বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫
ফাইল ছবি
বাণিজ্য প্রকাশিত ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৩:৩৯
সর্বশেষ আপডেট ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৩:৩৯

ব্যাংকে কমছে কোটিপতি গ্রাহক

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের পালাবদলের পর ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকা রয়েছে, এমন অ্যাকাউন্টের (হিসাব) সংখ্যা কমেছে। একইসঙ্গে গ্রাম ও শহরে আমানত প্রবাহ কমেছে। ঋণ প্রবাহও প্রত্যাশিত হারে বাড়েনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর সার্বিক কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকে কোটি টাকার বেশি রয়েছে— এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হিসাবের সংখ্যা তিন মাসে এক হাজার ৬৫৭টি কমেছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা পিষ্ট। সাধারণ মানুষ এখন সংসারের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে ব্যাংকে টাকা জমানোর চেয়ে অনেকে আগের জমানো অর্থ ভেঙে খাচ্ছেন। অন্যদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর সাবেক এমপি মন্ত্রী ও নেতাসহ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের হিসাব নেওয়া শুরু হয়েছে। অনেকের ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ করা হয়েছে। ফলে বড় অঙ্কের আমানতকারীরা ভয়ে টাকা সরিয়ে ফেলছেন। এসব কারণে বিত্তশালী ও বড় প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট অ্যাকাউন্টের (হিসাব) সংখ্যা ১৬ কোটি ২০ লাখ ২৮ হাজার ২৫৫টি। এসব হিসাবে জমা আছে ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। জুন প্রান্তিকে ব্যাংক খাতে মোট হিসাবের সংখ্যা ছিল ১৫ কোটি ৮৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫২৩টি এবং এসব হিসাবে জমা ছিল ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে হিসাবের সংখ্যা বাড়লেও টাকার অংকে আমানতের পরিমাণ কমেছে।

একই সঙ্গে আলোচিত সময়ে (সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে) এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে— এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৭ হাজার ১২৭টি। এসব হিসাবে জমা আছে সাত লাখ ৪৬ হাজার ৮৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ৪১ শতাংশই জমা রয়েছে এই এক লাখ ১৭ হাজার অ্যাকাউন্টে।

এর আগে গত জুন প্রান্তিকে কোটি টাকার বেশি আমানত ছিল এক লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টি অ্যাকাউন্টে। ওইসব হিসাবে জমা ছিল ৭সাতলাখ ৭৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে কোটি টাকার উপরে থাকা অ্যাকাউন্ট ও তাদের জমানো টাকা দুটোই কমেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক অ্যাকাউন্টও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটি টাকার আমানতকারী ছিল পাঁচ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটি টাকার হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে দুই হাজার ৫৯৪টি, ২০০১ সালে পাঁচ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে আট হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি।

এদিকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টি। ২০২১ সালের ডিসেম্বর বেড়ে তা দাঁড়ায় এক লাখ এক হাজার ৯৭৬টিতে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কোটি টাকা বা তার বেশি রয়েছে এমন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল এক লাখ নয় হাজার ৯৪৬টি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তা দাঁড়ায় এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টিতে এবং গত জুনে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টিতে। সবশেষ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সেই হিসাবের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৭ হাজার ১২৭টিতে।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

পশ্চিমবঙ্গে আতশবাজির কারখানায় বিস্ফোরণ, শিশুসহ নিহত ৭

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আতশবাজির কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে এখন পর্যন্ত...

সন্ধ্যার মধ্যে যেসব অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

দেশের দুই অঞ্চলের উপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে...

মুক্তির দ্বিতীয় দিনে সুখবর এলো নিশোর সিনেমার

ঈদে মুক্তি পাওয়া ছয় সিনেমার একটি হচ্ছে ‘দাগি’। সিনেমাটির মাধ্যমে...

কোপা দেল রে’র ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ

কোপা দেল রে’র সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগের আসর বসেছিল রিয়াল মাদ্রিদের হোম...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা