ছবি: সংগৃহীত
প্রবাস
বৈধ কাগজপত্র নেই

লেবাননে মারা যাওয়া নিজামের লাশ দেশে ফেরেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঋণ করে স্বপ্ন পূরণের আশায় এক যুগ আগে লেবাননে গিয়েছিলেন মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন (৩২)। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তার আর বাংলাদেশে ফেরা হয়নি। এরই মধ্যে অসুস্থ মা ও এক বোন মারা গেছেন।

শনিবার (২ নভেম্বর) স্থানীয় সময় বেলা ৩টা ২৩ মিনিটে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিজাম নিহত হন।

নিহত নিজাম উদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত মো. আবদুল কুদ্দুসের ছেলে। তার মায়ের নাম আনোয়ারা বেগম। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে নিজাম সবার ছোট। কর্মস্থলে যাওয়ার পথে নিজাম হাজমিয়া এলাকায় কফি শপে যান। এ সময় বিমান হামলায় তিনি মারা যান।

বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, নিজামের স্ত্রী লেবাননেই আছেন। তার সঙ্গে দূতাবাস যোগাযোগ রাখছে। যুদ্ধের পরিস্থিতিতে ফ্লাইট না থাকার কারণে নিজামের মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।

নিজামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এয়ার ভাইস মার্শাল জাভেদ তানভীর খান। তিনি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। পাশাপাশি শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

নিজামের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বারবার মূর্ছা যান তার বোন পারুল বেগম। বিলাপ করতে করতে পারুল বলেন, গত শুক্রবার আমার ভাইয়ের লগে কথা হইছিল। ভাই বলছিল, আমার কোনো কাগজপত্র হয় নাই, বাড়িতে ক্যামনে আইমু। আমার জন্য কোনো চিন্তাভাবনা কইরো না। এহন আমার ভাইরে কই পামু, আমার ভাইরে আইন্না দেও।
স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১২ বছর আগে ঋণের টাকায় লেবাননে যান নিজাম। কিন্তু এরপর বৈধ কাগজপত্র করতে না পারায় তার আর দেশে ফেরা হয়নি। নিজামের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর থেকে তার ভাই, বোন, চাচিসহ স্বজনেরা আহাজারি করছেন। গ্রামজুড়ে চলছে মাতম।

নিজামের চাচি খাড়েরা ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য রেহেনা বেগম বলেন, ‘আমার ভাতিজা অনেক ভালো মানুষ ছিল। তাকে অনেক দিন ধরে দেশের বাড়িতে আনার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু পারছিলাম না। কারণ, সে লেবাননে অবৈধ ছিল। এ জন্য সে দেশে আসতে পারছিল না। বোমা হামলায় সে মারা গেছে। আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাই, তার লাশ যেন দেশে আনার ব্যবস্থা করা হয়।’

নিজামের বড় ভাই জালাল উদ্দিন বলেন, বাবা ও মা অনেক আগেই মারা গেছেন। বড় বোন জায়েরা বেগমের স্বামী জয়নাল মিয়া ১২ বছর আগে তার ছোট ভাইকে লেবাননে পাঠান। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় লেবাননে যান নিজাম। কিন্তু জীবিত অবস্থায় তার দেশে ফেরা হলো না।

জালাল উদ্দিন বলেন, ‘ভাইয়ের লাশ দেশে আনতে চাই। ভাইকে আমরা শেষবারের মতো দেখতে চাই। অনেক দিন ধরে ভাইকে দেখি না। শেষবারের মতো দেখতে চাই। এ জন্য সরকারের সহায়তা দরকার। দেশে গ্রামের কবরস্থানে ভাইয়ের লাশ দাফনের ব্যবস্থা করে দিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে অনুরোধ জানাই।’

খাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন বলেন, নিজাম উদ্দিনের এমন মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়। তার মৃত্যুতে এলাকার লোকজন শোকাহত।

আমার বাঙলা/ এসএ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জয়ে ফিরল আর্জেন্টিনা

শেষ মুহূর্তে লাউতারো মার্টিনেজের দুর্দান্ত এক গোলে...

জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে শিল্পকলায় ভাস্কর্য কর্মশালা: পরিচালনায় ভাস্কর পাপিয়া

রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের তত্ত্...

এ আর রহমানের ২৯ বছরের সংসার ভাঙছে

দীর্ঘ ২৯ বছরের সংসার ভাঙছে খ্যাতিমান সঙ্গীতজ্ঞ, অস...

ঝিনাইদহে সুদের টাকা না পেয়ে বাড়ি দখলের অভিযোগ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সুদের টাকা না পেয়ে এক দিনমজুরে...

গাজায় অর্ধশত ফিলিস্তিনি নিহত, প্রাণহানি ৪৪ হাজার ছুঁই ছুঁই

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরো অর্ধ...

জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান

শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ...

গঠিত হলো নতুন নির্বাচন কমিশন

পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। অব...

ঢাকায় আসবেন জো বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি

চার দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্...

মহাখালীতে অটোরিকশা চালক ও সেনাবাহিনীর মুখোমুখি অবস্থান

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সকাল থেকে বিক্ষোভ করে যান চল...

আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ-প্রতারণার অভিযোগ আনলো যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ভারতীয় ধনী আদানি গ্রুপের চেয়া...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা