ভিয়েতনামের বাক জিয়াং প্রদেশের বাসিন্দা মেকানিক গুয়েন ভ্যান লুয়ং। তিনি এক প্রকার ম্যাজিকই দেখালেন। ৫৭ বছর বয়সী মানুষটি শুধুমাত্র একটি ঘর নয়, বরং তার জীবনের একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেছেন। তার ঘরটি সারাক্ষণ ঘোরে তাও আবার ৩৬০ ডিগ্রি। জলাধারের উপর স্থাপিত এই বিশেষ বাড়ি এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
একটু ভাবুন, মেকানিকের ঘরে জানালার পাশে বসে আছেন। মৃদু বাতাসে উড়ছে আপনার চুল, মনের আনন্দে কফির কাপে দিচ্ছেন চুমুক। আর পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছেন, কিন্তু আবার ফিরে তাকাতেই দেখলেন সমুদ্র। বিভ্রান্তি আসবে আপনার মধ্যে।
অদ্ভুত এবং অভিনব এই ঘরের পেছনের গল্প চমকপ্রদ। প্রায় চার বছর ধরে নিখুঁত পরিকল্পনা আর কঠোর পরিশ্রমের পর, ২০১৬ সালে তিনি এই বাড়ির কাজ শেষ করেন। ১০০ বর্গমিটারের এই বাড়িটি ১৪ মিটার ব্যাসের জলাধারের উপর তৈরি একটি বিশেষ কংক্রিটের ভিত্তির উপরে ভাসে। বাড়িটি মাত্র ১০ মিনিটে পুরোপুরি একবার ঘুরে যেতে সক্ষম এবং এটি চালাতে খরচ হয় মাত্র শূন্য দশমিক সাত অ্যাম্পায়ার বিদ্যুৎ।
মেকানিক বলেন , আমি এখন ৬০-এ পা দিচ্ছি, আর চাইছি এমন কিছু রেখে যেতে, যা আমাকে মনে করিয়ে দেবে, আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে। এই ঘরটি আমার জীবনের সেই বড় স্বপ্ন, যা শুধু ঘোরে না, জলাধারের উপরে ভাসতে থাকে, একদম একটি নৌকার মতো।
তবে বাড়িটি তৈরি সহজ ছিল না। মেকানিক নিজে বলেছিলেন, ঘরটি তৈরির সময় তাকে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়েছিল। হালকা হলেও শক্তিশালী কাঠামো তৈরি করার জন্য তিনি বিশেষ কংক্রিট ব্যবহার করেছিলেন। তার এই উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার জন্য ২০২২ সালে ভিয়েতনাম ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অফিস তাকে পেটেন্ট করে।
লুয়ং-এর এই ঘর শুধু প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা নয় শুধু, এটি বুঝায় অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকলে সব সম্ভব। আর মানুষ তার স্বপ্নের সমান নয়, স্বপ্নের চেয়েও বড়।
আমারবাঙলা/এমআরইউ