নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নির্বাচনে আসতে ভয় পায়। আজকে বিএনপির একজন নেতা প্রকাশ্যে না এসে হঠাৎ হঠাৎ বক্তব্য দেয়। চোরাগোপ্তা হামলার জন্য কর্মী পাচ্ছে না। ভাড়া করা টোকাই দিয়ে হামলা অপকর্ম করাচ্ছে।’
রোববার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি তারেক রহমানকে বলব, সাহস থাকলে, রাজনীতি করতে চাইলে, সৎ সাহস থাকলে মাঠে আসুন। আমার একটা রাজনৈতিক দল, আপনারা আমাদের প্রতিপক্ষ কিন্তু শত্রু কখনও ভাবিনি। ষড়যন্ত্র করিনি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে যাইনি, জিয়াউর রহমানকে হত্যা করতে যাইনি, আমরা হত্যার রাজনীতি করি না। ষড়যন্ত্রের রাজনীতি আমরা বিশ্বাস করি না। সৎ সাহস থাকলে কেন আসেন না? লন্ডনে বসে বাংলাদেশে আন্দোলন করবেন, এ ভুলের রাজনীতির কারণে আপনারা কিছুদিন পর দলের নেতাকর্মীদের হারাবেন।’
তিনি বলেন, স্বাভাবিক রাজনীতি থেকে বিচ্যুত হয়ে বিএনপি সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে। এ পর্যন্ত ২শর বেশি গাড়ি পোড়ানো ও ভাঙচুর করা হয়েছে। তাদের গণবিরোধী রাজনীতি সমর্থন না দিলে জনগণকে শত্রু ভাবে। তাদের নৃশংসতা নির্মম। নির্বাচন এলে একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করে। জনসমর্থনহীন গোষ্ঠী নির্বাচনে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করে।
বিএনপির অনেকে এই নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে চায় মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন,‘অনেকের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিতে জড়িয়ে তারা নিজেদের ক্ষতিগ্রস্থ করতে চায় না। তারা নির্বাচনে আসতে চায়। যারা এসেছেন তারা বিএনপির রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে সুস্থ ধারার রাজনীতিতে এসেছে। তাদেরকে অভিনন্দন। বিশ্বাস করি আরো অনেক নেতা বিএনপি থেকে বেরিয়ে সুস্থ রাজনীতিতে আসবে।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বহিষ্কারের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কি দলের পক্ষ থেকে বলেছি যে যারা স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন তাদের দল থেকে বহিষ্কার করব? এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগে এখনও হয়নি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সর্বমোট ২৮টি নিবন্ধিত দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপির সঙ্গে এখন ৩২ বা ৫৪ দল নেই। অনেকে তাদের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছেন। বিএনপি না হলে নির্বাচন অশুদ্ধ হয়ে যাবে, এক তরফা হয়ে যাবে কেন? বিএনপির যে ভুয়া আন্দোলনের কারণে অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছে। আজ তাদের ঝটিকা মিছিল করতে হয় অন্ধকারে। কুয়াশার মধ্যে হঠাৎ করে গুহা থেকে বেরিয়ে শুরু করে দেয় মিছিল। কিছুক্ষণ পর আর নাই। পুলিশ দেখলে চলে যায়। তাদের বুকে সাহস নেই।
স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, শৃঙ্খলাজনিত তাদের কোনো ব্যবস্থা বা অন্য কোনো ব্যবস্থা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি এগুলো সরকার করছে না, প্রধানমন্ত্রী করছেন না। সবই নির্বাচন কমিশন করছে। ইউএনও, ওসি এবং ডিসিদের বদলির কাজগুলো আর সরকারের নয়। নির্বাচন কমিশন বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম ও সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এবি/এইচএন