সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনএপি) ‘ফ্রন্টিয়ারস ২০২২: নয়েজ, ব্লেজেস অ্যান্ড মিসম্যাচেস শীর্ষক সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী শব্দ দূষণে বিশ্বের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের দুটি শহর, একটি আমাদের প্রাণের শহর ঢাকা এবং অন্যটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মহানগরী রাজশাহী।
প্রতিবেদনে শব্দ দূষণে প্রথম স্থানে রয়েছে ঢাকা, দ্বিতীয় স্থানে ভারতের উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদ, তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ এবং চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, আবাসিক এলাকার জন্য অনুমতিযোগ্য শব্দের মাত্রা ৫৫ ডিবি (ডেসিবেল) এবং বাণিজ্যিক এলাকার জন্য ৭০ ডিবি। সেখানে ঢাকায় শব্দের মাত্রা ১১৯ ডেসিবল এবং রাজশাহীতে ১০৩ ডেসিবল পাওয়া গেছে।
কয়েক বছর ধরে ঢাকা শহরের প্রায় সব ব্যস্ত এলাকাতেই শব্দ গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। ঢাকা ছাড়াও অন্যান্য জেলা শহরের শব্দ দূষণের উৎসগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে শব্দের উৎস সমূহ স্থান-কাল-পাত্র ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে সাধারণত যানবাহন চলাচলের শব্দ (হর্ন, ইঞ্জিন, চাকার ঘর্ষণ ও কম্পনের শব্দ), রেলগাড়ি চলাচলের শব্দ, বিমান ওঠানামার শব্দ, নির্মাণ কাজ যেমন ইট ও পাথর ভাঙা মেশিন ও টাইলস কাটার মেশিন থেকে শব্দ, ভবন ভাঙার শব্দ, কলকারখানার শব্দ, জেনারেটরের শব্দ, সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের মাইকিংসহ ইত্যাদি উৎস থেকে শব্দ উৎপন্ন হয়।
শহর এলাকায় শব্দ দূষণের প্রভাব গ্রামাঞ্চল থেকে তুলনামূলকভাবে অনেকখানি বেশি। শুধু ঘরের বাহিরে, রাস্তায়, কর্মস্থলে নয় শব্দ দূষণ ঘরের ভেতর আধুনিক যন্ত্রপাতি যেমন ফুড ব্লেন্ডার, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার এবং প্রেসার কুকার ইত্যাদি থেকেও উচ্চশব্দ উৎপন্ন হচ্ছে।
শব্দ দূষণের ফলে শ্রবণশক্তি হ্রাস, বধিরতা, হৃদরোগ, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিঘ্ন হওয়াসহ নানা রকম সমস্যা দেখা যায়। স্বল্পমেয়াদি শব্দদূষণ মানসিক চাপ সৃষ্টি করে এবং আমরা সবাই বুঝি যে মানসিক চাপ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই মারাত্মক। আবার দীর্ঘমেয়াদি শব্দদূষণ শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত করে। শ্রবণশক্তি হ্রাসের ফলে বিরক্তি, নেতিবাচকতা, রাগ, ক্লান্তি, চাপা উত্তেজনা, মানসিক চাপ, বিষণ্নতা, সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিহার, ব্যক্তিগত ঝুঁকি বাড়ায় এবং স্মৃতিশক্তি ও নতুন কিছু শেখার ক্ষমতা হ্রাস পায়।
অন্যদিকে উচ্চশব্দ শিশু, গর্ভবতী মা, হৃদরোগীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। শব্দ দূষণের ফলে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, আকস্মিক উচ্চশব্দ মানবদেহের রক্তচাপ ও হৃৎকম্পন বাড়িয়ে দেয়, মাংসপেশির সংকোচন করে, পরিপাকে বিঘ্ন ঘটায়, শিরা ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রচণ্ড চাপ দেয়।
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) ঢাকা শহরের ১২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিএএফ শাহীন কলেজ এবং কিডস টিউটোরিয়াল স্কুলের সামনে শব্দের সর্বোচ্চ মান পাওয়া গিয়েছে। এই দুটি স্থানে শব্দের মান ছিল ১০০ দশমিক ৭৬ ডেসিবল এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। সেখানে শব্দের (খবয়) মান ৯৩ দশমিক ০৪ ডেসিবল, তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সেখানে শব্দের (খবয়) মান ৯২ দশমিক ৯২ ডেসিবল, নীরব এলাকার ক্ষেত্রে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী দিনেরবেলার জন্য শব্দের জাতীয় আদর্শ মান ৫০ ডেসিবল এবং রাতের বেলায় ৪০ ডেসিবল।
