সংগৃহীত
রাজনীতি

নৈরাজ্যের হরতাল কেউ মানবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির ডাকা হরতালকে ‘ভোঁতা অস্ত্র’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই কর্মসূচি কেউ মানবে না। এসময় তিনি অভিযোগ করেন, পশ্চিমারা বিএনপিকে উসকানি দিচ্ছে।

রোববার বিএনপি আহুত হরতালের দিন আওয়ামী লীগ সারা দেশে জেলা ও থানা পর্যায়ে ‘শান্তি সমাবেশ’ করবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইটে দলীয় সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

সেতুমন্ত্রী বলেন, এদের (বিএনপি) এই নৈরাজ্যের হরতাল কেউ মানবে না। হরতালের এই অস্ত্র ভোঁতা হয়ে গেছে। এই ভোঁতা অস্ত্রে কাজ হবে না বলেও জানান তিনি।

রোববার বিএনপির পাশাপাশি রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, "আগামীকাল সারা দেশে থানা, মহানগর, জেলা উপজেলায় আমরা শান্তি সমাবেশ করব।"

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রবর্তনের দাবিতে রাজধানীতে বিএনপির ‘মহাসমাবেশকে ঘিরে’ যে সংঘাত ও সংঘর্ষ হয়, তাতে দলটির ‘আসল চেহারা’ বের হয়ে এসেছে।

আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর এই দিনটিতে কাছাকাছি এলাকায় সমাবেশ আহ্বানকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে যে উত্তেজনা ছিল, তা শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষে রূপ নেয়।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অনুমতি ছাড়াই নির্বিঘ্নে সমাবেশ করলেও বিএনপির সমাবেশটি পণ্ড হয়ে যায়। সমাবেশস্থল নয়া পল্টনের অদূরে কাকরাইলে প্রথমে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পরে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়ায়।

সমাবেশ এলাকায় কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা ব্যাপক সংঘর্ষে গাড়ি ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন, বিচারপতির বাসভবনে হামলা, পুলিশ হাসপাতালে হামলার মতো ঘটনাও ঘটেছে। সংবাদ কর্মীদের ওপরও নির্বিচারে হামলা করা হয়েছে।

পরে বিএনপির নেতৃবৃন্দ সমাবেশ শেষ না করেই মঞ্চ থেকে সরে যান। তার আগে তারা রোববার সারা দেশে হরতালের ডাক দেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি মাসে সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনে নামা বিএনপি প্রথমে অবরোধ ও পরে অবরোধের পাশাপাশি হরতাল দিয়েছিল। এরপর প্রথমবারের মতো এই ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।

বিএনপিকে এই সংঘাতের পুরো দায় দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, "মির্জা ফখরুল গতকাল আমার আগেই বলেছিলেন, তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবেন। আমি বলেছিলাম, দেখেন তাদের মুখে শান্তি, কাজে কী করে।

“আজকে দেখলেন তো বিএনপি কত নোংরা? সন্ত্রাসী চেহারা, আগুন সন্ত্রাসীর চেহারা। এদের বিরুদ্ধে খেলা হবে।”

গত ১৮ অক্টোবর বিএনপির এই কর্মসূচি ঘোষণা করে ২৮ অক্টোবর থেকেই আন্দোলনের ‘মহাযাত্রা’ শুরুর কথা জানিয়েছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিন দিন পরে অবশ্য তিনি বলেন, নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে যার যার অবস্থানে ফিরে গিয়ে পরবর্তী কর্মসূচির অপেক্ষায় থাকবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, "বিএনপির মহাযাত্রা ‘মরণযাত্রায়’ রূপ নিয়েছে। কোথায় ফখরুল, কোথায় মির্জা ফখরুল। খেলা হবে...খেলা হবে...।"

ওবায়দুল কাদের নেতা-কর্মীদের ‘প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার’ পরামর্শ দিয়ে বলেন, “সামনে এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে খেলা হবে, তাদের শিক্ষা দিয়ে দিতে হবে। এদের স্বভাব আগের মতই আছে, পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, তাদের ক্ষমা করা যায় না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আসন্দোলন গড়ে তুলব।"

