে। রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকসহ অন্য আরো কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা ঋণ নিতে থাকেন আবদুল কাদির মোল্লা। বাড়াতে থাকেন থার্মেক্স গ্রুপের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও। তৈরি পোশাক রপ্তানির পাশাপাশি টেক্সটাইল, সুতা, ডেনিম, ওভেনসহ বিভিন্ন খাতে সম্প্রসারিত হয় তার ব্যবসা। এক প্রতিষ্ঠানের চলতি মূলধন হিসেবে নেওয়া ঋণের অর্থ বিনিয়োগ করেন অন্য প্রতিষ্ঠানে। এভাবেই গড়ে তোলেন প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যবসার আকারের তুলনায় ব্যাংক ঋণের পরিমাণ এতই বেড়েছে যে এখন ঋণের বোঝায় লেজেগোবরে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে ধীরে ধীরে খাদের কিনারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
এক পরিসংখ্যান দেখা যায়, ২০১৫ সাল পর্যন্ত থার্মেক্সের ব্যাংকঋণের পরিমাণ ছিল তিন হাজার কোটি টাকার কম। ওই সময়ে শিল্প গ্রুপটির টার্নওভার ছিল প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। এর পরের পাঁচ বছরে থার্মেক্সের ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণ হলেও আনুপাতিক হারে ব্যবসার টার্ন ওভার বাড়েনি। বিপরীতে বস্ত্র ও সুতায় শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে আরো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বলে জানা যায়। গত কয়েক বছর থার্মেক্স গ্রুপের ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধে হয়ে পড়ে অনিয়মিত। প্রায় সব ঋণই ছিল খেলাপি হওয়ার পথে। ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংকের সমুদয় ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ঋণ প্রদানকারী ব্যাংকগুলোর উদারতায় আবদুল কাদির মোল্লা বারবার পুনঃতফসিল সুবিধা পেয়েছেন।
এদিকে, ২০১৯ সালে বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য দুর্যোগ বয়ে আনলেও থার্মেক্সের জন্য তা ছিল আশীর্বাদস্বরূপ। করোনার কারণে বছরব্যাপী ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধের বাধ্যবাধকতা শিথিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতি ছাড়ের এ সুযোগ পুরোদমে কাজে লাগিয়েছেন আবদুল কাদির মোল্লা। উপরি পাওনা হিসেবে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক থেকে পেয়েছেন স্বল্প সুদের আরো ২০০ কোটি টাকার প্রণোদনা।
থার্মেক্স গ্রুপকে ঋণ দেওয়া ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীসহ নীতিনির্ধারণী ভূমিকায় থাকা কয়েকজন ব্যাংকার বলছেন, বাছবিচার না করে থার্মেক্স গ্রুপকে ঋণ দিয়ে চোরাবালিতে আটকা পড়েছেন তারা। অনেক চেষ্টা করেও এখন গ্রুপটির কাছ থেকে টাকা আদায় সম্ভব হচ্ছে না । উল্টো অনাদায়ী সুদযুক্ত হয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে থার্মেক্স গ্রুপের ঋণের পরিমাণ । চাপে পড়তে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে।
থারমেক্স গ্রুপ মূলত রপ্তানিমুখী শিল্প হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত। এ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগই পোশাক খাতের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ রপ্তানিমুখী বস্ত্র শিল্পের। গ্রুপটির প্রচ্ছন্ন রপ্তানি টার্নওভারের পাওয়া একটি ওই পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিন বছরের মধ্যে কোনো বছরেই থার্মেক্স গ্রুপের সুতা ও কাপড় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর রপ্তানি টার্নওভার ১৩ কোটি ডলার বা এক হাজার ১০০ কোটি টাকার বেশি ছিল না ।
রপ্তানি নীতি ২০১৮-২১ অনুযায়ী, রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ রপ্তানিমু করতে হবে । অবশিষ্ট ২০ শতাংশ পণ্যের শুল্ক ও কর পরিশোধ সাপেক্ষে স্থানীয় বাজারে বাজারজাতের সুযোগ রয়েছে । সে হিসাবে এক হাজার ১০০ কোটি টাকার রপ্তানির বিপরীতে ২৭৩ কোটি টাকার বেশি পণ্য স্থানীয় বাজারে বিক্রির সুযোগ নেই থার্মেক্সের।
থার্মেক্স গ্রুপের পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে দুই বছর ধরে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৮ সালে থার্মেক্স গ্রুপের সুতা উৎপাদন ও ডায়িংয়ের পাঁচটি কারখানা ইউনিট থেকে সুতার প্রচ্ছন্ন রপ্তানি হয় প্রায় পাঁচ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের। এর পরের বছর ২০১৯ সালে ওই পাঁচটি ইউনিটে উৎপাদিত সুতা রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। রপ্তানির নেতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে বিগত চার বছরও।
আবদুল কাদির মোল্লার প্রতিষ্ঠানগুলোর বিপুল অংকের এ ঋণ নিয়ে বিপদে আছে সোনালী ব্যাংক। ব্যাংকটির ২০২৪ সালের অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী ছয়টি প্রতিষ্ঠান থেকে পাওনা প্রায় দেশ হাজার কোটি টাকা। এসব ঋণের বড় অংশই তৈরি হয়েছে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির দায় সমন্বয় না হওয়ার কারণে। এরই মধ্যে কয়েক দফায় এসব ঋণ পুনঃতফসিলও করা হয়েছে। গ্রুপটিকে ঋণ দেওয়া ও দফায় দফায় পুনঃতফসিলে উপেক্ষিত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের রীতিনীতিও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক পরিদর্শনেও অনিয়মের বিষয়গুলো উঠে এসেছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে থার্মেক্স গ্রুপের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, থার্মেক্স গ্রুপকে দেওয়া ঋণের বড় অংশই ঝুঁকিপূর্ণ। সর্বশেষ অনিয়মের মাধ্যমে গ্রুপটির ঋণ পুনঃতফসিলের বিষয়টিও শনাক্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ‘ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-২’ থেকে এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, বিআরপিডি ও অফ-সাইট সুপারভিশনের অনাপত্তি পত্রের শর্ত পরিপালন না করে থার্মেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে। এ পুনঃতফসিল প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ব্যাংকের বোর্ড ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। এসকল অনিয়মের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর ও রউফ তালুকদারের সরাসরি তদারকী ছিল বলে জানা যায়। যদিও রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকেই সরকার ঘোষিত প্রণোদনার ৮৪ কোটি টাকা পেয়েছে থার্মেক্স গ্রুপ।
সোনালী ব্যাংকের শির্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেন, এরই মধ্যে থার্মেক্সের ঋণের লাগাম টেনে ধরা হয়েছে। মূলত ঋণপত্রের দায় সমন্বয় না হওয়ার কারণে ফোর্সড লোন সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা গ্রুপটির ঋণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।
থারমেক্স গ্রুপের কাছে প্রায় এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে আরেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক জনতার। এ ঋণ আদায় নিয়েও বিপদে আছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি। যদিও প্রণোদনা হিসেবে গ্রুপটিকে আরো ৪৭ কোটি টাকা দিতে হয়েছে ব্যাংকটিকে।
আবদুল কাদির মোল্লার প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ঋণ আছে ৭০০ কোটি এবং রূপালী ব্যাংকের ৩৫০ কোটি টাকার মতো। ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায় প্রতিনিয়ত এ ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। আবার প্রণোদনা হিসেবে থার্মেক্সকে ৫৭ কোটি টাকা দিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। রূপালী ব্যাংক থেকেও পেয়েছে ৫২ কোটি টাকা।
থার্মেক্স গ্রুপের ঋণের লাগাম টেনে ধরছেন বলে জানিয়েছেন অগ্রণী ব্যাংকের শীর্ষ একে কর্মকর্তা। তিনি বলেন, গ্রুপটির ব্যবসা এতদিন সম্প্রসারিত হয়েছে। এখন সময় এসেছে সবকিছু গুছিয়ে নেওয়ার। থার্মেক্সকে এখন রপ্তানির মাধ্যমে দায় সমন্বয় করতে হবে। আমরা নতুন আর কোনো ঋণ দিচ্ছি না। আশা করছি, গ্রুপটি ব্যবসায়িকভাবে ঘুরে দাঁড়াবে।
