যুক্তরাজ্য সফরে থাকা জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘একাত্তরে আমরা কোনো ভুল করে থাকলে এবং তা যদি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়, আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাইব।’
বুধবার (২০ নভেম্বর) লন্ডনে পূর্ব লন্ডনের যুক্তরাজ্যে বাংলাভাষী সংবাদমাধ্যমে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
একাত্তরে স্বাধীনতার বিরোধিতা করে পাকিস্তানের পক্ষ নেয় জামায়াত। দলটির তৎকালীন নেতারা শান্তি কমিটিতে ছিলেন। জামায়াত নেতা-কর্মীরা ঘাতক রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীতেও ছিলেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের রায়েও তা বলা হয়েছে।
তবে জামায়াত বারবারই বলে আসছে, একাত্তরে দলটি অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষে থাকলেও নেতা-কর্মীদের কেউ বাঙালি নিধন এবং যুদ্ধাপরাধে জড়িত ছিল না। জামায়াতের ভূমিকা ছিল রাজনৈতিক। রাজনৈতিক ভূমিকার জন্য জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের যুদ্ধাপরাধের দায়ে অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। শফিকুর রহমান লন্ডনে একই দাবি করেন।
শহরটিতে রয়েছেন একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাওয়া চৌধুরী মাইনুদ্দিন। শফিকুর রহমান এই রায়ের নজির দিয়ে বলেন, যে বিচার হয়েছে তার পর্যবেক্ষণে এখানকার (যুক্তরাজ্য) বিচারপতিরা সেই রায়কে ‘জেনোসাইড অব জাস্টিস’ বলেছেন।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘১৫ বছর জামায়াতকে কার্যালয়ে খুলতে দেওয়া হয়নি। কথা বলতে দেওয়া হয়নি। সভা-সমাবেশ করতে দেয়নি। এমনকি শোভাযাত্রা পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি। আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জাতির কাছেও যেতে পারিনি।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শহীদদের জাতীয় বীর হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন জামায়াত আমির। তিনি বলেছেন, অভ্যুত্থানে দেশের সব শ্রেণির মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। প্রবাসীরা সাধ্য অনুযায়ী আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন।
জাতিগতভাবে অনৈক্য এবং দুর্নীতিকে দেশের জন্য জাতীয় লজ্জা বলে আখ্যা দেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য দুর্নীতি থেকে অনেকটা মুক্ত হওয়ায় মর্যাদাপূর্ণ স্থানে নিয়ে যেতে পেরেছে। কিন্তু আমরা পারিনি।
আমার বাঙলা/এনবি