বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে হাতেগোনা দু-তিনটি কোম্পানি ছাড়া অন্য কোনো ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল মিলছে না। কয়েকটি ব্র্যান্ডের তেল মিললেও চাহিদার তুলনায় তা অপর্যাপ্ত। ক্রেতারা বলছেন, এক ও দুই লিটারের বোতল বাজারে সরবরাহ খুবই কম। অবশ্য বাজারে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক আছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাজারে প্রায় এক মাস ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহে সংকট চলছে। সরকার ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট কমালে সরবরাহ কিছুটা বাড়ে। তবে এক সপ্তাহ ধরে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ আবার কমিয়ে দিয়েছে কোম্পানিগুলো।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে, ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
মগবাজারের মুদি দোকানি ইমাম হোসেন বলেন, আগে নিয়মিত পাঁচ থেকে ছয়টি কোম্পানি তেল দিত। দুই থেকে তিন সপ্তাহ ধরে মাত্র দুটি কোম্পানি দিচ্ছে। ফলে চাহিদার ১০ শতাংশও পূরণ হচ্ছে না।
তিনি বলেন, এখন ক্রেতারা দোকানে এসেই আগে তেল খুঁজেন। যদি তেল দিতে না পারি, পণ্য কিনতে চান না তারা। বাজারে নতুন করে তেলের দাম বাড়াতেই কোম্পানিগুলো এমন তালবাহানা করছেন বলেও এই বিক্রেতা জানান।
কারওয়ান বাজারের মুদি দোকানের বিক্রয় সহকারী বেলাল উদ্দিন বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে চাহিদার অর্ধেকও বোতলজাত সয়াবিন তেল পাচ্ছি না। কোম্পানিগুলো ডিলারদের ঠিকমতো তেল না দেওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দাম বাড়াতেই এমন কারসাজি হচ্ছে।
মগবাজারের বাসিন্দা তাহমিনা সালমা বলেন, ‘বাজারের বেশ কয়েকটি মুদি দোকান ঘুরেও এক লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল পাইনি। দু’একটি দোকানে পাঁচ লিটারের বোতল মিলছে। তাই রবিবার বাধ্য হয়ে খোলা সয়াবিন তেল কিনলাম।’
এদিকে সরকার ভোজ্য তেলের ওপর বর্তমানে প্রযোজ্য আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করেছে। ১৬ অক্টোবর পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে আরোপনীয় পাঁচ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়। ফলে বর্তমানে কেবল আমদানি পর্যায়ে পাঁচ শতাংশ ভ্যাট চালু রয়েছে।
ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক খলিলুর রহমান সজল বলেন, ‘ভ্যাট কমানোসহ নানা সুবিধা দেওয়ার পরও ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো তেলের দাম না কমিয়ে উল্টো সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। রমজান মাস আসছে। এখনি যদি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয় তাহলে এবারের রমজান অস্বস্তিকর হতে পারে। আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে এখন থেকেই ব্যবস্থা নিবে। রমজানের এক মাস বা ১৫ দিন আগে ব্যবস্থা নিলে এর সুফল ভোক্তারা পাবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাজারে খোলা তেল পাওয়া গেলেও ভেজালের ভয়ে অনেক ভোক্তা খেতে চায় না। আবার অনেকে এটি খেতে অভ্যস্ত না হওয়ায় খোলা তেল কিনতে আগ্রহী না।’
আমারবাঙলা/এমআরইউ