ক্রীড়া ডেস্ক: নিউক্যাসলের বিপক্ষে শনিবার প্রিমিয়ার লিগে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। এই জয়ে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন কেভিন ডি ব্রুইনা।
বদলী বেঞ্চ থেকে ৬৯ মিনিটে মাঠে নেমেই গোল পেয়েছেন বেলজিয়ান এই তারকা। একইসাথে স্টপেজ টাইমে ওস্কার ববকে দিয়ে জয়সূচক গোলও করিয়েছেন। পাঁচ মাসের ইনজুরি কাটিয়ে সিটির হয়ে মাঠে ফেরাটা এভাবেই স্বরণীয় করে রেখেছেন ডি ব্রুইনা।
এই জয়ের টেবিলের শীর্ষে থাকা লিভারপুলের তুলনায় দুই পয়েন্ট পিছিয়ে সিটিজেনরা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। দুই সপ্তাহের শীতকালীন বিরতি কাটিয়ে প্রিমিয়ার লিগে পুনরায় ফিরে আসার ম্যাচটি সিটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নিউক্যাসল পরীক্ষা অবশ্য পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা ভালভাবেই উতরে গেছে। ম্যাচ শেষে গার্দিওলা বলেছেন, ‘আজকের ম্যাচটা দারুন চিল। কখনো কখনো এই ধরনের জয় আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। আজ সকলের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পেয়েছে। খেলোয়াড়রা প্রমান করেছে তারা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত, শিরোপা ধরে রাখার জন্য সম্ভাব্য সব কিছুই তারা করতে পারে।’
ম্যাচের শেষভাগের নাটকীয়তা এডি হাউয়ের দলের প্রিমিয়ার লিগে শেষ সাত ম্যাচে ষষ্ঠ পরাজয় নিশ্চিত করেছে। অথচ প্রথমার্ধের দুই মিনিটের দুই গোলে নিউক্যাসল বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছিল। নিউক্যাসল বস বলেছেন, ‘ম্যাচের শেষভাগে তাদের যোগ্যতা প্রমানিত হয়েছে। ডি ব্রুইনা নি:সন্দেহে একজন বিশ্বমানের খেলোয়াড়। আমাদের পারফরমেন্সে বড় কোন ভুল ছিলনা। আজকে আমরা শীর্ষ সারির একটি ক্লাব হিসেবেই খেলেছি। এই দলটি একসাথে বেশ ভাল খেলছে, আমি তাদের মধ্যে কোন ধরনের নেতিবাচক দিক লক্ষ্য করিনি। যদিও আমরা শেষ পর্যন্ত তিন পয়েন্ট পাইনি।’
ম্যাচের ৮ মিনিটে সিন লংস্টাফের একটি শট আটকাতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ত্যাগে বাধ্য হন সিটি গোলরক্ষক এডারসন। আগেই অফসআইড পজিশনের কারনে আলেক্সান্দার ইসাকের গোলটি বাতিল হয়ে যায়। যদিও আরো আগেই যদি অফসাইডের পতাকা উঠানো যেত তবে হয়তো দলের এক নম্বর গোলরক্ষককে হারাতে হতো না, যে কারনে সিটি খেলোয়াড়দের কিছুটা ক্ষুব্ধ হতে দেখা গেছে।
প্রথমার্ধের আধা ঘন্টা সিটির আধিপত্য ছিল। কিন্তু ডি ব্রুইনা ও আর্লিং হালান্ডের অনুপস্থিতিতে নিজেদের পজিশন গোছাতে পারছিল না সিটি। ২৬ মিনিটে কাইল ওয়াকারের লো ক্রস থেকে পর্তুগীজ তারকা বার্নান্ডো সিলভার গোলে ডেডলক ভাঙ্গে সিটি। পরের মুহূর্তেই সিলভার জোড়ালো শট দুর্দান্ত ভাবে রুখে দেন নিউক্যাসল গোলরক্ষক মার্টিন ডুব্রাভকা। বিরতির ঠিক আগে দুই মিনিট আগে নিউক্যাসল পরপর দুই গোল দিয়ে ম্যাচের চেহারা পাল্টে দেয়। ব্রুনো গুইমারেসের সাথে বল আদান প্রদান করে ইসাকের কার্লিং শটে পরাস্ত হন সিটি গোলরক্ষক স্টিফেন ওরতেগা। পরের মিনিটেই সুইড এই স্ট্রাইকারের সহায়তায় এন্থনি গর্ডন নিউক্যাসলকে এগিয়ে দেন।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর সাথে সাথে ম্যাচের আধিপত্য নিজেদের করে নেয় সিটি। কিন্তু আবারো আক্রমনভাগে যথাযথ অভিজ্ঞতার অভাব লক্ষ্য করা গেছে। এবারের মৌসুমে প্রথমবারের মত প্রিমিয়ার লিগে খেলতে নেমেছিলেন ডি ব্রুইনা। তিনি মাঠে আসার সাথে সাথে সিটিজেনরা যেন প্রাণ ফিরে পায়। গত সপ্তাহে এফএ কাপে হাডার্সফিল্ডকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করার ম্যাচটি দিয়ে ৩২ বছর বয়সী ডি ব্রুইনা মাঠে ফিরেছিলেন। ম্যাচ শেষের ১৬ মিনিট আগে রড্রির পাস থেকে লো শটে ডুব্রাভকাকে পরাস্ত করেন ডি ব্রুইনা। দীর্ঘদিন পর মাঠে নেমেও স্বভাবসুলফ একের পর এক এ্যাসিস্ট করে ডি ব্রুইনা প্রমান করেছেন এখনো তিনি ফুরিয়ে যাননি। গত মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত যে কয়টি এ্যাসিস্ট ডি ব্রুইনা করেছে তা ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগের মধ্যে সর্বোচ্চ। স্টপেজ টাইমে ডি ব্রুইনার এ্যাসিস্ট থেকে বব সিটিকে জয় উপহার দেন।
এবি/এইচএন