বাণিজ্য ডেস্ক: আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং পহেলা বৈশাখকে ঘিরে ৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রির আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। রাজনৈতিক পরিবেশ ভালো থাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা শাড়ি কিনতে আসছেন। এবার হাফ সিল্ক, মিক্স কটন, পিওর সিল্ক ও সুতি শাড়ি বেশি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, জেলার বাজিতপুর, কৃষ্ণপুর, বেলতা, পুটিয়াজানি, কালিহাতীর বল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় শাড়ি উৎপাদন হলেও দেলদুয়ারের পাথরাইল টাঙ্গাইল শাড়ির রাজধানী হিসেবে খ্যাত। এবার প্রায় ৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রি হবে।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় গত কয়েক বছরের তুলনায় টাঙ্গাইল শাড়ির বাণিজ্য ভালো হবে। ঈদ গরমের মধ্যে হওয়ায় গরম সহনশীল এমন শাড়ি বেশি বিক্রি হচ্ছে। পাইকার ও ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে শাড়ি বুননের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা।
টাঙ্গাইল শাড়ির ব্যবসায়ী মিনহাজ মিয়া জানান, রোজা শুরু হওয়ার আগে থেকেই তারা নতুন শাড়ি তৈরি করে মজুত করেছেন। এবার হাফ সিল্ক, মিক্স কটন, পিওর সিল্ক ও সুতি শাড়ি বেশি তৈরি হয়েছে। রোজা শুরু হওয়ার সপ্তাহখানেক আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন পাইকারি দামে শাড়ি কিনতে।
সাভার থেকে আসা ফাতেমা তাবাসুম নামের এক ক্রেতা বলেন, পিওর টাঙ্গাইল শাড়ি কেনার জন্য কষ্ট করে আসা। নিজ ও পরিবারের সদস্যদের জন্য সাতটি শাড়ি কিনেছি। মানে ভালো ও দামও সাধ্যের মধ্যে। তাই কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলে শাড়ি কিনতে আসি।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা হুমায়ন সিকদার বলেন, বাহারি ডিজাইন এবং দাম নাগালের মধ্যে থাকায় ঈদসহ যে কোনো উৎসবে গ্রাহকদের কাছে বিভিন্ন মানের টাঙ্গাইল শাড়ির কদর রয়েছে। তুলনামূলকভাবে দামে কম হওয়ায় যেকোনো উৎসবের আগে আমি এখান থেকে শাড়ি কিনে নিজ এলাকায় বিক্রি করে থাকি।
জেলা শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক বলেন, করোনার পর এবার টাঙ্গাইল শাড়ির ব্যবসা একটু ভালো হবে। টাঙ্গাইল শাড়ির চাহিদা সব সময় থাকে। তবে, ঈদকে কেন্দ্র করে তা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তাই উৎপাদন কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বছর ৭৪ লাখ পিস টাঙ্গাইল শাড়ি প্রতিবেশী দেশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। সেখান থেকে প্রায় ২৬ লাখ ডলার বৈদাশিক মুদ্রা আয় হয়েছে।
টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক পলাশ চন্দ্র বসাক বলেন, এ বছর রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল হওয়ায় গত কয়েক বছরের তুলনায় ব্যবসায়ীদের শাড়ি বিক্রি অনেক ভালো হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় টাঙ্গাইল শাড়ির কদর রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রি হবে। এতে ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, রোজার প্রথম সপ্তাহেই পাইকারি বেশির ভাগ শাড়ি বিক্রি হয়েছে। এখন খুচরা শাড়ি কিনতেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতারা ভিড় করছেন।
এবি/এইচএন