গুরুতর অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ নারী জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় মাতসুশিমা সুমাইয়া। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, গত কয়েক দিনে অসংখ্যবার হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি পেয়েছি।
তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে দায়ীদের বিরুদ্ধে।
প্রধান কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ফুটবলারদের মধ্যে আছেন সুমাইয়া। ১৮ জন খেলোয়াড় সম্প্রতি বাফুফেকে পাঠানো এক চিঠিতে জানিয়েছেন, বাটলার দায়িত্বে থাকলে অনুশীলন ক্যাম্পে অংশ নেওয়া তো দূরে থাক, প্রয়োজনে তারা গণঅবসরে যাবেন। তাদের এই অনড় অবস্থান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলেছেন অনেকে। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মাঝে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ২৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড সুমাইয়া করেছেন ভয়ঙ্কর অভিযোগ। হত্যা ও ধর্ষণের হুমকিতে প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি।
এরপর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের সর্বোচ্চ ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাফুফে জানিয়েছে, হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে তারা, 'বাংলাদেশ নারী জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় মাতসুশিমা সুমাইয়াকে উদ্দেশ্য করে হুমকি ও হয়রানির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাফুফে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।'
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, 'কোনো ক্রীড়াবিদ তার দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য নিগ্রহের সম্মুখীন হতে পারে না। বাফুফে তার খেলোয়াড়দের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'
জাপানে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা সুমাইয়া একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, 'ফুটবল খেলার জন্য আমি আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে লড়াই করেছি, শুধু এই বিশ্বাসে যে, আমার দেশ আমার পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। সত্যিই কেউ একজন ক্রীড়াবিদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করে না। আমরা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছি, সেটি সম্পর্কে আমার ও সতীর্থদের জন্য ইংরেজিতে একটি চিঠি লেখার ন্যূনতম সামর্থ্য আমার আছে। গত কয়েক দিন ধরে আমি অসংখ্যবার হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি পেয়েছি। (আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা) শব্দগুলো আমাকে এমনভাবে ভেঙে দিয়েছে, যা আমি কল্পনাও করিনি।'
তিনি যোগ করেছেন, 'আমি জানি না এই মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে আমার কত সময় লাগবে। তবে আমি বলতে চাই যে, শুধু স্বপ্ন পূরণ করার জন্য আর কাউকেই যেন এসবের মধ্য দিয়ে যেতে না হয়।'
২০০১ সালে জাপানে জন্ম নেওয়া সুমাইয়ার বাবা বাংলাদেশি এবং মা জাপানিজ। দুই বছর বয়সেই জাপান থেকে পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে আসেন তিনি। শৈশব থেকেই ফুটবলকে ধ্যান-জ্ঞান করা সুমাইয়া ২০২৩ সাল থেকে জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ।
আমারবাঙলা/এমআরইউ