প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগার ঘটনায় সবগুলো ফটক বন্ধ রয়েছে।
এরই মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে আসতে শুরু করেছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাউকে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। ফলে সচিবালয়ের সামনে অপেক্ষা করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে আটটা থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সচিবালয়ে আসতে শুরু করেন।
সকাল ৯টা থেকে অফিস সময় শুরু হলেও আগুন লাগার ঘটনা শুনে অনেকে আগে থেকে আসতে শুরু করেন। তবে ভেতরে ঢুকতে না পেরে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান করছেন তারা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সৈয়দ সাইফুর রহমান সকাল আটটার দিকে সচিবালয়ে সামনে আসেন। ভেতরে ঢুকতে না পেরে তিনি বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচিবালয়ের সামনে দেখা গেছে।
সচিবালয়ের এক নম্বর গেটের সামনে দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ওপরের নির্দেশ কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।’
আগুন লাগার পর ভেতরে ঢোকেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব হামিদুর রহমান খান। ভেতর থেকে বের হয়ে তিনি বলেন, আগুন লাগার ঘটনায় দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
শিক্ষা ভবন থেকে সচিবালয়ের ঢোকার রাস্তাটি বন্ধ রয়েছে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, সবকিছু পরিষ্কার করার আগ পর্যন্ত ভেতরে কাউকে ঢুকতে হবে না।
কর্মকর্তারা প্রশ্ন তুলছেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জায়গায় কীভাবে আগুন লাগল। কেউ কেউ আগুন লাগার ঘটনাকে নাশকতা বলে উল্লেখ করছেন। কেউ কেউ বলছেন, আজ ছুটি ঘোষণা করে দেওয়ার জন্য।
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে লাগা আগুন ছয় ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার খুদে বার্তায় জানান, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, তারা আগুন লাগার খবর পায় বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে। রাত ১টা ৫৪ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছান ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য আটটি ইউনিট কাজ করে। পরে ইউনিটের সংখ্যা বাড়ানো হয়। সবশেষ ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিল।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহেদ কামাল জানান, আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট ও নয়তলা। সেখানে থাকা নথিপত্র পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে আগুন নেভানোর জন্য পাইপে পানির সংযোগ দিতে গিয়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় ফায়ার সার্ভিসের একজন সদস্য আহত হন। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
আমারবাঙলা/এমআরইউ