অগ্রণী, জনতা, রূপালী ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা একইভাবে বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার সংস্কৃতির শিকড় অনেক গভীরে চলে গেছে। এখন ভালো গ্রাহকরাও ব্যাংকের টাকা ফেরত দিতে চাইছেন না। সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করা উদ্যোক্তারাও ইচ্ছেকৃত খেলাপির তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মতোই আবদুল কাদির মোল্লার প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণ দুর্দশাগ্রস্তের তালিকায় উঠে আসতে শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক চাপের কারণে বারবার পুনঃতফসিল করতে হয়েছে এ ব্যাংকগুলোর ঋণও। ঋণগুলো অনাদায়ী সুদ যুক্ত হওয়ায় প্রতিনিয়ত গ্রুপটির কাছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। গ্রুপটিকে নিয়ে নিজেদের দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের কথা জানালেও এ ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীরা নিজেদের নাম উদ্ধৃত করে বক্তব্য দিতে চাননি।
বড় একটি বেসরকারি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী বলেন, পাঁচ বছর ধরেই থার্মেক্সের ঋণ নিয়ে বিপদে আছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকলে তথা মন্দ মানের খেলাপি হওয়ার দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা আবদুল কাদির মোল্লার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে তিনি সুযোগের শতভাগ সদ্ব্যবহার করছেন।
অন্য একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, পাঁচটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে কোনো ঋণ নেননি বলে আবদুল কাদির মোল্লা প্রায়ই গর্ব করেন। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান করার অর্থ তিনি কোথায় পেলেন, তার জবাব নেই । মূলত এক প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া চলতি মূলধনের অর্থ ডাইভার্ট করে অন্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন । এ কারণেই গ্রুপটির বিপর্যয় বেড়েছে।
থার্মেক্স গ্রুপকে নতুন করে ঋণ না দেওয়ার নীতি নিয়েছে এর আগে ঋণ দেওয়া সরকারি ব্যাংকগুলো। পাশাপাশি গ্রুপটির সঙ্গে ব্যবসা গুটানোর চেষ্টা করছেন বলেও জানিয়েছেন ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের কেউ কেউ। জানা যায়, ব্যবসায় কোনো ক্ষতি বা রপ্তানি কখনোই বন্ধ ছিল না। তথাপিও মালিক ঋণ পরিশোধ করছেন না। তাই বুঝা যায় মোল্লা একজন ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি। তার বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেওয়ার উপযুক্ত সময়।
তার সিএসআরের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যাংকার বলেন, ব্যাংককে ঝুঁকিতে রেখে এ ধরনের কাজ ‘রাতে ডাকাতী আর দিনে উদার হস্তে দান করার সামিল। এর বেশী কিছু নয়’।
সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আফজাল করিম গত বছর বলেন, খেলাপি হওয়ায় আমরা গ্রুপটিকে নোটিশ দিয়েছিলাম। খেলাপি আদায়ের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। খেলাপি অর্থ আদায়ে কাজ করছি বলেই আমাদের ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার কমে আসছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, কোনো ব্যক্তি খেলাপি হয়ে পড়লে তিনি ব্যাংকের পরিচালক পদে থাকতে পারবেন না। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় স্পষ্ট বর্ণনা করা আছে। যদি আইন অমান্য করে কোনো খেলাপিকে পরিচালক পদে রাখা হয়, তাহলে বোর্ডের কোনো সিদ্ধান্তই গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই কোনো খেলাপিকে বোর্ডের পরিচালক হিসেবে রাখার কথা নয়। যদিও থেকে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে অবশ্যই সেখানে আদালতের কোনো স্থগিতাদেশ দেওয়া আছে। এ ছাড়া কোনো ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান যদি ঋণ গ্রহণ বা বিতরণে অনিয়ম করে, তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়। আবার কেউ যদি ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে আব্দুল কাদির মোল্লাকে তার অফিসিয়াল মোবাইল নম্বরে কল করা হলে, তা বন্ধ পাওয়া যায়। বার বার কল করেও তার মোবাইল নম্বর খোলা পাওয়া যায়নি।
আমারবাঙলা/এমআরইউ