নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে বোতলজাত পানির দাম গত ১ বছরে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অযৌক্তিক ও অন্যায্য বলে উল্লেখ করেছেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। অবিলম্বে সব ধরনের বোতলজাত পানির অযৌক্তিক, অন্যায় ও অন্যায্য মূল্যবৃদ্ধি বাতিলের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বোতলজাত পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে মানুষ নানাভাবে বিপদগ্রস্ত। গত বছর হঠাৎ করে বোতলজাত পানির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। সেসময় বেশ কয়েকটি কোম্পানি প্রতি বোতল পানির দাম বৃদ্ধি করে। ১৫ টাকার আধা লিটার পানির বোতলের দাম ২০ টাকা করা হয়। বাজারে যেসব বোতলজাত পানি বিক্রি হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে পরিচিত ব্র্যান্ডের ৫০০ মি.লি. পানির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য এখন ২০ টাকা।
কয়েকদিন আগে এসব ব্র্যান্ডের ৫০০ মি. লি. পানির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ছিল ১৫ টাকা। এ ছাড়া প্রতি ৫০০ মি. লি. বোতলজাত খাবার পানির পাইকারি মূল্য ১১ থেকে ১২ টাকা। অর্থাৎ ৫০০ মি. লি. পরিমাণের প্রতি বোতল পানি খুচরা পর্যায়ে ৮ থেকে ৯ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি।
মানববন্ধনে বোতল সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে জানিয়ে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ওয়াসা হুমকি দিয়ে পানির দাম বাড়াচ্ছে। তারা হুমকি দেয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থে। আর প্রতিযোগিতা কমিশন জনগণের স্বার্থ রক্ষা করে না, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করে। কম পয়সায় মানুষের পানি খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। আমরা ঢাকাসহ সারা দেশে মোড়ে মোড়ে মিঠা পানি দেওয়ার ব্যবস্থার আহ্বান জানাই। এভাবেই আমাদের বোতল সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশন সময়ক্ষেপণ করে কিছু কোম্পানিকে বাড়তি মুনাফার সুযোগ করে দিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে, সেখানে বোতলজাত পানির দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। আমরা এই অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
ক্যাবের পক্ষ থেকে পাঁচটি দাবিও তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো:
১) অবিলম্বে সব ধরনের বোতলজাত পানির অযৌক্তিক, অন্যায় ও অন্যায্য মূল্যবৃদ্ধি বাতিল করতে হবে।
২) ভোক্তাদের ন্যায্যমূল্যে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
৩) বোতলজাত পানির মূল্য স্বাভাবিক করতে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়ের সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
৪) যেসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যুথবদ্ধভাবে হঠাৎ করে বোতলজাত পানির দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে ভোক্তাসাধারণকে কষ্টে ফেলেছে, তাদের আইনানুগ বিচার ও শাস্তির পদক্ষেপ নিতে হবে।
৫) সময়ক্ষেপণ করে সংশ্লিষ্ট বোতলজাত পানি প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোকে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মুনাফা লাভের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যানকে তার পদ থেকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে।
ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদসহ ক্যাবের অন্যান্য সদস্যরা।
এবি/এইচএন