নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এবারের নির্বাচনে কেউ বলতে পারবে না রাতে ভোট হয়েছে, কারচুপি হয়েছে। অত্যন্ত, স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ হয়েছে। আইন করে স্বাধীন ইসি গঠন করায় এটা হয়েছে। নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করিনি, ইসিকে সহযোগিতা করেছি।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫’র পর মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৬ ডলার। মানুষ ছিল ক্ষুধার্ত, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত, স্বাস্থ্যসেবা পায়নি, রাস্তাঘাট হয়নি। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল ও এলিট শ্রেণি তৈরি করেছিল। একদিকে খুনি আরেকদিকে যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায়। এমন অবস্থায় দেশে ফিরে আসি।
ক্ষমতায় এসে দেশে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে যে কাজ করছি। তার শুভ ফল মানুষ পাচ্ছে। আমাদের সরকারে আসা অনেক কঠিন কাজ ছিল। বারবার ষড়যন্ত্র চক্রান্ত হয়েছে।
জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হরতাল, অবরোধ, জ্বালাও পোড়াও করা হয়েছে। মানুষকে ভোট না দিতে লিফলেট বিলি করা হয়েছে।
আমরা তাদের বাধা দেইনি। মানুষ সব উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজের ভোট নিজে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যখন সামরিক শাসকরা ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় আসতো তখন যারা কথা বলতো না। কিন্তু আজ যখন গণতন্ত্র ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি তখন গণতন্ত্র নিয়ে, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
তখন নির্বাচন ছিল দশটা হুন্ডা, গুন্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা। আজ সেই অবস্থা নেই। জনগণের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে মা-বাবা-ভাই কাউকে পাইনি। দেখেছিলাম শুধু সারি সারি কবর। সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম দেশের স্বাধীনতা কখনও ব্যর্থ হতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এ দেশ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশের মানুষই আমার পরিবার।
প্রত্যেক মানুষ জীবন উন্নত করার লক্ষ্য নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করেছি। মানুষ আমার পাশে থেকেছে। ২০০৮ এর নির্বাচনে মানুষ আওয়ামী লীগকে বেছে নিয়েছিল।
কারণ তারা জানতো আওয়ামী লীগ থাকলেই ভাগ্য পরিবর্তন হবে। বিএনপিকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছিল। বিএনপি গণতন্ত্রের পথে না এসে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ পর থেকে প্রতিটি নির্বাচনে মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ পরিচালনা করছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ না আসলে দেশ আর এগিয়ে যেতে পারতো না। আজ শপথ হয়েছে। এরপর পার্লামেন্ট পার্টির মিটিং হয়েছে।
সর্বসম্মতিক্রমে আমাকে সংসদ সদস্যরা নেতা হিসেবে নির্বাচিত করেছে। তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়ে সরকার গঠনের অনুমতি নিতে হবে। বঙ্গভবনে চিঠি হস্তান্তর করবো। এরপর সরকার গঠন করবো।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে এলো বলে এ দেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ ব্যাহত করতে পারবে না। অনেকের অনেক রকম স্বপ্ন আছে।
অনেকেই নির্বাচন বন্ধ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনে মানুষের ভোট দেয়া ঠেকাতে চেয়েছিল, তারপরও ৪১.৮ ভোট পড়েছে। এটা সোজা কথা না। কারণ এককভাবে আওয়ামী লীগ এবং সমমনারা নির্বাচন করেছে আর আরেকটি দল প্রতিহত করতে চেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব উপেক্ষা করে মানুষ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। নিজের ভোট নিজে দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ২০৪১ এর মধ্যে স্মার্ট উন্নত সম্বৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়বো। মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। জনগণের শক্তি বড় শক্তি সেটা আরেকবার প্রমাণ হয়েছে। আপনাদের সেবা করার সুযোগ পেয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।
এবি/এইচএন