এবার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের দশম এবং একাদশ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ২২ জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান।
তিনি বলেন, ‘২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর যে নির্বাচন সেটাকে আমরা কেউ বলি বিতর্কিত, কেউ বলি অগ্রহণযোগ্য, কেউ বলি দিনের ভোট রাতে ইত্যাদি। এসব জায়গায় যেসব রিটার্নিং কর্মকর্তা, এই ৩ সময়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় নির্বাচন সম্পন্ন করে সরকার। এই সরকার (আওয়ামী লীগ) তিন মেয়াদে থাকার কারণে আজ আমারা এ দুরবস্থায় পড়েছি। তারা (ওই সময়ের ডিসিরা) অনেক বড় নেগেটিভ ভূমিকা রেখেছিলেন। কোনো একজন ডিসিও বলেননি আমি প্রতিবাদ করবো, আমি রিটার্নিং অফিসার থাকবো না, আমি রিজাইন করলাম, কাজ করবো না।’
সিনিয়র সচিব আরো বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে ৪৩ জনকে (ডিসি) ওএসডি করেছি। যাদের চাকরির বয়স ২৫ বছরের কম তাদের ওএসডি করা হয়। আর চাকরির বয়স ২৫ বছরের বেশি হলে আমরা বাধ্যতামূলক অবসর দিচ্ছি।’
এদিকে, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একদশ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জেলা প্রশাসককে (ডিসি) ওএসডি করে গত বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ওএসডি হওয়া ৩৩ কর্মকর্তা হলেন-বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের পরিচালক (যুগ্মসচিব) হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এস এম আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মিজানুর রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মাহমুদুল কবীর মুরাদ।
তালিকায় আরো রয়েছেন: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক মো. আতাউল গনি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন, মিনিস্টার স্থানীয় (যুগ্ম-সচিব) কাজী এমদাদুল ইসলাম এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত যুগ্ম-সচিব এস এম মোস্তফা কামালকে ওএসডি করা হয়েছে।
এ ছাড়া ওএসডি হওয়া আরো রয়েছেন: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব অঞ্জন চন্দ্র পাল, পরিকল্পনা বিভাগের যুগ্ম-প্রধান (সংযুক্ত) মোছা. সুলতানা পারভীন, একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের নির্বাহী সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. শহিদুল ইসলাম, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. আলী আকবর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. দাউদুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. মাজেদুর রহমান খান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশ।
আমারবাঙলা/জিজি