ক্রীড়া ডেস্ক: হারলে বিদায়। সামনে প্রতিপক্ষ টানা ৮ জয়ে ছুটতে থাকা অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের আগে সব দিক থেকেই পিছিয়ে সবশেষ দুই ম্যাচ হারা আফগানিস্তান। কিন্তু এদিন ভিন্ন ভাবনাই হয়তো ছিল তাদের।
সম্মিলিত পারফরম্যান্সে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে তারা জাগিয়েছে আরও সামনে এগোনোর সম্ভাবনা। টুর্নামেন্টে টিকে থাকা নিশ্চিতের পর এবার অধিনায়ক রাশিদ খান দেখছেন সেমি-ফাইনালে খেলার স্বপ্ন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে স্মরণীয় জয়ের পর তেমন কঠিন নয় আফগানিস্তানের সেরা চারে ওঠার সমীকরণ।
বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিতলে অন্য কোনো ম্যাচে না তাকিয়েই সেমি-ফাইনালে উঠে যেতে পারে রাশিদ, গুলবাদিন নাইবদের দল। তাই শেষ ম্যাচটিকে বড় ম্যাচ আখ্যা দিলেন রাশিদ। সেন্ট ভিনসেন্টে বাংলাদেশ সময় রোববার সকালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আফগানিস্তান হেরে গেলে সুপার এইটের প্রথম গ্রুপের শেষ ম্যাচটি হয়ে যেত নিয়মরক্ষার। এখন সেটিই রূপ নিয়েছে অলিখিত কোয়ার্টার-ফাইনালে।
আফগানিস্তান তো বটেই, অঙ্কের মারপ্যাঁচে টিকে আছে বাংলাদেশের সম্ভাবনাও। গ্রুপ ‘১’-তে এখন পর্যন্ত দুটি করে ম্যাচ খেলেছে সবাই। দুই জয়ে সবচেয়ে নিরাপদ অবস্থানে ভারত। একটি করে ম্যাচ জিতেছে আফগানিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া। শ্রেয়তর নেট রান রেটে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়নরা। সেন্ট লুসিয়ায় বাংলাদেশ সময় সোমবার রাতে সুপার এইটে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। ওই ম্যাচের ফলাফলের ওপর পরিষ্কার হয়ে যাবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের সমীকরণ।
তাই স্পষ্ট চিত্র মাথায় নিয়েই পরদিন ভোরে খেলতে নামতে পারবে আফগানিস্তান। সেই সমীকরণ মেলাতে পারলে ইতিহাসে প্রথমবার সেমি-ফাইনালে উঠে যাবে তারা। অনেক দিন মনে রাখার মতো জয়ের পর এই কথা ভালোভাবেই জানেন রাশিদও। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তাই নিজেদের সম্ভাবনার কথা জোর দিয়েই বললেন আফগান অধিনায়ক। “(অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে) এই জয় আমাদের দেশের জন্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশ্বব্যাপী যেখানেই আফগানরা আছে তাদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তারা খুব করে এমন একটি জয় চাইছিল। আমি নিশ্চিত এই জয়ে তারা গর্বিত এবং খেলা উপভোগ করেছে। আমাদের জন্য এটি মাত্র শুরু। পরেরটি বড় ম্যাচ।
আমাদের সেমিতে ওঠার পূর্ণ সুযোগ আছে।” রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের ১১৮ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দেড়শ ছুঁইছুঁই পুঁজি পায় আফগানিস্তান। সেন্ট ভিনসেন্টের উইকেটের আচরণ মাথায় রেখে ইনিংসের বিরতিতেই জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন রাশিদরা। পরে নতুন বলে অস্ট্রেলিয়াকে কাঁপিয়ে দেন নাভিন-উল-হাক।
আর একাদশ ওভারে অষ্টম বোলার হিসেবে আক্রমণে এসে আফগানদের স্বপ্নের জয় এনে দেন নাইব। অসম বাউন্স ও মন্থর উইকেটে গতির বৈচিত্র কাজে লাগিয়ে টানা ৪ ওভারের স্পেলে নাইব নেন ৪ উইকেট। তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। এত বড় অর্জনের দিন ম্যাচের সেরা হতে পারায় স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত ৩৩ বছর বয়সী পেস অলরাউন্ডার। তবে এখনই সামনের ম্যাচ নিয়ে ভাবতে চান না তিনি।
এই জয়ের আনন্দ শেষ করে বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়ে পরিকল্পনা সাজানোর কথা বলেন নাইব। “টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই আমরা একটি একটি করে ম্যাচের দিকে মনোযোগ দিয়েছি। আমাদের জন্য প্রতিটি ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ভালো দল। আমরা বিশ্রাম নিয়ে তারপর এই ব্যাপারে চিন্তা করতে পারি।”
এবি/এইচএন