নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ শারদীয় দুর্গোৎসবের তৃতীয় দিন মহাষ্টমী। এ দিন বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়েপূজার বিশেষ পর্ব ‘কুমারী পূজা’ অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (২২ অক্টোবর) রামকৃষ্ণ মিশনসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থান এবং সারা দেশে পূজামণ্ডপগুলোতে এ পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
দুর্গার কুমারী রূপের নাম ‘উমা’। হিন্দু শাস্ত্র মতে, কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা কল্পনা করে জগৎ মাতার উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদনই কুমারী পূজা। এ পূজার মাধ্যমে নারী পবিত্র ও মাতৃভাবাপন্ন হয়ে ওঠে এবং প্রত্যেকে নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, কুমারী কন্যার পূজা একাধারে সৃষ্টিকর্তার উপাসনা, মানবের বন্দনা এবং পৃথিবীতে নারীর মর্যাদার প্রতিষ্ঠা। এ পূজার অন্তর্নিহিত শিক্ষা হলো নারীর সম্মান, মানুষের সম্মান ও সৃষ্টিকর্তার আরাধনা।
আজ রাজধানীসহ সারা দেশে পূজামণ্ডপগুলোতে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পূজা-অর্চনা করবেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। গতকাল ছিল মহাসপ্তমী। এ দিন দেবীর ভক্তরা দিনভর পূজামণ্ডপগুলোতে আনন্দে মেতে থাকে।
মহাষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৬ টা ১০ মিনিটে এবং সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয় ‘কুমারী পূজা’। পূজার ৪ দিনের মধ্যে মহাষ্টমীর অঞ্জলি ও কুমারী পূজা সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। এ দিন কুমারী রূপে দুর্গার আরাধনা করবেন পুণ্যার্থীরা।
মহাষ্টমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা ১৬ টি উপকরণ দিয়ে শুরু হয়। এরপর অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাস-এই ৫ উপকরণে দেওয়া হয় কুমারী পূজা। অর্ঘ্য প্রদানের পর দেবীর গলায় পরানো হয় পুষ্প মালা। এ পূজা শেষে মহাষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি দেবেন ভক্তরা।
উল্লেখ্য, ১৯০১ সালে ধর্মপ্রচারক স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার বেলুড় মঠে কুমারী পূজার মাধ্যমে এর প্রচলন করেন। তখন থেকে প্রতি বছর দুর্গাপূজার অষ্টমীতে এ পূজা চলে আসছে। এ পূজার আগ পর্যন্ত কুমারীর পরিচয় গোপন রাখা হয়।
পূজার নির্বাচিত কুমারী পরবর্তী সময়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন আচার-অনুষ্ঠান করতে পারে। শাস্ত্র অনুযায়ী, সাধারণত ১-১৬ বছরের সুলক্ষণা কুমারীকে পূজা করা হয়।
আজ কুমারী পূজা ছাড়াও মহাষ্টমীতে রাজধানীর শাঁখারী বাজার, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা কালী মন্দিরসহ সারা দেশে বিভিন্ন মন্দিরে বেলা ১ থেকে দিনভর ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হবে। এছাড়া মন্দির ও মণ্ডপগুলোতেও পূজা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করা হবে।
এবি/এইচএন