অবশেষে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের দুর্নীতিগ্রস্থ ও ফ্যাসিষ্ট সরকারের আস্থাভাজন মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে বদলি করা হলো।
বুধবার (১২ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগের এক অফিস আদেশে ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে অবিলম্বে ঢাকায় ফিরতে বলা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) শাহ আসিফ রহমান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, আপনাকে (মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর) সদর দপ্তর, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় বদলির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়ায় আপনার বর্তমান দায়িত্ব ত্যাগ করে অবিলম্বে সদর দপ্তর ঢাকায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
২০২০ সালের নভেম্বর মাসে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগদান করেন। মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর বিসিএস (ফরেন অ্যাফেয়ার্স) ক্যাডারের ২০ তম ব্যাচের একজন কূটনীতিক।
তিনি ২০০১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইউরোপ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে প্রথম সচিব ও ওমানের মাস্কাটে বাংলাদেশ দূতাবাসে চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স বা কাউন্সেলর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এদিকে, ২০০৯-১০ সালে নিউইয়র্কের জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে থাকা অবস্থায় তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ল'ফার্ম সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়ে স্ট্যান্ড রিলিজও করেছিল।
ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে বাহরাইনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছিলো। কিন্তু তার অতীত রিপোর্ট পর্যালোচনা করে মানামা তাকে প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে ওয়ারশোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসাবে প্রস্তাব করে বিদায়ী সরকার এবং পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগেরও সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
পরবর্তীতে জুলাই বিপ্লবের সময়ে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন ছাত্র-শিক্ষকদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে কাজাং থানায় অভিযোগে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর। সে সময়ে এই খাস্তগীর দেশের আন্দোলনকারীদেরও ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, হাইকমিশনের পাসপোর্ট ও ভিসা উইংকে একটি অকার্যকর ও অপ্রয়োজনীয় উইং স্বরূপ প্রমাণ করে মিশন থেকে পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে পাসপোর্ট ও ভিসা সার্ভিস ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের আউট সোর্সিং প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেয় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। এছাড়া হাইকমিশনের মধ্যে গ্রুপিং তৈরি করে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতিসহ নানান অভিযোগের খবর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে বদলীর সিদ্ধান্ত নিল সরকার।
আমারবাঙলা/ইউকে