প্রবাস ডেস্ক: অবৈধভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মাদারীপুরের দুই যুবক মারা গেছেন। তারা উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের বাসিন্দা।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওই দুই যুবকের মৃত্যুর খবর পেয়ে পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
নিহতরা হলেন পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ (২০) ও একই ইউনিয়নের সেনদিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগী (২৫)।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ জানুয়ারি দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন মামুন শেখ ও সজল বৈরাগী। লিবিয়ায় পৌঁছে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে তারা ইতালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ৩২ জন ধারণক্ষমতার নৌকায় ৫২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিয়ে রওয়ানা দেয় নৌকাটি।
পথে তিউনিসিয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকার তলা ফেটে যায়। এতে মামুন ও সজলসহ বেশ কয়েকজন মারা যান। পরে খবর পেয়ে বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে দেশটির কোস্টগার্ড।
নিহত মামুন শেখের বড় ভাই সজিব শেখ বলেন, মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউনিয়নের সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে মোশারফ কাজী। তিনি প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৩-১৫ লাখ টাকা নেন। পরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় লিবিয়া থেকে ইতালির উদ্দেশ্যে পাঠালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি সরকারিভাবে মরদেহ দুটি দেশে ফিরিয়ে আনা এবং দালাল মোশারফ কাজীর শাস্তির দাবি করেন।
নিহত সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী বলেন, নৌকাডুবিতে প্রাণে বেঁচে যাওয়া একজন ফোন করে মামুন ও আমার ছেলে সজলের মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘জমি, গরু বিক্রি করে, লোন করে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে ইতালি যাওয়ার জন্য পাঠাই। কিন্তু আমাদের সেই স্বপ্ন সত্যি হলো না। সব স্বপ্ন সাগরে শেষ হয়ে গেলো। আমরা একেবারে পথে বসে গেছি। এখন আমরা কী করবো? আমার ছেলে গেলো, সঙ্গে আমাদের সব শেষ হয়ে গেলো। এ ঘটনায় আমরা দালাল মোশারফ কাজীর কঠিন বিচার চাই।’
অভিযুক্ত দালাল মোশারফ কাজী লিবিয়ায় থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার ছেলে যুবরাজ কাজীর ব্যবহৃত মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবি/এইচএন