এস আর শফিক স্বপন, মাদারীপুর: প্রেমের টানে ইন্দোনেশীয় তরুণী এখন মাদারীপুরের শিবচরে। জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় রীতিতে বিয়েও করেছেন তিনি।
এদিকে ভিনদেশী কনেকে একনজর দেখেতে বরের বাড়ীতে ছুটে আসছে উৎসুক মানুষ। আধো বাংলা ভাষায় কথা ও আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে নিরহংকার সহজ সরল আচরণে পরিবারের সবার মন জয় করেছেন এই নববধূ।
ইন্দোনেশিয়ার জেমবার জেলার আমবুলু শহরের ব্যবসায়ী তামামের মেয়ে ৩০ বছর বয়সের তরুণী ইফহা ২০১৯ সালে কাজের সুবাদে সিঙ্গাপুরে যান।
অপরদিকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বড় কেশবপুর গ্রামের কৃষক লাল মিয়া মাদবরের ছেলে শামীম মাদর ২০১৮ সালে কাজের সুবাদেই সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান। সেখান থেকেই এই তরুণ-তরুণীর টিকটকের মাধ্যমে প্রথমে পরিচয় ঘটে।
পরিচয় থেকে গড়ে ওঠে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। দীর্ঘ ২ বছর নিজেদের বোঝাপড়া শেষে। অবশেষে সেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ায় বিয়েতে। সেই বিয়েকে ঘিরে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বরের গ্রামের বাড়ীতে ছিল জমকালো সব আয়োজন।
তবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও উৎসুক জনতার ভীড় কমেনি বরের বাড়ীতে। বিদেশি কনেকে দেখতে প্রতিদিনই ছুটে আসছে দুর দুরান্ত থেকে মানুষ। বিদেশী কনের নিরহংকার সহজ সরল আচরণে মুগ্ধ এলাকাবাসীসহ বরের পরিবার।
বরের বাবা-লাল মিয়া মাদবর প্রথমে বিদেশী কনেকে ছেলে বৌ হিসাবে না মানতে চাইলেও আধো বাংলা বলা, আকার ইঙ্গিতে কথা বুঝিয়ে দেয়া ভিনদেশী এই তরুণীর নিরহংকার সহজ সরল আচরণে এখন খুশি বরের পিতা-মাতা।
ইন্দোনেশীয় তরুণী ইফহা বিয়ের আগেই প্রতিশ্রুতি দেন, স্বামী যেখানে রাখবেন থাকবেন বিদেশী এই কনে। তবে বিদেশী হলেও বাঙ্গালী মেয়েদের মতই বাড়ীর খুঁটিনাটি বাড়ী কাজ করতে পছন্দ করে তিনি। পুরোপুরি বাংলা ভাষা না জানলেও ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণে সবাইকে হাসি-আনন্দে মাতিয়ে রাখেন বিদেশিনী।
কনের বাবা-মাও প্রথমে বাংলাদেশী যুবককে বিয়ের করার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করলেও বর-কনে দুজনেই তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়। পরে দুজন অর্থ উপার্জন করে শেষ বয়সে বাংলাদেশে স্ত্রী নিয়ে বাসবাস করার ইচ্ছে বর শামীম মাদবরের।
প্রেমিকার ইফহার বাঙ্গালী বধু সাঁজার ইচ্ছার পূরণ করতে গত ৩০ জানুয়ারি সিঙ্গাপুর থেকে বাড়ি আসেন শামীম মাদবর। বিয়ের সকল কিছু প্রস্তুত করার পর ইফহাকে জানালে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসেন ইফহা।
পরে শুক্রবার রাতে জাঁকজমকভাবে বরের বাড়ীতে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। বিয়েতে অংশ নেয় গ্রামের প্রায় হাজার খানেক মানুষ।
এবি/এইচএন