ক্রীড়া ডেস্ক: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে অযাচিত মন্তব্য করায় প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের উপর ক্ষেপেছেন। বিসিবির নিয়মানুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ এই কর্তা।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) টেনিসের একটি প্রোগ্রামে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন পাপন। এ সময় বিপিএল নিয়ে হাথুরুসিংহের মন্তব্য সম্পর্কে প্রশ্নে তাকে শোকজ দেওয়াসহ নিয়মুনযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান বিসিবি সভাপতি।
‘প্রথমে দেখতে হবে সে আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে কিনা। আমাদের যে নিয়ম আছে, সেই নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব। এটা প্রথম কথা। দ্বিতীয় কথা, সে কোনো জায়গায় এমন কিছু বলেছে কিনা যেটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য, সেটা যেইই হোক, ঘরোয়া ক্রিকেট হোক, খেলোয়াড় হোক, বিপিএল হোক, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হোক, যেটা কিনা নেতিবাচক বার্তা বহন করে। তাহলে অবশ্যই তাকে জিজ্ঞেস করা হবে। অবশ্যই শোকজ করা হবে।’
ক্রীড়া বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোতে বিপিএল নিয়ে কথা বলেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ। কোনো রাখঢাক না রেখেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন এই লঙ্কান কোচ। সাফ বলে দিয়েছেন, বিপিএল তার কাছে সার্কাস ব্যতীত কিছু মনে হয় না। বিপিএল দেখানো চ্যানেল সামনে চলে এলে তিনি টিভিই বন্ধ করে দেন!
‘বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলে বিশ্বমানের হচ্ছে কি না?’ এমন প্রশ্নের জবাবে হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘আমাদের যথাযথ মানের কোনো টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট নেই। এটা শুনতে অদ্ভূত লাগবে। তবে বিপিএল যখন দেখি, মাঝেমধ্যে টিভি বন্ধ করে দেই। কিছু খেলোয়াড় তো কোনো মানেরই নয়।’
‘এখানে আইসিসির হস্তক্ষেপ করা উচিত। অবশ্যই কিছু নিয়ম থাকতে হবে। একজন খেলোয়াড় একটা রেখে আরেকটা টুর্নামেন্ট খেলছে। এটা সার্কাস। খেলোয়াড়েরা তাদের সুযোগের কথা বলবে, কিন্তু এটা ঠিক নয়। মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে, আমি আগ্রহ হারিয়েছি’ -আরও বলেন হাথুরুসিংহে।
বিসিবির চাকুরি করে, এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে হাথুরুসিংহে এমন কথা বলতে পারেন কি না তা নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে প্রশ্ন ওঠে। বিসিবিও জানিয়েছিল এই বিষয়ে তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। এর মধ্যে বোর্ড সভাপতি নিজের অবস্থান জানালেন।
তবে এখনো হাথুরুসিংহের সাক্ষাৎকার পড়ে দেখেননি পাপন, ‘আমি প্রথম কথাটা যেটা আপনাদের বলা দরকার, আমি এটা এখন পর্যন্ত দেখিনি। দ্বিতীয় কথা, একটা জিনিস স্পষ্ট, একটা টুর্নামেন্ট চলাকালে এমন কথা কারও পক্ষেই বলা সম্ভব না, পূর্ব অনুমতি ছাড়া। কোনো প্রকার ক্ষমতা ছাড়া। বিশেষ করে এই ধরণের (জায়গায়) যারা আছেন, কোচ, সিলেক্টর বা খেলোয়াড়, তাদের সঙ্গে আমাদের একটা লিখিত চুক্তি আছে যে তারা মিডিয়াতে কিছু বলার আগে আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।’
না পড়লেও বিসিবি সভাপতি জানতে চান হাথুরুসিংহের এমন মন্তব্যের কারণ জানতে চান তিনি, ‘অনেক সময় হয় কী, তথ্য যদি সঠিক না জানা যায়, তাহলে ভুল তথ্য পাওয়ার সুযোগ অনেক বেশি থাকে। আরেকটা জিনিস মনে রাখতে হবে, একেকজনের দৃষ্টিভঙ্গি একেক রকমের। জিনিস একেকজন একেকভাবে দেখে। ওখানে কাকে দোষ করছে, কেন তার মনে হচ্ছে দেখতে ইচ্ছা করছে না, টেলিভিশন অফ করে দিচ্ছি বা এরকম কথাবার্তা। সেটা বলার পিছনে কারণ কী, সেটার পেছনের কারণ আমার জানা দরকার। একবার একটু পড়ে নিই, তাহলে আমার জন্য বলা সহজ হয়। কোন একটা জিনিস যদি না দেখি, তাহলে এভাবে বলা কঠিন।’
এবি/এইচএন