অনেক বছর ধরে বিজ্ঞান কিংবা দর্শনের জগতে আলোচিত ও কৌতুহলী একটি প্রশ্ন— ‘আগে এসেছে কোনটি: মুরগি না ডিম?’ এই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি কখনো। বিজ্ঞানী ও দার্শনিকরা অনেকবার চেষ্টা করেছেন।
এ নিয়ে বিস্তর আলোচনাও হয়। ভাবনাও খেলে- ডিম তো মুরগী থেকেই আসে। আমার ডিম ফেটে মুরগীর ছানা বের হয়। তাহলে কোনটি আগে? অনেক গোলমেলে ও ভাবনার বিষয়। ভাবতে ভাবতে আপনার মাথা ঘুরে যাবে; কিন্তু উত্তর মিলবে না।
আসলে সৃষ্টিরহস্যের কোনো কূল-কিনারা নেই। তারপরও চেষ্টা চলে। এবার এর সমাধান খোঁজার চেষ্টা করেছেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তাদের গবেষণা বলছে, ডিমের মতো প্রাকৃতিক গঠন মুরগির বহু আগেই পৃথিবীতে ছিল।
গবেষণাটি চালানো হয়েছে এককোষী একটি প্রাচীন জীব ক্রোমোসফেরা পারকিনস্কি-কে নিয়ে; যা ২০১৭ সালে হাওয়াইয়ের সমুদ্রতল থেকে আবিষ্কৃত হয়েছিল। গবেষকেরা বলছেন, ১০০ কোটি বছরের বেশি সময় ধরে পৃথিবীতে থাকা এই জীব এমন কিছু কোষ তৈরি করতে পারে; যা ডিম বা ভ্রূণের মতো কাজ করে। এ থেকে বোঝা যায়, প্রকৃতিতে ডিম তৈরির পদ্ধতি প্রাণীর উদ্ভবের আগে থেকেই ছিল।
গবেষণাপত্রের সহলেখক ওমায়া দুদিন বলেন, যদিও এটি এককোষী জীব, তবে এটি প্রাণীর মতো গঠন তৈরিতে সক্ষম। আরেক গবেষক মারিন অলিভেটার মতে, ‘এই আবিষ্কার পৃথিবীর প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের ধারণা সমৃদ্ধ করছে। গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে, প্রাচীন পৃথিবীতে এমন ধরনের ডিম ধীরে ধীরে গঠিত হতে শুরু করে এবং পরবর্তী সময়ে মানুষ খাদ্যের জন্য নিয়মিত ডিম উৎপাদনকারী মুরগি পালন করতে শুরু করে।’
আরেক গবেষণা থেকে জানা যায়, মুরগির ডিমের মতো শক্ত খোলসবিশিষ্ট ডিম প্রায় ৩০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে ছিল। খাবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস ডিমের চাহিদা পূরণে হাজার বছর আগে মানুষ মুরগিকে ঘরে পালন করা শুরু করে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