রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের রাষ্ট্রপতির পদে থাকার কোনো বৈধতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। আজ শনিবার ‘সংবিধান অনুলিখন না সংশোধন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে নাগরিক ফোরাম। বৈঠকে মাহমুদুর রহমান বলেন, যেদিন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি বানিয়েছেন সেই দিনই সংবিধান নষ্ট হয়ে গেছে। একজন রাষ্ট্রপতি যখন বলে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন, আবার পরবর্তীতে তিনিই বলেছেন, পদত্যাগ পত্র তার কাছে নেই বা তিনি পাননি।
‘তিনি (রাষ্ট্রপতি) এত বড় মিথ্যা কথা বলে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন এবং শপথ ভঙ্গ করেছেন। ওই চেয়ারে তার থাকার আর কোন বৈধতা নেই- যোগ করেন তিনি।
বর্তমান সংবিধানকে একটি পরিবারের পক্ষের দলিল উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, এ সংবিধান শুধুমাত্র একটি পরিবারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই সংবিধানে বলা হয়েছে এই সংবিধান অপরিবর্তনীয়। এ সংবিধানে বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে। তার মানে বাংলাদেশে তার পিতা শেখ মুজিব যেমন ৭২ সালে বাকশাল কায়েম করেছিল, তেমনি তার কন্যাও এ সংবিধান অনুযায়ী অঘোষিত বাকশাল কায়েম করেছিল।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকায় চার বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়, সেটি দুইবারের বেশি নয়। আমাদের বাংলাদেশেও ২ টার্মের বেশি কোনো ব্যক্তি নির্বাচন করতে পারবেন না। সেজন্য বাংলাদেশেও প্রেসিডেন্সিয়াল বিষয়টি নিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশে পার্লামেন্ট অর্থাৎ ক্ষমতা বিভাজনের বিষয়টি এখন সময়ের দাবি যারা এক্সপার্ট আছেন তারা এগুলো স্টাডি করবেন, আমেরিকা কিভাবে চলে ফ্রান্স কিভাবে চলে সে বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসতে হবে।
মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, এখন বাংলাদেশে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করতে হবে। এটি রাজনৈতিক দলে নেতারা মানবেন কিনা সেটা জানি না। জিয়াউর রহমান বলেছিলেন সংবিধানে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস, আস্থা এবং ধর্মীয় বিশ্বাস থাকতে হবে। সেটা যদি না থাকে তাহলে কিসের সংবিধান? বাংলাদেশের ৯৫ ভাগ মানুষ মুসলিম, আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস যদি না থাকে সেই সংবিধান আমাদের নয়। অনন্তকাল প্রধানমন্ত্রী একজন ব্যক্তি থাকবেন এটি বাদ দিতে হবে। সংসদে ৬০০ জন এমপি সেটিও বাতিল করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে একটি বিপ্লবী সরকার হতে পারে, বা বিপ্লবী রাজনৈতিক সরকার হতে পারে। দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যের ভিত্তিতে এটা হতে পারে। তাহলে আগামীতে একটি চমৎকার সরকার ও বাংলাদেশ হবে। সেটি সব দলের ঐক্যের ভিত্তিতে হতে হবে, তা না হলে সম্ভব হবে না।
সাবেক বিচারপতি এএফএম আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাবেক সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার ও জেলা জজ ইফতেদার আহমেদ।
.
আমার বাঙলা/এসএইচ