এস আর শফিক স্বপন, মাদারীপুর: পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে পাড়ি দেয়া মাদারীপুরের ৫ যুবকের নিধর দেহ পরে আছে ইতালিতে। সহায় সম্বল বিক্রি করে ইতালি পাঠানো সন্তানের মৃত্যুর সংবাদে দিশেহারা পরিবারগুলো।
সন্তানের লাশ দেখার আকুতি স্বজনদের। ইতালি যাবে, অর্থ উপার্জন করবে, পরিবারকে একটি স্বচ্ছল জীবন দিবে এই স্বপ্নে বিভোর মাদারীপুরের অনেক যুবক। ইতালি যাওয়ার জন্য পাগল হয়ে যায় তারা।
এই সুযোগ নেয় স্থানীয় দালাল চক্র। বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও অবৈধভাবে লিবিয়া দিয়ে সমুদ্রপথে তাদের ইতালি পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
এই ফাঁদে পা দিয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মাদারীপুর রাজৈর উপজেলার ৫ যুবক তিউনিসিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে নৌদুর্ঘটনায় প্রাণ হারায়। এক দিকে সন্তান হারানোর বেদনা, অন্যদিকে সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব পরিবারগুলো যেন বাকরুদ্ধ। মা ও বোনের আকুতি বলে দেয়, কি হারিয়েছে তারা।
নিহতরা হলেন- রাজৈর উপজেলার সেনদিয়া গ্রামের সুনিল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগী, একই উপজেলার কদমবাড়ি গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস, উপজেলার সরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে মামুন শেখ, কোদালিয়া বাজিদপুর গ্রামের মিজানুর কাজীর ছেলে সজীব কাজী ও কেশরদিয়া গ্রামের কায়সার।
নিহত মামুন শেখের মা ও বোন বলেন, দালালদের প্রতারণার কারণে তিউনিসিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে আমাদের সন্তার ও ভাই নিহত হয়েছে। ছোট বোটে অতিরিক্ত লোক নেয়ায় ইঞ্জিন রুমে যাদের রেখেছে তারাই মারা গেছে দাবি করছেন মামুনের ভাই।
এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবরে নিহত সজল বৈরাগীর নিঃস্ব বাবা যেন বাকরুদ্ধ। অবৈধ পথে বিদেশে না পাঠানোর অনুরোধ নিহতের স্বজনদের। সেই সাথে যারা অবৈধভাবে বিদেশে লোক পাঠায়, তাদের শাস্তি দাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে রাজৈর থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদারের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। মাদারীপুর প্রশাসন দ্রুত দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে, এমনটাই আশা করছে এলাকাবাসী।
এবি/এইচএন