প্রধান বিচারপতির বাসভবন এবং পুলিশের উপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, "জবাব দিতে হবে, কেন আজকে একজন সজ্জন মানুষ প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা হল, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। পুলিশের গায়ে হাত তুলেছে, একজন পুলিশকে হত্যা করল, তাদের আর ছাড় দেওয়া হবে না।

"এসব বাড়াবাড়ি, অস্ত্রবাজি, বোমাবাজি, নোংরামির জবাব বাংলার মাটিতে অবশ্যই শাস্তি হবে। তাদের অপরাধের বিচার হবে। শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, ক্ষমা নেই।"

বিএনপিকে পশ্চিমারা উসকে দিচ্ছে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “কাল থেকে আর পাবেন না। দুপুর পর্যন্ত মরণ কামড়, তারপরে এদিক ওদিক দেখে পালিয়ে গেছে। আমরা থাকব।"

তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের পাড়া মহল্লায় সতর্ক পাহারায় থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেন, "আপনারা সতর্ক থাকবে, পাড়া মহল্লায় সতর্ক পাহারায় থাকবেন।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আগামীকাল সারা দেশে থানা, মহানগর, জেলা উপজেলায় আমরা শান্তি সমাবেশ করব। আমরা শান্তি চাই, আমরা সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে, রক্তপাতের বিরুদ্ধে, নির্বাচনের আগে শান্তি চাই। নির্বাচনে শান্তি চাই, নির্বাচনের পরে শান্তি চাই।

ক্ষমতাসীন দলের এই সমাবেশটি ডাকা হয় এদিন ঢাকায় বিএনপির জমায়েতের ‘জবাব’ হিসেবে। আগের দিন রাত থেকেই নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিতে থাকেন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সভামঞ্চে। সকাল ১০টার পর থেকে একের পর এক মিছিল আসতে থাকে নানা প্রান্ত থেকে।

ঢাকার পাশাপাশি আশেপাশের জেলাগুলো থেকেও নেতারা তাদের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে আসতে থাকেন। তবে তাদের বহুজনই সমাবেশস্থলের কাছাকাছিও পৌঁছতে পারেননি। গুলিস্তানের সীমানা পেরিয়ে তাদের ভিড় আশেপাশের এলাকাতেও ছাড়িয়ে পড়ে।

এদিন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিলের সঞ্চালনায় বেলা ১২টার দিকে সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সমাবেশের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এরপর ঢাকা মহানগর কমিটি এবং বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী কমিটির নেতা-কর্মীরা বক্তব্য রাখতে থাকেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলামও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

এসময় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. হাছান মাহমুদ, মাহউব উল আলম হানিফ, বাহাউদ্দিন নাছিম। সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে ছিলেন আহমদ হোসেন, সুজিত রায় নন্দী।

ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও অংশগ্রহণ করেন।

এবি/এইচএন

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বিজয়কে ব্যর্থ করতে ষড়যন্ত্র করছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ফ্যাসিজমের অনেক...

দেশ ছেড়েছেন তামিম

স্পোর্টস ডেস্ক : ভারতে টেস্ট সিরিজ খেলতে পাড়ি জমিয়েছে বাংলাদ...

বাংলাদেশের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক চাই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক...

নিবন্ধন পেল সাকির গণসংহতি আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক : মো. জোনায়েদ সাকির দল গণসংহতি আন্দোলন রাজন...

শ্রমিকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাভারের আশুলিয়ায় পোশাক কারখানার শ্রমিকদে...

আগামী শুক্রবার থেকে চলবে মেট্রোরেল

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থেকে নিয়মিত...

সাবেক ৩ সিইসির বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবু...

কর্মস্থলে না ফেরা পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক : এখনও পুলিশের যেসব সদস্য কাজে যোগদান করেনন...

ফরিদপুরে ৫ জনের যাবজ্জীবন

জেলা প্রতিনিধি : ফরিদপুরে সাদ্দাম শেখকে (২১) হত্যার দায়ে ৫ জ...

এখন থেকে প্রকল্পের তথ্য ওপেন থাকবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : এখন থেকে প্রকল্পের সব তথ্য ওপেন থাকবে। শু...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা