ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার হিড়িক নিয়ে ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। তবে এ খবর সঠিক নয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ছয় বছরের সরকারি তথ্যমতে, বাংলাদেশে বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ভারতে প্রবেশ করার সময় আটকে পড়া অনিবন্ধিত মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়নি।
হিন্দুর প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত বিএসএফ এক হাজার ৩৯৩ বাংলাদেশিকে আটক করেছে। অন্যদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত এক হাজার ১৪৪ জনকে আটক করা হয়েছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরে হাজার হাজার সংখ্যালঘু সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর সব মিলিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে তিন হাজার ৯০৭ জনকে আটক করেছে বিএসএফ। এর মধ্যে ভারতীয় ও বাংলাদেশি উভয় রয়েছেন।
এর আগে ২০২৩ সালে মোট পাঁচ হাজার ৯৫ জনকে আটক করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে তিন হাজার ১৩৭ জন বাংলাদেশি ছিলেন।
এতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৮৭৩ ভারতীয় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়া সরকার পতনের পর ৫ আগস্ট থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত কোনো কাগজ ছাড়াই ৩৮৮ ভারতীয় বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন।
এদিকে, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের পর ভারতীয় মিডিয়া দাবি করে, বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্যাতিত হচ্ছে। যাদের অনেকে দেশ ছাড়ার চিন্তা করছেন। তবে এখন পর্যন্ত চিন্ময় ইস্যু নিয়ে এ ধরনের কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি বলে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দ্য হিন্দু।
অন্যদিকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সীমান্তে গণ-অভিবাসনের কোনো প্রবণতা দেখা যায়নি। বিএসএফের এক কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং বৈধ নথি ছাড়া কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর সীমান্তে নজরদারি আরো বাড়ানো হয়েছে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