সবাই জানে, কিন্তু কেউ জানে না। এমন একটা অবস্থায় পড়েছে বিএনপি। চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী জুনের মধ্যে হবে সংসদ নির্বাচন। এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে এ কথাই বলে আসছেন প্রধান উপদেষ্টা এবং তার দফতর। তবে এরকম সময়-সীমায় পুরোপুরি আশ্বস্ত নয় বিএনপি। তাই সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বুধবার (১৫ এপ্রিল) বৈঠক করবে দলটি।
নেতারা বলছেন, বুধবারের বৈঠকে আশ্বস্ত হলে ভোটের লড়াইয়ের কৌশল ঠিক করবে দলটি। আর ফলাফল অন্যরকম হলে রোডম্যাপ চেয়ে কর্মসূচিতেও যেতে পারে বিএনপি। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দুপুর ১২টায় হবার কথা এই বৈঠক।
সামাজিক মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী আবদার করছেন, তারা পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চান ডক্টর ইউনূসকে। এমন মনবাসনা নিজের পোস্টে লিখেছেন নাগরিক পার্টির সারজিস আলম।
এদিকে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও কথাচ্ছলে বলেছেন, অনেকেই চান এ সরকার পাঁচ পর থাকুক। বিষয়গুলো আরো অস্বস্তি তৈরি করেছে বিএনপি শিবিরে। যা সরকারের প্রেস নোটেও কাটেনি।
পরিস্থিতি যখন এই; তখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ভোটের সুনির্দিষ্ট সময় ইস্যুতে তারা জানতে চাইবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের কাছে। হতাশা-অবিশ্বাস দূর করতে বুধবারই বসছেন তারা।
বিএনপির স্হায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে বুঝাতে চেষ্টা করবো কারণ-তার প্রতিশ্রুতি মতো আগামী ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন দেয়ার জন্য বিএনপি ও জাতিকে যে আশ্বাস তিনি দিয়েছিলেন; সেই কথাগুলো তিনি যেন যথাযথ প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ঘোষণা দেন। এছাড়াও নির্বাচন কমিশনকে তিনি যেন আদেশ দেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করার জন্য।
দলটির স্হায়ী কমিটির আরেকজন সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, যারা ড. ইউনুসকে পাঁচ বছর রাখার চেস্থা করছে, তারাই তাকে প্রিয় জায়গা থেকে নামিয়ে দেবে এবং তার সব অর্জন নষ্ট করে দেবে। পাশাপাশি দেশটাও শেষ করে দেবে। কারণ-একটা সরকার নির্বাচন ছাড়া থাকতে পারে না। যদি থাকতেই হয়, তাহলে যথাযথ নির্বাচন মাধ্যমে সেটি হতে হবে।
বিএনপি নেতারা মনে করেন, শেখ হাসিনার পতনের পর খুলে গেছে সংস্কারের পথ। কিন্তু এই সংস্কারের কথা বলে ড. ইউনূসকে ভুলপথে নেয়ার চেষ্টা করছে কোন কোন দল। যাদের জনসমর্থন দুর্বল। খোলাখুলি কথা বলেই নিজেদের দলীয় কৌশলে যেতে চায় বিএনপি।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার এক থেকে দেড় বছর আগেই বিএনপি ৩১ দফা জাতির সামনে উত্থাপন করেছিলো। জাতির কাছে বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু, সংস্কারের নামে কারোও এজেন্ডা বাস্তবায়ন হতে দিতে চাই না।
মির্জা আব্বাস আরো বলেন, হয়তো ড. ইউনুস নির্বাচন দেওয়ার জন্য যথেষ্ট সচেষ্ট আছেন। কিন্তু, উনার আশেপাশে আওয়ামী বাহিনী এখনো লুকায়িত আছে। তারা প্রধান উপদেষ্টাকে অন্য পথে পরিচালিত করতে পারেন। এরকম সম্ভাবনা থেকেই বিএনপি ড. ইউনুসের সাথে কথা বলতে চায়।
নেতারা জানান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বেই বৈঠক হবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে। এরপর কী নির্বাচনের প্রস্তুতি, নাকি নির্বাচনের জন্য কর্মসূচি? নির্ভর করছে বৈঠকটির ওপর।
আমারবাঙলা/জিজি