সম্প্রতি গণমাধ্যমে ‘পাসপোর্ট পেতে বিলম্বের কারণ জানতে চেয়ে অপদস্থ প্রবাসী’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। খবরে বলা হয়েছে- নিজের নতুন পাসপোর্ট পেতে দেরী হওয়ার কারণ জানতে চাওয়ায় তাকে অপদস্থ করেছেন বাংলাদেশ হাইকমিশন কুয়ালালামপুরের কাউন্সেলর মিয়া মোহাম্মদ কেয়ামউদ্দিন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায় উক্ত কর্মকর্তা একজন প্রবাসীর কলার ধরে রেখেছেন।
এই বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে এই প্রতিনিধি জানতে পারেন, কাউন্সেলর মিয়া মোহাম্মদ কেয়ামউদ্দিনের কাছে যিনি অপদস্থ হয়েছেন, তিনি সাধারণ প্রবাসী নন। তিনি একজন চিহ্নিত দালাল। তার নাম আব্দুল কাদির। বাড়ি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার কামারকান্দি গ্রামে।
আব্দুল কাদির দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে বসবাস করতেন। গত ১৮ মে ২০২৩ তারিখে পেনাংয়ে প্রবাসীদের সুাবিধার্থে হাইকমিশনের মোবাইল টিম সেখানে সার্ভিস দিতে যায়। এবং ওইদিন দুপুর ১২টার দিকে গিয়াসউদ্দিন নামের একজন প্রবাসীর অভিযোগে তাকে আটক করা হয়।
দৈনিক আমার বাংলা’র পক্ষ থেকে গিয়াসউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, “আব্দুল কাদির আমার কাছ থেকে ৬শ’ ৫০ রিঙ্গিত নিয়ে জরুরী পাসপোর্ট বিানিয়ে দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু টাকা নিলেও আমাকে পাসপোর্ট দিচ্ছিল না। প্রায় চারমাস সময় পেরিয়ে গিয়েছে পাসপোর্ট হাতে পেতে। এ বিষয়ে জানতে একদিন আমি হাইকমিশনের মোবাইল টিমের কাছে যাই। অভিযোগ জানালে স্যার (মিয়া মোহাম্মদ কেয়ামউদ্দিন) জানতে চান- আপনি কাকে টাকা দিয়েছিলেন। তখন আমি দূরে দাঁড়িয়ে থাকা আব্দুল কাদিরকে দেখিয়ে দেই। স্যার তখন গিয়ে তার কলার ধরেন।”
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আব্দুল কাদির তখন বিপদ টের পেয়ে দৌড় দিতে চেয়েছিলেন। সেটা টের পেয়েই মিয়া মোহাম্মদ কেয়ামউদ্দিন তার কলার টেনে ধরেন।
পরবর্তীতে আব্দুল কাদিরের ব্যাগ তল্লাশি করে অনেক গুলো ফাইল পাওয়া যায়। যেই ফাইলগুলো ওই বছর জানুয়ারি মাসে ড্রাফট করা এবং ৫/৬ মাস অতিবাহিত হলেও এম্বাসিতে জমা না দিয়ে তার কাছে রেখে দেয়। তার কাছে ডায়েরি পাওয়া যায়। যেখানে হিসাবনিকাশ পাওয়া যায় কার কাছে কত টাকা লেনদেন করেছে। সেসব কাগজ-পত্র এবং ডায়েরি পর্যালোচনা করে বোঝা যায়, আব্দুল কাদির একজন পেশাদার দালাল। এসব দালালের কারণেই প্রবাসীদের হয়রানি বাড়ে। খরচ বাড়ে।
শেষে তার নামে পুলিশ রিপোর্টিংও করেন মিয়া মোহাম্মদ কেয়ামউদ্দিন।
প্রবাসীর কলার ধরা নিয়ে জানতে মিয়া মোহাম্মদ কেয়ামউদ্দিন বলেন, “প্রবাসীর অভিযোগকে গুরুত্ব দেয়া আমার দায়িত্ব। কোনো দালাল যদি অনৈতিকভাবে প্রবাসীদের কাছ থেকে পয়সা খসিয়ে নেয় এবং হয়রানি করে, তাহলে তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব আমার রয়েছে। ওইদিন প্রবাসীর অভিযোগ পেয়েই আমি দালাল আব্দুল কাদিরকে ধরি। তাকে পুলিশ রিপোর্ট করি। এবং পুরো ব্যাপারটাই তাৎক্ষণিকভাবে ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে অবহিত করেছি।”
আমার বাঙলা/ এসএ