শেখ হাসিনা; বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেকে গাঢাকা দেন। নানা অনিয়ম, হামলা এমনকি হত্যার অভিযোগে একের পর এক মামলা হচ্ছে দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। অনেকে গ্রেপ্তার হচ্ছেন। অনেকের ওপর হামলাও হচ্ছে। এক কথায় কোণঠাসা আওয়ামী লীগ।
এর মাঝে ভারত থেকে নানা সময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন শেখ হাসিনা। এসব ফোনালাপের কিছু কিছু ক্লিপ ফাঁসও হয়ে যাচ্ছে। ফাঁস হওয়া এসব কথামালায় হুমকিও দেওয়া হয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) আবারো শেখ হাসিনার কণ্ঠে নতুন একটি ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই ফোনালাপে শেখ হাসিনার কণ্ঠের মতো একজনকে দলীয় নেতাকর্মীদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি হাতে মিছিল বের করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
অডিওতে নূর হোসেন দিবসে নেতাকর্মীদের মিছিল করতে বলা হয়েছে। অডিওতে বলা হয়, মিছিলে তাদের হাতে ট্রাম্পের ছবি থাকবে। এতে যদি কেউ যদি বাধা দেয়, কোনো হামলা করে। তাহলে তো সেটি ট্রাম্পের ছবিতে হামলা হবে। সেই ছবি তোলার জন্য আলাদা লোক থাকবে। তখন সেই হামলার ছবি আমি ট্রাম্পের কাছে পাঠাব। ট্রাম্পের সঙ্গে আমার ভালো যোগাযোগ আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাধা দেওয়ার ছবি ট্রাম্পকে পাঠিয়ে বলা যাবে দেখো ইউনূস সরকার কী করছে। সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার তো ইউনূস। ২৫০ জন এসআইয়ের (ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর) চাকরি দিল না, তাদের বের করে দিল।
ফোনে শেখ হাসিনাকে আরো বলতে শুনা যায়, মিছিলে ভালো লোক জমায়েত যেন হয়, সে ব্যবস্থা করবা। মিছিলে নূর হোসেনের ছবি থাকবে। ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লেখা প্লেকার্ড রাখবা। আমাদের অনেক ঘরবাড়ি, দোকান-পাট পোড়ানো হয়েছে। এর তথ্য বের করতে হবে। আমরা সব হিসাব কড়ায়-গণ্ডায় করে নেবো।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার দ্বিতীয় দিনের মাথায় শেখ হাসিনার এ অডিও ফাঁস হলো। এবার অডিওর অপর প্রান্তে কে ছিল তা অবশ্য এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অবশ্য এ অডিও কলের বিষয়ে ফ্যাক্ট রিউমার স্ক্যানার এখনো কিছু জানায়নি।
এক মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের সেই আডিও কলটির কিছু অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-
শেখ হাসিনা : ওরা যদি হামলা করে ট্রাম্পের ছবির ওপরতো হামলা করবে, ওই ছবি আবার ধরে রাখবা। তখন আমি এটা ট্রাম্পের কাছে এটা পাঠাই দিব ,আমার সাথেতো ট্রাম্পের লিংক আছে যোগাযোগ আছে।
অপর ব্যক্তি: আমরাতো ব্যানার করছি, আপনার ছবি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি দিয়ে তাহলে এটা আবার নতুন করে করি।
শেখ হাসিনা: হাতে শুধুমাত্র একটা স্টিকয়ে ট্রাম্পের ছবি থাকবে।
অপর ব্যক্তি : জ্বি আপু হয়ে যাবে। আমরা হাতে করে মিছিল করি যেটা দিয়ে আপনার ছবি থাকে বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকে।
শেখ হাসিনা: যদি বাঁধা দেয় তাহলে ট্রাম্পের ছবির ওপর যদি কোনো কিছু করে তবে ওই ছবি আগে তুলে রাখার ব্যাবস্থা করবে।
অপর ব্যক্তি: জ্বি
শেখ হাসিনা: তখন এটা ট্রাম্পকে পাঠাই দেওয়া যাবে কি করছে দেখ?
অপর ব্যক্তি : জ্বি আফা জ্বি।
শেখ হাসিনা: সামনে পাশে সবার হাতে একটা একটা ট্রাম্পের ছবি থাকবে।
অপর ব্যক্তি: জ্বি আফা জ্বি।
শেখ হাসিনা: আয় বাধা দে, যখন মিছিলে বাঁধা দিবে তার জন্য আলাদা লোক রাখবে ছবি উঠানোর জন্য।
অপর ব্যক্তি: জ্বি আফা ক্যামেরা আলাদা করে মিছিল করব। ক্যামেরা আলাদা করে সেট করে রাখলাম।
শেখ হাসিনা: হ্যাঁ।
শেখ হাসিনা: তাহলে সে ছবিগুলা আমরা পাঠাই দিব। ঠিক আছে।
অপর ব্যক্তি: ঠিক আছে আফা। জ্বি ইনশাল্লাহ।
শেখ হাসিনা: নুর হোসেনের ছবিটা ছাড়বে গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক।
অপর ব্যক্তি: জ্বি আফা।
আমারবাঙলা/এমআরইউ