তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক : বর্তমানে তথ্য আদান-প্রদানে আমাদের প্রধান ভরসা ইন্টারনেট। আর স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের সময় আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যক্তিগত অনেক তথ্য উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
ইন্টারনেট আমাদের জীবনকে সহজ করলেও ইন্টারনেটের অসাবধান ব্যবহারে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও ফাঁসের ঝুঁকি থেকে যায়।
২০২১ সালে পরিচালিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৪১ শতাংশ তথ্য ফাঁস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই হয় – যা বেশ আশঙ্কাজনক। এটাও দেখা গেছে যে নিরাপদ অনলাইন স্পেসের অভাবে দেশের প্রায় ৬৪ শতাংশ নারী অনলাইনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এর ওপর তথ্য ফাঁসের নিত্য-নতুন খবর তো আছেই। প্রিয়জনদের সঙ্গে দৈনন্দিন খুঁটিনাটির পাশাপাশি ইন্টারনেটে রয়ে যায় প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যা ফাঁসের ফল হতে পারে শোচনীয়। তাই, অনলাইন নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন হওয়া এখন অপরিহার্য।
আর এ বিষয়টিকে সামনে রেখে নানা উদ্ভাবন নিয়ে আসতে কাজ করছে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মগুলো; যার শীর্ষে রয়েছে বিশ্বের জনপ্রিয় ইনস্ট্যান্ট অডিও-ভিডিও কল ও মেসেজিং অ্যাপ ইমো।
ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা রক্ষার লক্ষ্যে এ বছর ইমো নিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি উদ্ভাবনী সিকিউরিটি ফিচার। বার্তা আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের নিশ্চিন্ত রাখতেই ইমোর এই প্রচেষ্টা।
এবার ফিচারগুলো নিয়ে আরও বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক-
১) ডিসঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ:
একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর ব্যক্তিগত মেসেজগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে ফেলে ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষা করে এ ফিচারটি। ডিসঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ ফিচারটি চালু থাকলে মেসেজ আদান-প্রদানের পর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্তই মেসেজগুলো দেখা যায়, যা ব্যবহারকারীরা নিজেদের সুবিধামতো নির্ধারণ করতে পারবেন। এতে তথ্য ফাঁস হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসে।
২) সিক্রেট চ্যাট:
সিক্রেট চ্যাট চালু থাকলে চ্যাট উইন্ডো থেকে বের হয়ে যাওয়া মাত্রই সম্পূর্ণ উইন্ডো মুছে যায়। প্রাতিষ্ঠানিক ও আর্থিক তথ্যের সুরক্ষার ক্ষেত্রে এ ফিচার হতে পারে অত্যন্ত কার্যকর।
৩) টাইম মেশিন:
নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে এ ফিচার, যার মাধ্যমে সময় নির্বিশেষে যেকোন কথোপকথন চ্যাট হিস্ট্রি থেকে ডিলিট করা যায়। ফলে, নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্য থাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে।
৪) ব্লক স্ক্রিনশট ফর কলস:
ইদানীং তথ্য ফাঁসের পিছে একটি মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অযাচিত স্ক্রিনশট। তাই, ইমো চালু করেছে ব্লক স্ক্রিনশট ফর কল, যার মাধ্যমে আপনি যে কাউকে ভিডিও কল চলাকালীন স্ক্রিনশট নেওয়া থেকে বিরত রাখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে, এ ফিচারের মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত তথ্যগুলো সুরক্ষিত করা যায় খুব সহজেই।
৫) ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট:
অপরিচিত ব্যবহারকারীদের থেকে অযাচিত মেসেজগুলোর ক্ষেত্রে সুরক্ষা দেয় ফিচার। ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ ব্যবহার করে আপনি যোগাযোগ স্থাপন না হওয়া পর্যন্ত অপরিচিত বা অনাকাঙ্ক্ষিত মানুষদের দূরে রেখে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন এবং কার সঙ্গে রাখবেন না, সেই সিদ্ধান্ত থাকবে আপনার হাতে।
৬) সিম কার্ড বাইন্ডিং:
সিম কার্ড বাইন্ডিং ফিচারটির মাধ্যমে ইমো ব্যবহারকারীদের নিজস্ব ফোনের সিম কার্ডের সঙ্গে ইমো অ্যাকাউন্টটি আবদ্ধ থাকে। এতে করে শুধুমাত্র সিম কার্ড সংলগ্ন ডিভাইসটিতেই অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করা যায়। যেহেতু অন্যান্য ডিভাইসে অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করা যায় না, সেহেতু হ্যাকিংয়ের সুযোগও কমে আসে। এমন একটি ফিচার বিশ্বে প্রথমবারের মতো চালু করেছে ইমো।
নিজেদের বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিগত ও স্পর্শকাতর তথ্যের সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে ইমো নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে হ্যাকিং, ব্ল্যাকমেইলিং ও সাইবার বুলিংয়ের মতো অপরাধগুলো ঠেকাতে নিত্য-নতুন উদ্ভাবনী ফিচার নিয়ে আসছে এ জনপ্রিয় ইনস্ট্যান্ট অডিও-ভিডিও কল ও মেসেজিং অ্যাপ। এসব ফিচারের মাধ্যমে সাইবারস্পেসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অনলাইন অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ করছে ইমো।
এবি/এইচএন