শব্দের মান প্রতিটি স্থানে নির্ধারিত মানমাত্রার কয়েকগুণ বেশি ছিল। এ ছাড়া ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, খিলগাঁও গভ. কলোনি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, সিদ্ধেশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, খিলগাঁও সরকারি কলেজ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ শব্দের মানমাত্রা ৮৮ ডেসিবলের ওপরে পাওয়া গিয়েছে।
১২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সর্বনিম্ন মান পাওয়া গিয়েছে রাজধানী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ যেখানে খবয় মান ছিল ৪১ দশমিক ২৪ ডেসিবল, দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে নর্থ পয়েন্ট স্কুল ও কলেজ, সেখানের শব্দের খবয় মান ৬১ দশমিক ৪৪ ডেসিবল, তৃতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে উদয়ন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ সেখানে শব্দের খবয় মান ৬৭ দশমিক ৭২ ডেসিবল। এ ছাড়া ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদরাসা, শ্যামপুর আইডিয়াল হাই স্কুল, ভূঁইয়া আইডিয়াল স্কুল, মেট্রোপলিটন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খিলক্ষেত কারিগরি কলেজ, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এবং শাহনূরী মডেল হাইস্কুল এর সামনে শব্দের মানমাত্রা ৬৮ ডেসিবলের ওপরে পাওয়া গিয়েছে।
ঢাকা শহরের ১২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৪৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খবয় (এলইকিউ) মান ছিল ৮০ ডেসিবেলের বেশি। অপরদিকে সর্বনিম্ন খবয় মান ছিল রাজধানী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (৪১ দশমিক ২৪ ডেসিবল) যার মান আদর্শ মানমাত্রা থেকে কম ছিল। তবে এই ১২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে কম দূষিত নয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরও দূষণের মাত্রা ছিল নির্ধারিত মানমাত্রার চেয়ে বেশি। এই জরিপকৃত স্থানগুলোর মধ্যে, সর্বাধিক শব্দ (১০০ দশমিক ৭৬ ডেসিবল) রেকর্ড হয়েছিল বিএএফ শাহীন কলেজ এবং কিডস টিউটোরিয়াল স্কুলের সামনে এবং সর্বনিম্ন শব্দ (৪১ দশমিক ২৪ ডেসিবল) রেকর্ড হয়েছিল রাজধানী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে।
ক্যাপস অন্য একটি গবেষণায় ঢাকা শহরের ৭৭টি রাস্তার সংযোগস্থলে মধ্যে পল্টন মোড়ে শব্দের সর্বোচ্চ মান পাওয়া গিয়েছে যেখানে খবয় মান ছিল ১০৫ দশমিক তিন ডেসিবল এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে ধানমন্ডি ৩২ মোড় সেখানের শব্দের খবয় মান ১০১ দশমিক ৬৪ ডেসিবল, তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে সাইন্সল্যাব মোড় সেখানে শব্দের খবয় মান ১০০ দশমিক ৯৩ ডেসিবল, বাণিজ্যিক এলাকার ক্ষেত্রে শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী দিনের বেলার জন্য শব্দের জাতীয় আদর্শ মান ৭০ ডেসিবল এবং রাতের বেলায় ৬০ ডেসিবল। শব্দের মান প্রতিটি স্থানে নির্ধারিত মানমাত্রার কয়েকগুণ বেশি ছিল।
এ ছাড়া মিরপুর ১ বাস স্ট্যান্ড, আজিমপুর মোড়, জিপিও মোড়, মালিবাগ রেলগেট, উত্তর বাড্ডা মোড়, আবুল হোটেল মোড়, ফার্মগেট মোড়ে শব্দের মানমাত্রা ৯০ ডেসিবলের ওপরে পাওয়া গিয়েছে। ৭৭টি রাস্তার সংযোগস্থলে সর্বনিম্ন মান পাওয়া গিয়েছে মিন্টু রোডে যেখানে খবয় মান ছিল ৮০ দশমিক ৫১ ডেসিবল, দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে খামার বাড়ি মোড় সেখানের শব্দের খবয় মান ৮১ দশমিক ৭৬ ডেসিবল, তৃতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে এজিপি কলোনি মোড় সেখানে শব্দের খবয় মান ৮১ দশমিক ৯৪ ডেসিবল। এ ছাড়া বিজয় সরণি মোড়, বাংলা মোটর মোড়, ইসলামপুর মোড়, সেগুনবাগিচা মোড়, মগবাজার মোড়, প্রেসক্লাব মোড়, হাইকোর্ট মোড়, জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি মোড়ে শব্দের মানমাত্রা ৮০ ডেসিবলের ওপরে পাওয়া গিয়েছে।
