গাজীপুরে শেখ রেহানা পরিবারের টিউলিপ টেরিটরিসহ ৪ বিলাসবহুল বাংলো বাড়ির বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, তার স্বামী শফিক সিদ্দিক, মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক, দেবর তারেক সিদ্দিক, তার স্ত্রী শাহিন সিদ্দিক ও মেয়ে বুশরা সিদ্দিক। তবে, গত ৫ আগস্টের গণআন্দোলনে জনরোষে জৌলুস হারিয়ে এগুলো এখন ভাঙচুর আর আগুনের চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছে।
টিউলিপ’স টেরিটরির অবস্থান গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কানাইয়া এলাকায়। বাড়িটি শফিক আহমেদ সিদ্দিকির বলেই পরিচিত। যিনি শেখ রেহানার স্বামী এবং টিউলিপ সিদ্দিক, আজমেরি সিদ্দিক এবং ববি সিদ্দিকের বাবা।
৩০ বিঘার এই বাগানবাড়িতে বিশালাকার পুকুর, শান বাঁধানো ঘাট, অভিজাত ডুপ্লেক্সসহ রয়েছে একাধিক বাংলো। শীত মৌসুমে শেখ রেহানার পরিবার আসা-যাওয়া করতেন এখানে। ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আনাগোনা, যা এখন পরিত্যক্ত।
বাড়িটির একজন কর্মচারী বলেন, ‘আমরা এখানে চারজন আছি। এরমধ্যে একজন দারোয়ান। আর বাকিরা এখানে বাগানে কাজ করি। আমাদের বেতন প্রতি মাসে ওনারা দিয়ে দেন। আর আমরা প্রতি সপ্তাহে যা সবজি হয় তা ওনাদের কাছে পাঠিয়ে দেই। আগে সাহেব আসতেন। এখন রাস্তা খারাপের কারণে সাহেব আর আসেন না।’
গত ৫ আগস্টের পর বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালিয়ে টিউলিপ টেরিটোরিতে ভাঙচুর চালায়। স্থানীয়রা জানান, প্রথমে বিরোধপূর্ণ তিন বিঘা জমি দিয়ে বাগানবাড়ি শুরু হলেও ধীরে ধীরে বেড়ে এর আয়তন এখন ৩০ বিঘার ওপরে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘এটা একটা গ্যাঞ্জাইমা জমি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শফিক সাহেব কিনে নেন। এর পর আরো জমি কিনে বাগান বাড়ি করেন।’
বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের কপিতে ড. সফিক সিদ্দিকির নাম। এছাড়া শেখ রেহানা ও তার পরিবারের নামে মৌচাকে বাগান বাড়ি, ফাউকাল এলাকায় বাংলো এবং বাঙালগাছ এলাকায় তার দেবর রফিক সিদ্দিকীরও বাগানবাড়ি। গাজীপুরে রেহানা পরিবারের বিপুল সম্পদের উৎসের অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, এসব সম্পদের বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও রাজস্ব বিভাগ কাজ করছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন বলেন, ‘আগে রিপোর্ট পাই। আমরা যারা কাজ করছি এটা নিয়ে। রেভিনিউ সেকশন থেকে রিপোর্ট আসুক তখন এটা বলতে পারবো।’
জয়দেবপুর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান টিউলিপ’স টেরিটরির। স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব সম্পদ গড়েছে শেখ হাসিনা পরিবার।
আমারবাঙলা/জিজি