গাজীপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বন্ধ ঘোষণা করা ১৬ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। এ সময় মহানগরীর সারাবো-চক্রবর্তী এলাকায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়কে থাকা বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের চক্রবর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। পরে যৌথবাহিনীর সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর শ্রমিকরা দুপুরে সড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের বন্ধ হওয়া কারখানাগুলোয় প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। ১৫ ডিসেম্বর থেকে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানা (তৈরি পোশাক রফতানির ক্রয়াদেশ না থাকা এবং কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র খুলতে না পারায়) বন্ধ ঘোষণা করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ কর্তৃপক্ষ। কারখানাগুলো বন্ধ থাকলেও শ্রম আইন অনুযায়ী, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ঋণ দেবে জনতা ব্যাংক।
আন্দোলরত শ্রমিকরা বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে পর্যন্ত আমরা সময়মতো বেতন-ভাতা পেয়েছি। এখন কারখানায় কাজ নেই, কর্তৃপক্ষ মিথ্যা অজুহাতে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। কারখানা বন্ধ হওয়ায় হাজার হাজার শ্রমিক খুব কষ্টে দিন পার করছেন এবং সংসারের খরচ চালাতে পেরে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।’
শিল্পপুলিশ জানায়, শ্রমিকরা সকাল ৯টার দিকে জিরানী ও চক্রবর্তী এলাকায় আশপাশ থেকে ময়লা-আবর্জনা এনে সড়কে ফেলে আগুন জ্বালিয়ে এবং কাঠের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ওই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। এ সময় চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাত্রী ও চালকরা দুর্ভোগে পড়েন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, গাজীপুর শিল্পপুলিশ ও কাশিমপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের নিবৃত্ত করতে চেষ্টা করেন।
নাওজোড় হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মহাসড়ক অবরোধ করায় ওই সড়কের উভয় দিকে পাঁচ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। উত্তরবঙ্গের ঢাকামুখী দূরপাল্লার যানবাহনগুলো ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর ও কালিয়াকৈর-ধামরাই আঞ্চলিক সড়ক ব্যবহার করে চলাচল করেছে। এতে তারা কিছুটা দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
গাজীপুর শিল্পপুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবু তালেব বলেন, ‘শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন। পরে যৌথ বাহিনী তাদের সড়কে থেকে সরিয়ে দিলে দুপুর ২টা থেকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এখন সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’
আমার বাঙলা/ এসএ