দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের জয়ে নিশ্চিত হয়ে গেছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। এই ম্যাচ হারলে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বিদায় নিশ্চিত!
বাংলাদেশের জন্য শঙ্কার ম্যাচটিই নিউজিল্যান্ডের জন্য সম্ভাবনার। জিততে পারলেই সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত ২০০২ আসরের চ্যাম্পিয়নদের।
পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু বাংলাদেশ সময় সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টায়।
শুরুর দুই আসরে টুর্নামেন্ট ছিল নক আউট। এখন ধরন বদলে গেছে। তবে বাংলাদেশের জন্য ফিরে এসেছে সেই বাস্তবতা। এই ম্যাচে না থেকেও প্রবলভাবেই আছে পাকিস্তান। বাংলাদেশ হেরে গেলে যে বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে তাদেরও!
২৯ বছর পর আইসিসি টুর্নামেন্ট চলছে পাকিস্তানে। নিজেদের সেই উৎসব থেকে দুই ম্যাচেই ছিটকে পড়ার শঙ্কায় তারা।
ক্রিকেটীয় শক্তি কিংবা সামগ্রিক বাস্তবতা, সব দিক থেকেই আন্ডারডগ হয়ে নামছে বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ম্যাচটি দুবাইয়ে খেলে নাজমুল হোসেন শান্তর দল টুর্নামেন্টে প্রথমবার খেলবে খেলবে পাকিস্তানে। নিউজিল্যান্ড সেখানে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে। সেখানে ত্রিদেশীয় সিরিজে দোর্দণ্ড প্রতাপে জিতেছে তারা। পরে গা গরমের ম্যাচে হারিয়েছে আফগানিস্তানকে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে পাত্তা দেয়নি স্বাগতিক পাকিস্তানকে। কন্ডিশন যেমন এখন তাদের আপন, পারফরম্যান্সও চূড়ায়।
এমন দলের মুখোমুখি হচ্ছে শক্তিতে পিছিয়ে থাকা, আত্মবিশ্বাস নড়বড়ে হয়ে পড়া বাংলাদেশ। ম্যাচের আগে ফিল সিমন্স বলেন, টুর্নামেন্টের প্রতিটি ম্যাচই চাপের ম্যাচ। বিশ্বের শীর্ষ আটটি দল খেলছে, এখানে সব ম্যাচ কঠিন হওয়াই প্রত্যাশিত। হ্যাঁ, নিউজিল্যান্ড খুব ভালো খেলছে এই মুহূর্তে। তবে সোমবার নতুন একটি দিন। আমরা চেষ্টা করব নিশ্চিত করতে, যতটা ভালো তারা খেলছে, এ দিন যেন তা না পারে।
বাংলাদেশের জন্য আশার বড় উৎস অবশ্য এই শহর আর এই মাঠ। রাওয়ালপিন্ডিতেই গত আগস্টে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার স্মরণীয় অভিজ্ঞতা আছে। সেই সুখস্মৃতি দলকে এবার উজ্জীবিত করবে। কোচ বলেন, আশা করি এটি হবে (ওই স্মৃতি থেকে প্রেরণা পাবে দল)। পাকিস্তানে এসে পাকিস্তানকে হারানো সহজ কাজ নয়। আশা করি, দল অনেক আত্মবিশ্বাস পাবে সেখান থেকে। আশা করব, এই মাঠে নিয়ে ছেলেদের ভাবনায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব থাকবে ওই সিরিজের।
ওই সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বড় রান করেছিল দুই দলই। এরপর বাকি ইনিংসগুলোয় আর তত বড় স্কোর হয়নি। সবশেষ ওয়ানডে সিরিজ এখানে হয়েছিল ২০২৩ সালের এপ্রিলে। তখন উইকেট ছিল ব্যাটিং স্বর্গ। এক ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের ২৮৮ রান টপকে জিতেছিল পাকিস্তান, আরেকটি কিউইদের ৩৩৬ রানও বেশ অনায়াসে টপকে গিয়েছিল পাকিস্তানিরা। এবারও উইকেট পুরোপুরি ব্যাটিং বান্ধব হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংই ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। উইকেট যদিও সেই ম্যাচে ব্যাটিং সহায়ক ছিল না। তার পরও, ৩৬ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর আর কী বাকি থাকে! নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে তাই টপ অর্ডারের জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় কোচ সিমন্স। দলের কাছে তার চাওয়া তিনশর বেশি রান। এমনকি তিনশর আশেপাশে রানও যথেষ্ট নাও হতে পারে। লাহোরে শনিবার ৩৫১ রানের পুঁজি নিয়েই ইংল্যান্ড পাত্তা পায়নি অস্ট্রেলিয়ার কাছে।
ব্যাটিংয়ে আজ একটি পরিবর্তন বাংলাদেশের আসতে পারে। ফিট হয়ে উঠলে একাদশে ফিরবেন মাহমুদউল্লাহ। নিজের সবশেষ চার ম্যাচেই ফিফটি করা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে ফিরে পেলে দলের জন্য তা হবে স্বস্তির। পাশাপাশি একটি সিদ্ধান্তও নিতে হবে দলকে। বাদ পড়বেন কে? টপ অর্ডারে কাউকে বাইরে রেখে মাহমুদউল্লাহকে আনা হবে নাকি মিডল অর্ডার থেকে বাইরে রাখা হবে মুশফিকুর রহিমকে, সেটিই এখন দেখার।
বোলিং আক্রমণেও অন্তত একটি পরিবর্তন হবে নিশ্চিতভাবেই। প্রথম ম্যাচে যার একাদশের বাইরে থাকা বেশ বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিল, সেই নাহিদ রানা ফিরবেন। ছয় মাস আগে এই মাঠেই আগুনে এক স্পেল দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে প্রথমবার নাড়া দিয়েছিলেন তরুণ এই গতি তারকা।
আমারবাঙলা/এমআরইউ