মেগা নিলামে প্রিয়াংশ আর্যের ভিত্তিমূল্য ছিল ৩০ লাখ। একাধিক দলের আগ্রহ পেরিয়ে তাকে শেষ পর্যন্ত তিন কোটি ৮০ লাখ রুপিতে দলে নিয়েছিলো পাঞ্জাব কিংস। একজন আনকোরা তরুণের জন্য এত টাকা খরচ নিয়ে যাদের মনে প্রশ্নের উদয় হয়েছিল মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে বোধহয় তারা সেই উত্তর পেয়ে গেছেন।
চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে মাত্র ৩৯ বলে সেঞ্চুরি করে আলোড়ন তুলেছেন এই ২৪ বছর বয়েসী তরুণ। ৪২ বলে ৭ চার, ৯ ছক্কায় করেছেন ১০৩ রান। ২১৯ রান করে চেন্নাইকে ১৮ রানে হারাতে রেখেছেন অবদান। আইপিএলের ইতিহাসে প্রিয়াংশের সেঞ্চুরিটি চতুর্থ দ্রুততম, তবে আনক্যাপড (আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেলা) ব্যাটারদের মধ্যে এটিই দ্রুততম।
প্রিয়াংশের নাম খুব বেশি লোকের জানার কথা নয়। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে লিস্ট-এ ম্যাচ খেলেছেন কেবল ৭টি। আইপিএলে নামার আগে সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতে স্বীকৃত টি-টুয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা ছিলো ১৮ ম্যাচের। সেখানেও দেখান ঝলক। তবে প্রিয়াংশ মূল ঝলক দেখান মূলত তার নিজ রাজ্যের আসর দিল্লি প্রিমিয়ার লিগে। সেই আসরে বাঁহাতি ব্যাটার মারেন ৪৩টি ছক্কা।
এমন অবলীলায় ছক্কা মারার সামর্থ্যের আইপিএলের স্কাউটদের নজরে পড়ে যান তিনি। মঙ্গলবার রাতে যেনতেন নয়, রবীচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, নুর আহমেদ, মাতিশা পাথিরানার মতো আন্তর্জাতিক তারকাদের বলে প্রিয়াংশ দেখান তার হিটিং এভিলিটি।
পুল করে, স্ল্যাশ করে, ফ্লিক করে ছক্কা মেরে দেখান তিনি বেশ ভিন্ন, নিজের ছাপ রাখতেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে এসেছেন। ম্যাচ সেরা হয়ে বলেছেন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের কাছ থেকে ভয়ডরহীন খেলার ছাড়পত্র পেয়ে নিজের খেলাটা খেলতে পেরেছেন তিনি। বলেন, এই অনুভূতি যেন অন্য গ্রহের। আমি খুশি, দলের জন্য আরো অবদান রাখতে চাই। এটিই আমার (ব্যাটিংয়ের) ধরন। শ্রেয়াস ভাই আমাকে সাহস নিয়ে ব্যাট করতে বলেছিলেন। আউট হলেও কোনো চিন্তা নেই এবং আমার মাথায় যা আছে সেটিই খেলতে বলেছিলেন।
গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে আইপিএলের অভিষেকে ২৩ বলে করেছিলেন ৪৭। সেদিনই দেখিয়েছিলেন ঝলক, মাঝে দুই ম্যাচে দ্রুত আউট হওয়ার পর এবার চেন্নাইর বিপক্ষে পুরোপুরি ডানা মেলে ধরলেন তিনি।
অন্য অনেকের মতো ক্রিকেট খেলা নিয়ে সংগ্রাম করতে হয়নি প্রিয়াংশকে। স্কুল শিক্ষক বাবা-মা চাইতেন ছেলে ক্রিকেটার হোক। তাদের অনুপ্রেরণা আর বিপুল সমর্থনে স্বপ্নের পথে হাঁটা ধরে তিনি আজ সর্বোচ্চ মঞ্চে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