রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, দাবি পূরণে অর্থ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দাবি থাকতে পারে, কিন্তু ট্রেন বন্ধ রেখে যাত্রীদের জিম্মি করে আন্দোলন দুঃখজনক।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে সাংবাদিকদের তিনি এ সব কথা বলেন।
ফাওজুল কবির খান বলেন, এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের হাতে কিছু নেই; যা করার অর্থ মন্ত্রণালয়কে করতে হবে। আলোচনা চলছে, সমাধান হবে।
এ সময় রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান তিনি।
উপদেষ্টা আজ সকাল ১০টায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রেল সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরিফ, বিআরটিসি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামসহ আরো বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।
সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, রেলওয়ে স্টেশনের প্রতিটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে জনশূন্য। প্ল্যাটফর্মে থাকা ট্রেনগুলোর প্রতিটি দরজা লাগানো। আর রেলওয়ে স্টেশনের ভিআইপি রুমের সামনে অপেক্ষামান যাত্রীরা। এমনি পরিস্থিতিতে উপদেষ্টাকে পেয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন যাত্রীরা।
যাত্রীরা জানান, স্টেশনে আসা কেউই জানতেন না ট্রেন চলাচল বন্ধ। তাই কাউন্টারে এসেই পড়তে হয় বিপাকে। শীতে মধ্যে পরিবার নিয়ে আসা যাত্রীদের ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ১২টার পর থেকে সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। আর এতে বন্ধ রয়েছে সারা দেশের ট্রেন চলাচল।
এ অবস্থায় যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে রেলপথ মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ রুটসমূহে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করেছে।
মঙ্গলবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক জরুরি বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে আজ ২৮ জানুয়ারি হতে সারা দেশে রেল যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে রেলের বিকল্প হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ রেল রুটসমূহে যাত্রী পরিবহনের জন্য বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
জরুরি বার্তায় আরো বলা হয়, ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন হতে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীগণ তাদের ক্রয়কৃত রেল টিকিটে বিআরটিসি বাস সার্ভিসের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারবেন এবং এসব স্থান থেকে ঢাকাতে এই সার্ভিসের মাধ্যমে আসতে পারবেন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু থাকবে।
উল্লেখ্য, মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে অবসর ভাতা দেওয়াসহ বিভিন্ন দাবি পূরণ না হওয়ায় অবশেষে এ কর্মবিরতিতে গেলেন রানিং স্টাফরা। রানিং স্টাফের মধ্যে আছেন— ট্রেন চালক, গার্ড ও টিকিট চেকার পদধারীরা।
রানিং স্টাফরা জানিয়েছেন, রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির ফলে যেসব ট্রেন রাত ১২টার পর প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেসব ট্রেন ছেড়ে যায়নি।
আমারবাঙলা/এমআরইউ