চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং নিয়ে ওপেনিংয়ে দারুণ শুরু করে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু ১০৮ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল তারা। সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নেন গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারিল মিচেল। দুজনের পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় কিউইরা। মিচেলের সাবধানী হাফ সেঞ্চুরির পর শেষ দিকে মাইকেল ব্রেসওয়েলের আক্রমণাত্মক ফিফটিতে আড়াইশ ছাড়ায় স্কোর। ৭ উইকেটে তারা করে ২৫১ রান।
অবশ্য দুবাইয়ে শুরুটা খারাপ ছিল না কিউইদের। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে অষ্টম ওভারেই ওপেনিং জুটিতে যোগ হয় ৫৭ রান। ওপেনার উইল ইয়াংকে (১৫) ফেরান বরুণ চক্রবর্তী। অপরপ্রান্তে অবশ্য মেরে খেলছিলেন রাচিন রবীন্দ্র। যদিও বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। পাওয়ার প্লের পরের ওভারেই তাকে বোল্ড করেছেন আরেক স্পিনার কুলদীপ যাদব। মূলত ভারতের স্পিনই ভোগাচ্ছিল তাদের। পরের ১০ ওভারে কেবল ৩২ রান তুলতে পেরেছে নিউজিল্যান্ড। পাওয়ার প্লের পর ১৩.২ ওভারে ৩৯ রান তুলতেই দলটি হারায় ৩ উইকেট।
দলের ৭৫ রানের সময় কুলদীপকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন অভিজ্ঞ কেন উইলিয়ামসন (১১)। দলীয় শতরান পার হওয়ার পর টম ল্যাথামও টিকতে পারেননি। ১৪ রানে তাকে বিদায় দেন রবীন্দ্র জাদেজা।
দলকে উদ্ধার করেন মিচেল ও ফিলিপস। সাত বলের মধ্যে দুজনে রোহিত শর্মা ও শুবমান গিলের হাত ফসকে জীবন পেলেও ৫৭ রানের জুটি গড়ে থামতে হয়। দলীয় ১৬৫ রানে ফিলিপস (৩৪) বিদায় নেন। ৩৭.৫ ওভারে পাঁচ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। এরপর মিচেল পেয়ে যান হাফ সেঞ্চুরি।
৩৫তম ওভারে মিড উইকেটে রোহিত ৪০ রানে মিচেলের ক্যাচ ফেলেন। পরের ওভারের শেষ বলে ২৭ রানে ফিলিপস ডিপ মিড উইকেটে গিলের হাত গলে বেঁচে যান। তবে সুযোগ পাওয়া ইনিংসকে বেশি টানতে পারেননি তিনি।
৪২তম ওভারে মিচেল ৯১ বলে ফিফটির দেখা পান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এটাই নিউজিল্যান্ডের কোনও ব্যাটারের মন্থর ফিফটি। ২০১১ সালের পর এত ধীরে কোনও নিউজিল্যান্ডার পঞ্চাশ করেননি।
শেষ দিকে মাইকেল ব্রেসওয়েলের ক্যামিও ইনিংসে নিউজিল্যান্ড আড়াইশ করে। ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে ৩৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন এই ব্যাটার। ৪০ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন ব্রেসওয়েল।
ভারতের পক্ষে বরুণ ও কুলদীপ সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন।
২৫২ রানের লক্ষ্য। করতে পারলেই চ্যাম্পিয়ন। অধিনায়ক রোহিত শর্মা শুরুটা করেছিলেন হাত খুলে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে কাইল জেমিসনকে ছক্কা মারেন ভারতের ওপেনার। একই আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে খেলে গেছেন তিনি। ১১তম ওভারে ৪১ বলে করে ফেলেন হাফ সেঞ্চুরি। শুবমান গিলের সঙ্গে ১০৫ রানের জুটি ছিল তার। এরপরই হঠাৎ ছন্দপতন।
বিনা উইকেটে ১০৫ রান করা ভারত ১২২ রানে হারায় তিন উইকেট। গিল, বিরাট কোহলির পর রোহিত মাঠ ছাড়েন। তারপর ক্রিজে নেমে শ্রেয়াস আইয়ার ওই ধাক্কা সামলে নেন। লং অনে ৪৬ রানে কাইল জেমিসনের হাতে জীবন পেয়ে নিউজিল্যান্ডকে আক্ষেপে ভাসান তিনি। তবে ৩৯তম ওভারে তাকে থামতে হয়েছে। ৪৮ রানে মিচেল স্যান্টনারের বলে রাচিন রবীন্দ্রর ক্যাচ হন শ্রেয়াস।
তারপর হার্দিক পান্ডিয়া ও লোকেশ রাহুল আক্রমণাত্মক জুটিতে দলকে জয়ের পথে রাখেন। লক্ষ্য থেকে ১১ রান দূরে থাকতে হার্দিক ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে আউট হন। জেমিসনকে ফিরতি ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তবে পথ হারায়নি ভারত। রবীন্দ্র জাদেজা ও রাহুল মিলে এক ওভার হাতে রেখে দলকে জেতান।
আমার বাঙলা/ইউকে