পড়ন্ত বিকেল, ক্লান্ত রোজাদাররা; বাইরে তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস; নিচের সড়কে যানজট—এমন পরিস্থিতিতে মতিঝিল-উত্তরা রুটের যাত্রীদের প্রধান ভরসা হয়ে উঠেছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মেট্রোরেল।
অফিস শেষে হাজারো যাত্রী ভিড় জমিয়েছেন মেট্রো স্টেশনে। প্রতিটি ট্রেন ছুটছে যাত্রীতে ঠাসা বগি নিয়ে। স্টেশন থেকে ট্রেন—সবখানেই উপচেপড়া ভিড়, যেন তিল ধারণেরও জায়গা নেই।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে উত্তরা স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে প্রতিদিনের তুলনায় সামান্য কিছু মানুষ একক যাত্রার টিকিট সংগ্রহ করতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। তবে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে সরাসরি প্লাটফর্মে উঠে যাচ্ছেন বেশিরভাগ যাত্রী, যাদের কাছে এমআরটি পাস অথবা র্যাপিড পাস আছে। এদের বেশিরভাগেরই অফিস এই এলাকায়।
মেট্রোরেলের কর্মীরা ট্রেনের দরজায় ঝুলে থাকা যাত্রীদের ধাক্কা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করাচ্ছেন। তবে আজ দরজায় মানুষ আটকে যাওয়া বা ব্যাগ আটকে যাওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে পবিত্র রমজান মাসে সরকারি অফিস সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলে বাণিজ্যিক এলাকা উত্তরাগামী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অফিস ফেরত যাত্রীদের চাপ শুরু হয়েছে ৩টা থেকেই।
রাজু নামের এক যাত্রী বলেন, মেট্রোরেল একটা আস্থার নাম। ঢাকা শহরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেউ গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারবে, এই নিশ্চয়তা দিতে পারে না। কিন্তু কষ্ট করে মেট্রোরেলে উঠতে পারলে আর চিন্তা নেই। ২-৩ মিনিট কম বেশি হলেও গন্তব্যে পৌঁছা যায় অনায়াসে। টাকাটা বেশি লাগলেও এসি ট্রেনে আরামে যাওয়া যায়।
মাসুদ নামে আরেক যাএী বলেন, সবাই ইফতারের আগে বাসায় যেতে চায়। ফলে এই সময়টাতে মেট্রোরেলে যাত্রীর চাপ বেশি। গতকাল আমরা দেখেছি ইফতারের পর কিন্তু ট্রেন প্রায় ফাঁকা চলাচল করেছে। ফলে রোজার মাস জুড়ে বিকেল ৪টা থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত এরকম ভিড় হতেই পারে। এটা মেনে নিয়েই আপাতত চলাচল করতে হবে।
এদিকে রমজান উপলক্ষ্যে সম্প্রতি বিশেষ নির্দেশনা ও সময়সূচি দেয় মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। নির্দেশনায় বলা হয়, পবিত্র রমজানের সময় ইফতারে পানি পান করার জন্য প্রত্যেক যাত্রী মেট্রো ট্রেন ও স্টেশন এলাকায় শুধু ২৫০ মিলিলিটার পানির বোতল বহন করতে পারবেন। তবে পানি যেন পড়ে না যায় সেই বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ব্যবহৃত পানির বোতল অবশ্যই প্ল্যাটফর্ম/কনকোর্স/প্রবেশ ও বাহির হওয়ার গেটে থাকা ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, কোনো অবস্থাতেই প্লাটফর্ম, কনকোর্স ও মেট্রোরেলের ভেতর অন্য কোনো খাবার গ্রহণ করা যাবে না। শনিবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনের এবং শুক্রবারের সময়সূচি অপরিবর্তিত থাকবে।
সময়সূচি অনুযায়ী সর্ব প্রথম মেট্রোরেল উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে সকাল ৭ট ১০ মিনিটে ছাড়বে ও সর্বশেষ ট্রেন রাত ৯টায় ছাড়বে। মতিঝিল থেকে সর্বপ্রথম ট্রেন সকাল সাড়ে ৭টায় এবং সর্বশেষ ট্রেন রাত ৯টা ৪০ মিনিটে ছাড়বে।
এই সময়সূচি অনুযায়ী পুরো রমজান মাস অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের আগের দিন পর্যন্ত চলবে বলে জানায় ডিএমটিসিএল।
আমারবাঙলা/ইউকে