সংগৃহীত
প্রবাস

শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয়, ক্ষেপলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী

আমার বাঙলা ডেস্ক

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত চলে যান। এরপর থেকে তিনি ওখানেই অবস্থান করছেন। তার কূটনৈতিক পার্সপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। ফলে তিনি নির্দিষ্ট সময় পর দেশটিতে কোন সুবিধায় আছেন তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এর মাঝে তিনি অনেক দেশে ভিসার আবেদন করেছেন এবং সেই আবেদন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে- এমন খবরও বেরিয়েছে।

একটি খবর ছিল এমন- তিনি আরব আমিরাতের আজমানে আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। সব মিলে মুখরোচক এক কথামালা যেন শেখ হাসিনার গতিবিধি। কিছুদিন আগে ভারতের দ্য প্রিন্ট জানিয়েছে দিল্লীর লুটিয়েনস বাংলোয় খুবই সুরক্ষিত এবং ভালো সুবিধাদি নিয়ে বাস করছেন শেখ হাসিনা।

এবার ভারতের এক নেতা শেখ হাসিনার দেশটিতে অবস্থানের কারণে ক্ষেপেছেন। তার ওই দেশে অবস্থান করা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ওই দেশের রাজনীতিও। ওই নেতা বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন।

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আঙুল তুলে প্রশ্ন করেছেন, কীসের ভিত্তিতে শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয়ে দিয়েছে মোদি সরকার? সোরেন আরো উল্লেখ করেছেন, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোর মাধ্যমেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে থাকে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে মন্তব্যের জবাবে সোরেন এসব কথা বলেন। রবিবার (৩ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঝাড়খণ্ডে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপির ইশতেহার প্রকাশ এবং অনুপ্রবেশ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিতর্কিত মন্তব্যের জবাবে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সোরেন উল্লেখ করেছেন, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ ঘটে।

একইসঙ্গে তিনি এই প্রশ্নও তুলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার কীসের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দিয়েছে।

রবিবার গাড়োয়া বিধানসভা আসনের রাঙ্কায় একটি নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বলেন, আমি জানতে চাই, বাংলাদেশের সঙ্গে বিজেপির কোনো ধরনের অভ্যন্তরীণ কোনো বোঝাপড়া আছে কিনা?

তিনি বলেন, দয়া করে আমাদের বলুন- কীসের ভিত্তিতে আপনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ভারতে প্রবেশ করার এবং আশ্রয় চাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীরা বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোর মাধ্যমেই ভারতে প্রবেশ করে। তারা নিজেরাই এটি বলছে।

রবিবার বিজেপির ইশতেহার প্রকাশের সময় অমিত শাহ ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আপনি অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিয়েছেন। আপনি অনুপ্রবেশকারীদের আপনার ভোটব্যাংক বানিয়েছেন। আজ আমি ঝাড়খণ্ডের জনগণকে জানাতে চাই, তুষ্টির রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে বিজেপি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়ে দেবে এবং ঝাড়খণ্ডকে প্রথম থেকে পুনর্গঠন করবে।

এর আগে ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করা হবে বলে গত সেপ্টেম্বরে হুমকি দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একইসঙ্গে তিনি রাজ্যের সাঁওতাল পরগনায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের জমি দখল করার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের নীরবতা নিয়েও সেসময় প্রশ্ন তোলেন।

তবে নির্বাচনের আগে বিজেপি হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝে বিভাজনের বীজ বপন করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও উত্তেজনা তৈরি করছে বলে সেসময় অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। বিশেষ করে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

এ ছাড়া ঝাড়খণ্ডে বসবাসরত মুসলিমদের ১১ শতাংশই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বলে কয়েকদিন আগে দাবি করেন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতাসীন বিজেপির এমপি নিশিকান্ত দুবে। সেসময় তিনি বলেন, ১৯৫১ সালে ভারতের মোট জনসংখ্যার নয় শতাংশ ছিল মুসলিম। এখন এই হার বেড়ে পৌঁছেছে ২৪ শতাংশে। ভারতজুড়ে এই সময়সীমার মধ্যে মুসলিমদের হার বেড়েছে চার শতাংশ কিন্তু আমার সাঁওতাল পরগনায় এ হার বেড়ে বর্তমানে ১৫ শতাংশ। এই ১৫ শতাংশের মধ্যে ১১ শতাংশই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী এবং ঝাড়খণ্ডের রাজ্য সরকার তাদের গ্রহণ করেছে।

উল্লেখ্য, চলতি নভেম্বর মাসেই ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে জোরকদমে কাজ করছে বিজেপি। ওই রাজ্যে বিজেপি সরকার গঠনের ডাক দিয়েছেন অমিত শাহ। মূলত এই নির্বাচনকে সামনে রেখেই বিজেপির প্রচারণার অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে অনুপ্রবেশ সমস্যা। প্রসঙ্গত, আগামী ১৩ এবং ২০ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডের ৮১টি আসনে দু’দফায় বিধানসভা ভোট হবে। ভোটের ফলাফল জানা যাবে ২৩ নভেম্বর। ২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটে প্রায় সাড়ে ৩৫ শতাংশ ভোট পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-কংগ্রেস-আরজেডির ‘মহাগঠবন্ধন’।

এবারো তিন দল একসঙ্গে লড়ছে। সঙ্গে তারা পেয়েছে বাম দল সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-কে। ক্ষমতাসীন জোটের সঙ্গে মূল লড়াই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএর। গত বার আলাদা লড়লেও বিজেপি এবার সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী সুদেশ মাহাতোর ‘অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ (আজসু)-এর সঙ্গে জোট বেঁধেছে। সঙ্গে রয়েছে বিহারের নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসোয়ানের দল এলজেপি (রামবিলাস)।

আমার বাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জয়ে ফিরল আর্জেন্টিনা

শেষ মুহূর্তে লাউতারো মার্টিনেজের দুর্দান্ত এক গোলে...

জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে শিল্পকলায় ভাস্কর্য কর্মশালা: পরিচালনায় ভাস্কর পাপিয়া

রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের তত্ত্...

এ আর রহমানের ২৯ বছরের সংসার ভাঙছে

দীর্ঘ ২৯ বছরের সংসার ভাঙছে খ্যাতিমান সঙ্গীতজ্ঞ, অস...

ঝিনাইদহে সুদের টাকা না পেয়ে বাড়ি দখলের অভিযোগ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সুদের টাকা না পেয়ে এক দিনমজুরে...

গাজায় অর্ধশত ফিলিস্তিনি নিহত, প্রাণহানি ৪৪ হাজার ছুঁই ছুঁই

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরো অর্ধ...

মহাখালীতে অটোরিকশা চালক ও সেনাবাহিনীর মুখোমুখি অবস্থান

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সকাল থেকে বিক্ষোভ করে যান চল...

আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ-প্রতারণার অভিযোগ আনলো যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ভারতীয় ধনী আদানি গ্রুপের চেয়া...

‘ট্রাম্প’ কি শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন!

শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কি-না, এ...

মোহিনীর মোহেই কি সংসার ভাঙলেন রহমান?

ভারতের অস্কারজয়ী সংগীত শিল্পী-সুরকার এ আর রহমান ও সায়রা বানু তাদের দীর্ঘ ২৯ ব...

নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ: সরাসরি খেলতে বাংলাদেশের সামনে কঠিন সমীকরণ

আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠিত হবে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ।...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা