২০ দিন আগে বাংলাদেশের জার্সিতে খেলে গেছেন হামজা চৌধুরী। শেফিল্ড ইউনাইটেড নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করা এই তারকার মনের বড় অংশজুড়ে এখন একটাই নাম বাংলাদেশ! বাবার সঙ্গে কথা হলেই বাংলাদেশ নিয়ে গল্প জুড়ে দেন। এমনকি পরিবারের সদস্যরা এক হলেও বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কথা হয়। ইংল্যান্ড থেকে এমনটাই জানিয়েছেন হামজার বাবা দেওয়ান গোলাম মোর্শেদ চৌধুরী।
গত ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল হামজার। তার আগে ১৭ মার্চ সিলেটে পা রাখার পর বিমানবন্দর থেকে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার স্নানঘাটের নিজ বাড়ি পর্যন্ত উষ্ণ অভ্যর্থনা পান হামজা।
লাখো মানুষের ভালোবাসা তার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তাই তো ইংল্যান্ডে ফেরার পরও এমন দারুণ অভিজ্ঞতা পরিবার–বন্ধুবান্ধবদের কাছে বলে বেড়াচ্ছেন হামজা। ছেলেকে নিয়ে বাবা মোর্শেদ চৌধুরীও বেশ উচ্ছ্বসিত, ‘ও তো খুবই খুশি। ওর বউ-বাচ্চারাও সময়টা উপভোগ করেছে। আমি দেশ থেকে ঈদ করে ইংল্যান্ডে আসার পর হামজার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তখন অনেক কিছু নিয়ে কথা হয়। সে বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কথা বলেছে। আসলে বাংলাদেশে গিয়ে এত মানুষের ভালোবাসা পেয়ে সে খুবই আনন্দিত। এখন কথা হলেই ও বাংলাদেশ নিয়ে বলে। পরিবারের সবাই এক হলেও বাংলাদেশ নিয়ে কথা হয়।’
অল্প দিনে যেন সবার মন জয় করে নিয়েছেন হামজা। বাংলাদেশ দলের অন্য ফুটবলাররাও তাঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করতে পেয়ে আনন্দিত। ভারতের বিপক্ষে একাদশে থেকেও মাঠে নামতে পারেননি আল-আমিন। তবে হামজার মতো প্রিমিয়ার লিগে খেলা একজনকে সতীর্থ হিসেবে পেয়ে রোমাঞ্চিত পুলিশ এফসিতে খেলা এই ফরোয়ার্ড, ‘হামজা ভাই অমায়িক একজন ফুটবলার। তার মধ্যে কোনো রকম মান-অভিমান নেই। সবার সঙ্গে খুব সহজে মিশে যান। আসলে তার থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।’
হামজার কাছ থেকে তাঁর সতীর্থদের গল্প শুনেছেন বাবা মোর্শেদ চৌধুরীও। সবার সঙ্গে হামজার বেশ বন্ধুত্ব হয়ে গেছে, সেটা বুঝতে পারছেন তিনিও, ‘আমাকে বলে তার টিমমেটরাও নাকি অনেক ভালো। অল্প দিনে ও সবার সঙ্গে মিশে গেছে। আসলে সে নিজেকে এত বড় মাপের ফুটবলার কখনো ভাবে না। আলহামদুলিল্লাহ, আমরাও তাকে নিয়ে খুব খুশি।’
ভারতের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই নিজের সর্বোচ্চটা নিংড়ে দেন হামজা। বল পায়ে দেখান দারুণ সব নৈপুণ্য। যদিও বাংলাদেশ পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে দেশে ফিরতে পারেনি। তারপরও কম কিসে! ২৭ মার্চ ইংল্যান্ডে ফেরার পর শেফিল্ডে যোগ দিয়ে পরদিন নেমে পড়েন মাঠে। বাংলাদেশ থেকে খেলে যাওয়ার পর খুব একটা বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পাননি। এরই মধ্যে ক্লাবের হয়ে চার ম্যাচ খেলেছেন। হামজার বাবাও বললেন কতটা ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন হামজা, ‘আসলে ও খুব একটা সময় পায় না। আমরা এক দেশে থাকলেও খুব বেশি দেখা হয় না। সে ম্যাচ, অনুশীলন নিয়ে ব্যস্ত থাকে।’
ক্লাবের এমন ব্যস্ততা শেষ করে জুনে আবার হামজার বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। ১০ জুন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ খেলবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। যে ম্যাচ দিয়ে ঘরের মাঠে অভিষেক হবে হামজার। সেই ম্যাচ আয়োজনের জন্য ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২২ মে পুরো প্রস্তুত স্টেডিয়াম বাফুফেকে বুঝিয়ে দেবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
আমারবাঙলা/জিজি