নারীদের হয়রানিকারীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এলজিআরডি ভবনে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উপলক্ষে শ্রেষ্ঠ আত্মনির্ভরশীল নারী সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘দেশে যখন কোটা আন্দোলন হয়েছে, তখন নারীরাই এগিয়ে এসে বলেছেন, আমাদের কোটা প্রয়োজন নেই, আমরা সমতা চাই, প্রতিযোগিতা করে নিজেদের জায়গা করে নিতে চাই। বাংলাদেশের নারীদের এই সাহস আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। আমরা নতুন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে পারি, যেখানে কোনো জেন্ডার বৈষম্য থাকবে না।’
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমরা লক্ষ্য করছি, আইন-শৃঙ্খলা প্রস্তুতির অবনতির কারণে বিভিন্ন মহল সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে, ধর্মের আবেগকে ব্যবহার করে নারীদের নিচু করে দেখানো এবং হ্যারেজমেন্ট করার ঘটনা ইতোপূর্বে ঘটেছে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, আমাদের ধর্ম নারীদের প্রতি এই ধরনের কর্ম অনুমতি দেয় না, আমাদের ধর্ম নারীদের সর্বোচ্চ সম্মানের জায়গায় রাখার স্বীকৃতি দিয়েছে। যারা এই ধরনের কর্মের সাথে যুক্ত হয়েছে কিংবা হচ্ছে, তাদের আমরা সতর্ক করে দিতে চাই, সরকার এক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দেবে না। সামনের দিনগুলোতে এই ধরনের ঘটনা কেউ ঘটানো চেষ্টা করলে বা নিরাপত্তা বিঘ্ন করার চেষ্টা কিংবা ষড়যন্ত্র যেকোনো মহল থেকে করা হলে, কঠোর হস্তে দমন করা হবে।’
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ক্রমবর্ধমান ধর্ষণের যে ঘটনা ঘটছে তা আমাদের সামাজিক অবক্ষয়ের দিকে নির্দেশ করে। আমরা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই ধরনের ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিন্তে সরকার তার দায়িত্ব পালন করবে। এই ধরনের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে যারা অপরাধী তাদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তার প্রমাণ দিয়েছে। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই যেখানে জেন্ডারকে কেন্দ্র করে কোনো বৈষম্য থাকবে না। নারীরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।’
স্থানীয় সরকার ও পল্লী উপদেষ্টা বলেন, ‘নারী-পুরুষ সমানভাবে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আমাদের যে এজেন্ডা, সেখানে কাজ করে যাবেন, ফলে নতুন বাংলাদেশ গঠন এবং সংস্কারের যে কার্যক্রম সরকার হাতে নিয়েছে সেটি সফল হওয়া সম্ভব। আমি আহ্বান করবো দেশের প্রতিটা স্তর থেকে নারীরা অংশগ্রহণ, মতামত এবং সহযোগিতার মাধ্যমে আগামীর বাংলাদেশে অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হবেন।’
তিনি তার বক্তব্যে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ এবং আহত নারীদের, যেসব নারী তাদের সন্তান, স্বামী, ভাই হারিয়েছেন তাদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা দেন।
আমারবাঙলা/জিজি