নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জি-২০ সম্মেলনে উপমহাদেশে একমাত্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আর কেউ পাননি। সেখানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার ফলপ্রসূ আলোচনাও হয়েছে।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালেয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল (শনিবার ৯ সেপ্টেম্বর) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের মাধ্যমে এটিই স্পষ্ট হয়েছে তাদের এক দফার আন্দোলন যে অসম্ভব, এটা কঠিন কাজ, এটি তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, এক দফার আন্দোলন কঠিন সময়ে আসছে। এক দফার আন্দোলনের মধ্যে তো তারা বহু আগে থেকেই আছেন। একবার গরুর হাটে মারা গেছে, তারপর কদিন আগে; আগস্টের আগে জোর একদফার আন্দোলন শুরু করেছিলেন, সেটিও হালে পানি পায়নি। এখন তাদের হাট তো ভেঙে গেছে দেখা যাচ্ছে। তার বক্তব্যের মাধ্যমে এটি স্পষ্ট তাদের এক দফার আন্দোলন যে এটি আদায় করা সম্ভবপর নয়; এটি তার বক্তব্যের মাধ্যমেই স্পষ্ট। এটি কর্মীদেরকে চাঙা রাখার জন্য এসব কথাবার্তা বলছেন যোগ করেন তিনি।
জি ২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবস্থান সম্পর্কে ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশ জি-২০ এর সদস্য নয়। জি-২০ এর সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও এর বর্তমান প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভারত শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সেখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, উপমহাদেশের আর কোনো রাষ্ট্রনায়ককে ডাকা হয়নি। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সফল ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে, সেটির বিস্তারিত তারা ফিরে আসলে আপনারা জানতে পারবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কুশল বিনিময় হয়েছে, শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। আপনারা দেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিজেই প্রধানমন্ত্রী এবং তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে সেলফি তুলেছেন, সেখানে কুশল বিনিময়সহ ছোটোখাটো আলোচনাও হয়েছে জানান তথ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরব আমিরাত এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। অন্যান্য রাষ্ট্র নায়কদের সঙ্গেও তার সাক্ষাৎ হয়েছে সাইডলাইনে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর অত্যন্ত সফল হয়েছে। আজ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আসবেন। কদিন আগে রুশ পরররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন। এতেই প্রমাণিত হয় আমাদের সরকারের সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিশ্ব নেতাদের যে সুস্পর্ক, সরকারের সাথে সুসম্পর্ক সেটি এগুলোতেই প্রমাণিত হয়।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কয়েক দিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দুদিন ধরে নিরাপত্তা সংলাপ হয়েছে। এই ঘটনাপ্রবাহ যারা অনুধাবন করতে পারেন তারা সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেন যে বর্তমান সরকারের সাথে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কি সুসম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের যে বহুমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে সেটি আরও ঘনিষ্ট করার জন্য দুদেশ কাজ করছে।
সেলফি রাজনীতিতে কি বার্তা দিচ্ছে এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাইডলাইনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে কুশল বিনিময় হয়েছে কিছুটা আলোচনাও হয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় এবং ছবি তো অনেক কথা বলে। ছবি নিয়ে তো অনেক গবেষণাও হয়। আপনারা ছবি তালেন, সেই ছবি নিয়ে অনেক গবেষণা হয়, ছবি অনেক কথা বলে। গতকালের ছবির ভাষা আপনি সাংবাদিক হিসেবে নিশ্চিয়ই বুঝতে পারছেন এবং যারা বোদ্ধা ব্যক্তি তারাও বুঝতে পারছে যে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো, ঘনিষ্ট এবং এটি আগামী দিনে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হবে।
বিএনপি রিজভী বলেছেন, তাদের আন্দোলন ব্যর্থ হতে পারে না। আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন আপনারা ভারতে যাবেন নাকি অন্য কোথাও যাবেন সেটি ঠিক করেন- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কোথাও যাব না, আমরা এদেশে আছি, এদেশে থাকব।
রিজভীরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন পাকিস্তানে যাবেন নাকি এখানে থাকবেন। কারণ তাদের মহাসচিব বলেছেন, পাকিস্তানই ভালো ছিল। যদি পাকিস্তানই ভালো বলে তারা মনে করেন; তাহলে প্রয়োজনে তারা পাকিস্তান চলে যেতে পারেন বা অন্য কোথাও যেতে পারেন বলেন তিনি।
সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদের মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় নেয়ার ঘটনায় এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তিনি আশ্রয় পাননি, গিয়েছিলেন। অপেক্ষা করে গেইট থেকে চলে এসেছেন। আমার মনে হয়েছে এটি একটি নাটক।
সম্ভবত তিনি সপরিবারে মার্কিন ভিসা চাচ্ছেন, সেজন্য এটা নাটক বলে অনেকে বলেছেন। আলোচনায় থাকার জন্য নাটকটি সাজিয়েছেন বলে অনেকে বলছেন। বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ সরকারি কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত আছে, এটিতেই তো এটিই স্পষ্ট হয়। বিএনপি বলে দলীয় কর্মীদের আমরা বিভিন্ন পদে বসিয়েছি সেটি যে সঠিক নয় সেটি এই ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় বলেন তথ্যমন্ত্রী।
এবি/ওশিন