ইয়াশা সাগরের উপস্থিতিতে চিটাগং কিংসের ডাগআউট কতটা প্রাণবন্ত, জানা নেই। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এ কানাডিয়ান উপস্থাপিকা বিপিএলের খেলা উপভোগ করছেন কিনা, শোনা হয়নি। তবে যেটুকু জানা গেছে, মোটা সম্মানীর বিনিময়ে কিংসের হোস্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছ থেকে টাকা পাওয়া নিয়েও দুশ্চিন্তা নেই তার। ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর শহীদ আফ্রিদিও চুক্তির বেশির ভাগ টাকা পেয়ে গেছেন বলে খবর। ইয়াশার মতো আফ্রিদিরও বকেয়া নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। দুশ্চিন্তা শুধু মাঠে খেলা ক্রিকেটারদের।
লিগ পর্বের ১২ ম্যাচের ৯টি শেষ হয়ে যাওয়ার পরও কেউ টাকা না পেলে দুশ্চিন্তা হওয়াটাও স্বাভাবিক। তার ওপর ফ্র্যাঞ্চাইজির দেওয়া চেক বাউন্স করলে দুশ্চিন্তা আতঙ্কে রূপ নেয়। কিংসের কোনো কোনো ক্রিকেটারের মানসিকতা এখন সে রকমই। বিসিবির বেঁধে দেওয়া নিয়মে টাকা না পাওয়ায় দুশ্চিন্তা কুরে কুরে খাচ্ছে কাউকে কাউকে। আবার উল্টো খবরও পাওয়া গেছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক সামির কাদের চৌধুরী নাকি টাকা হাতে পেলেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্রিকেটারদের দিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিটাগংয়ের সিনিয়র ক্রিকেটারদের অনেককে এখনো কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে চিন্তিতও নন তারা। মোহাম্মদ মিঠুন, নাঈম ইসলামদের ভরসার জায়গা ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক সামির কাদের। তারা বিশ্বাস করেন, খেলা শেষ হওয়ার আগেই বেশির ভাগ টাকা পেয়ে যাবেন।
দেশি ক্রিকেটারদের পেমেন্টের ইস্যুতে জানতে চাওয়া হলে চিটাগংয়ের মালিক সামির কাদের বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, দেশি ক্রিকেটারদের সবাইকে টাকা দিতে পারিনি। কাউকে আগে দিচ্ছি, কাউকে পরে। কিন্তু কারও টাকা না দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি চালাতে আসিনি। একজন খেলোয়াড় মিডিয়াকে বলেছেন, দুবার চেক বাউন্স হয়েছে। তার এ কর্মকাণ্ডে আমি মানসিকভাবে আহত। আমি তাকে টাকাও দেব আবার শৃঙ্খলা ভাঙায় ব্যবস্থাও নেব। বিনুরা ফার্নান্দোর মাত্র ৬০০ ডলার বাকি ছিল। অথচ যেভাবে নিউজ হলো, তা হতাশ করা। আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আমার দলের সবাই টাকা পাবে। তারা মাঠে পরিশ্রম করে খেলে, আমিও পরিশ্রম করছি তাদের সম্মানীর টাকা দেওয়ার জন্য। এর মধ্যে দলের কেউ সম্মানে আঘাত করলে গভীর ক্ষত তৈরি হয়।’
চিটাগংয়ের সিনিয়র ক্রিকেটার নাঈম ইসলামের কাছে পেমেন্ট ইস্যুতে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘মিডিয়াতে যেভাবে এসেছে, তা ঠিক না। বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই নগদ টাকা নিয়েছে সামির ভাইয়ের কাছ থেকে। কেউ ৩০ শতাংশ, কেউ ৫০ শতাংশও পেয়েছে। আমার মনে হয় না, অভিযোগ করার মতো কিছু হয়েছে। কারণ সবাইকে বর্তমান বাস্তবতাও তো বুঝতে হবে।’
চেক বাউন্স করা ইস্যুতে অধিনায়ক মিঠুনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘টাকা দিচ্ছে না, তা নয়। আমার জানা মতে, অনেকে ৫০ শতাংশ টাকাও পেয়ে গেছে। বিসিবির বেঁধে দেওয়া প্রক্রিয়া অনুসরণ করে হয়তো পেমেন্ট হচ্ছে না, তবে হচ্ছে এটা নিশ্চিত।’
বিসিবি যেখানে জামিনদার, সেখানে চুক্তির টাকা পাওয়া নিয়ে দেশি ক্রিকেটাররা কেন এত দুশ্চিন্তায়? কারণ তারা তো প্লেয়ার্স ড্রাফটের ক্রিকেটার।
ফ্র্যাঞ্চাইজি বিসিবিকে ব্যাংক গ্যারান্টি দিক বা না দিক, তাদের টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তা বোর্ডের নিয়মেই আছে। সেটা ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছ থেকে আদায় করে নিয়ে দেব বা নিজেদের কোষাগার থেকে, তাতে ভাবনার কিছু নেই বলে মনে করেন একজন বিসিবি কর্মকর্তা। এর নমুনাও তো দেখা গেছে কিছুদিন আগে।
দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটারদের প্রথম কিস্তির ২৫ শতাংশ টাকা ফ্র্যাঞ্চাইজি ভ্যালেন্টাইন গ্রুপের এমডি শফিকুর রহমানের কাছ থেকে তুলে দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। তাসকিন আহমেদরা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরলেই আরও ২৫ শতাংশ টাকা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। আরো জানা গেছে, রাজশাহী দলে একজন প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার কথা ভাবছে বিসিবি।
আমারবাঙলা/জিজি