সম্মিলিত উদ্যোগই শব্দ দূষণের মতো একটি সামাজিক সংকট থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারে। এজন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ সমূহ মধ্যে-বিধিমালা সংজ্ঞা অনুযায়ী চিহ্নিত জোন সমূহে (নীরব, আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প ও মিশ্র) সাইন পোস্ট স্থাপন করে তা মান্যতার ব্যাপারে নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। যেসব এলাকায় শব্দ দূষণের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি সেসব এলাকাতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে।
কয়েক বছরে দেখা যাচ্ছে ঢাকা শহরের আবাসিক এলাকা সমূহে ধীরে ধীরে বাণিজ্যিকরণ হচ্ছে যা ফলে শব্দ দূষণের পরিমাণ বাড়ছে। এক্ষেত্রে আবাসিক এলাকা সমূহকে বাণিজ্যিক এলাকায় রূপান্তরিত না করা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হতে পারে। পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকার এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য প্রশাসনিক দপ্তরের সমন্বয় সাধন করতে হবে।
শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬-এর শতভাগ বাস্তবায়ন, যানবাহনে ব্যবহৃত হাইড্রোলিক হর্ন আমদানি বন্ধ করা, হর্ন বাজানোর শাস্তি বৃদ্ধি ও চালকদের শব্দ সচেতনতা যাচাই করে লাইসেন্স প্রদান করা শব্দ দূষণ কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে হর্ন না বাজানোর জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের আওতায় পরিবেশ ক্যাডার ও পরিবেশ পুলিশ নিয়োগ দিতে হবে। যানবাহনের চাপ কামানোর জন্য, গণপরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত করার মাধ্যমে ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
এ ছাড়া জেনারেটর এবং সব ধরনের শব্দ সৃষ্টিকারী যন্ত্রপাতির মান মাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া যেতে পারে। সড়কের পাশে গাছ লাগিয়ে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা যাতে পারে যা শব্দ দূষণ কামাতে ভূমিকা রাখবে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের শব্দ দূষণের পরিমাণ কমিয়ে আনার জন্য অনুমতি ব্যতীত এইসব অনুষ্ঠানে মাইক বাজানো নিষিদ্ধ করা এবং মাইকের শব্দ সীমিত করণের ক্ষেত্রে গুরুত্বরোপ করতে হবে।
কমিউনিটি ভিত্তিক কমিটি করে শব্দদূষণ সংক্রান্ত আইন ভঙ্গের বিষয়ে তদারকি দায়িত্ব প্রদান করা শব্দ দূষণের ক্ষতি, প্রতিকার ও বিদ্যমান আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় গণমাধ্যম কর্মীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা যেতে পারে।
এক্ষেত্রে গবেষণা নির্ভর শব্দের উৎস, স্বাস্থ্য ঝুঁকি, মানসিক ক্ষতি, অর্থনৈতিক ক্ষতি ও নিয়মিতভাবে শব্দদূষণ সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এর কার্যবিধি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা যেতে পারে। আবার সাধারণ জনগণের মতামত প্রচারের মাধ্যমে পরিবেশ অধিদপ্তরকে শব্দ দূষণ রোধে পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে।
শেষ কথায় বলা যায় আমরা যারা শব্দদূষণ সৃষ্টি করছি তারাও প্রকৃত পক্ষে এর ক্ষতির শিকার হই। কাজেই সরকার গৃহীত কর্মসূচির পাশাপাশি শব্দ দূষণের উৎস সমূহ বন্ধ করার জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার বা কোনো একটি সংস্থা কর্তৃক এককভাবে শব্দ দূষণের মতো একটি জটিল সামাজিক ব্যাধির সমাধান করা দুরূহ ব্যাপার।
তাই সবাই মিলে শব্দ দূষণ প্রতিরোধ করতে হবে ও নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। শব্দ দূষণের মতো মারাত্মক ঘাতক থেকে আপামর জনসাধারণকে রক্ষা করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষক মণ্ডলী ও ছাত্র সমাজকে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে।
-------------------------
ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার : ডিন, বিজ্ঞান অনুষদ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)