সংগৃহীত
জাতীয়

কিশোরী ফেলানী হত্যার ১৪ বছর আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আলোচিত কিশোরী ফেলানী হত্যার ১৪ বছর আজ। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয় এই কিশোরী। সাড়ে চার ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে থাকে তার লাশ।

নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামের দরিদ্র নূরুল ইসলাম পেটের তাগিদে আর ১০ জনের মতো পাড়ি জমান ভারতে। পরিবার নিয়ে থাকতেন দেশটির বঙ্গাইগাঁও এলাকায়। নূরুল ইসলামের বড় মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয় বাংলাদেশে। বিয়ের উদ্দেশে কাঁটাতার টপকে নিজ দেশে আসতে হবে তাদের। ৭ জানুয়ারি ভোর ছয়টা। ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্তে মই বেয়ে কাঁটাতার টপকায় ফেলানীর বাবা। পরে কাঁটাতার টপকানোর চেষ্টা করে ফেলানী। এ সময় বিএসএফের গুলিতে বিদ্ধ হয় এই কিশোরী।

গুলিবিদ্ধ হয়ে আধাঘণ্টা ধরে ছটফট করে কাঁটাতারেই ঝুলন্ত অবস্থায় নির্মমভাবে মৃত্যু হয় ফেলানীর। সকাল পৌনে সাতটার থেকে নিথর দেহ কাঁটাতারেই ঝুলে থাকে সাড়ে চার ঘণ্টা। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়।

সীমান্তের কাঁটাতারে আটকে থাকা ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি বিশ্বজুড়ে হৈচৈ ফেলে দেয়। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বর্বরতা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ফেলানী হয়ে উঠে প্রতিবাদের প্রতীক। বিশ্ব মিডিয়ায় ফেলানী খাতুনের মরদেহ কাঁটাতারে ঝুলে থাকার ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় ভারত হত্যাকারী বিএসএফ সদস্যদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দেয়। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলেও প্রহসনের বিচার করা হয়।

ফেলানী হত্যার পর হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠন বিএসএফকে একটি ‘খুনি বাহিনী’ হিসেবে অভিহিত করে। বিশ্বজুড়ে প্রচার হয় প্রতিষ্ঠিত বিএসএফ একটি বর্বর বাহিনী। এই বাহিনী এর আগেও বহু নারী ও শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে একের পর এক সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ঘটলেও টুঁ শব্দটি করেনি শেখ হাসিনা সরকার। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর সীমান্ত হত্যা নিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভারতের কড়া সমালোচনা করলেও হত্যা বন্ধ হয়নি। ৫ আগস্টের পরও বিএসএফের হাতে সীমান্তে বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও মানবাধিকার সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে।

অন্যদিকে ফেলানীর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে পরিবারের অভাব এবং নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তার মা জাহানারা বেগম বলেন, ‘প্রত্যেক বছর মৃত্যুবার্ষিকী আসলে টিএনওর কাছে যাই, ডিসির কাছে যাই। কিন্তু দুই বছর থেকে কোনো সাহায্য পাই না। আমার বাচ্চাগুলাকে কষ্ট করে পড়াশোনা করাইছি। কিন্তু চাকরি নাই। সরকার যেন আমার ছেলের জন্য একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়। ছোট চাকরি হলেও যেন দেয়। তাহলে অন্তত জীবনের বাকি দিনগুলা আমরা ভালোভাবে বাঁচতে পারবো।’

দীর্ঘ সময়েও মেয়ে হত্যার বিচার না পেয়ে প্রতিনিয়ত হতাশা ও আক্ষেপ করে চলছেন বাবা-মা। তাদের প্রশ্ন, একটি প্রমাণিত হ্ত্যাকাণ্ডের বিচার পেতে আর কতদিন লাগবে? তারা উভয় দেশের সরকারের কাছে দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

পহেলা বৈশাখ আজ, স্বাগত বাংলা নববর্ষ ১৪৩২

আজ সোমবার পহেলা বৈশাখ; বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর প্রথম...

ট্রাম্পের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন বুধবার

যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিন দিনের সফরে বুধবার (১৬ এপ্রিল...

হামজার সব গল্পে এখন শুধু বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ

২০ দিন আগে বাংলাদেশের জার্সিতে খেলে গেছেন হামজা চৌধুরী। শেফিল্ড ইউনাইটেড নিয়ে...

কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার, ক্যাম্পাস খুলবে ২ মে

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট)...

এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্রদলের বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ

লক্ষ্মীপুরে তীব্র তাপপ্রবাহে এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদ...

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় আওয়ামী লীগের ১০ নেতা-কর্মী কারাগারে

রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষা...

ফেনীতে পিএফজির আন্ত:ধর্মীয় সংলাপ; ধর্মীয় সম্প্রীতি অটুট রাখার আহ্বান

‘বাংলাদেশ একটি অসম্প্রদায়িক দেশ। কিন্তু এখান...

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাত হাজার কৃষকের মাঝে ধান বীজ ও সার বিতরণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনার আওতায় সাত হাজার ক্ষ...

বগুড়ায় মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের চেষ্টা, ৪ লাখ টাকা লুট

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় মদন মোহন মন্দিরে ঢুকে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা