মহার্ঘ ভাতা দেওয়াসহ সাত দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করেছে বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশন। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সমাবেশ শেষে স্মারকলিপি নিয়ে একটি মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। বেলা ১টার পর মিছিলটি শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় শাহবাগ মোড়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করতে বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান ছোড়ে পুলিশ। এ ঘটনার পর শাহবাগের আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে দেখা গেছে।
এদিন দুপুরে ২টা ৪০ মিনিটে সরেজমিন দেখা যায়, মিন্টু রোড সংলগ্ন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পাশের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনমুখি সড়কের দুইপাশে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা জুমার নামাজের আগে দাঁড়িয়েছিল। তারা তাদের স্মারকলিপি দিয়ে চলে গেছেন। এখন আর কোনও ঝামেলা নেই।’
এর আগে ৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সমাবেশের ঘোষণা দেন ফেডারেশনের চেয়ারম্যান মো. সেলিম মিয়া।
ফেডারেশনের ৭ দফা দাবিগুলো হলো—
১। পে-কমিশন গঠন করে বৈষম্য মুক্ত ৯ম পে-স্কেল ঘোষণার মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসনসহ বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারণ ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে। পে-কমিশনে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য নূন্যতম ৬ হাজার টাকা মহার্ঘ ভাতা প্রদান করতে হবে।
২। যে সব কর্মচারী নিজ গ্রেডের বেতন বৃদ্ধির শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে তাদের বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি নিয়মিত করতে হবে।
৩। বৈষম্যহীন এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি এবং আপগ্রেডেশন বা পদোন্নতি নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। পদোন্নতি নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমোদিত পদোন্নতি নীতিমালা পর্যালোচনা করে সর্বোচ্চ সুবিধাপ্রাপ্ত অভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। ব্লক পোষ্ট নিয়মিত করণসহ শতভাগ পদোন্নতি দিতে হবে।
৪। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতো সর্বোচ্চ বয়স ৬৫ বছর করতে হবে। সব পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগ এবং কর্মচারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব-স্ব বেসিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের কমিটিতে রাখতে হবে।
৫। বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে সব ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ ও ১১-২০ গ্রেডের চাকরিজীবীদের রেশন ব্যবস্থা প্রবর্তন অথবা ন্যায্য মূল্যে সরকারিভাবে পণ্য সরবরাহ করতে হবে।
৬। সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মরত কর্মচারীদের গ্রাচুইটির পরিবর্তে পেনশন প্রবর্তনসহ বিদ্যমান গ্রাচুইটি বা আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশের জায়গায় ১০০ শতাংশ নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
৭। সরকারের অনুমোদন সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পেনশন এবং গ্রাচুইটির ওপর ভিত্তি করে ৪ শতাংশ গৃহ নির্মাণ ঋণ গ্রহণের সুবিধা রয়েছে। সরকার ঘোষিত নীতিমালার শর্ত অনুযায়ী লোন সুবিধা সাধারণ কর্মচারীগণ ভোগ করতে পারে না, অতএব নীতিমালা সংশোধন করতে হবে।
আমার বাঙলা/ এসএ