হাজীগঞ্জ দুর্গ, পূর্বে এই দুর্গ খিজিরপুর দুর্গ নামেই পরিচিত ছিল। নারায়ণগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষা নদীর পশ্চিম তীরে হাজীগঞ্জ এলাকায় এই দুর্গের অবস্থান। জাহাঙ্গীরনগরকে (বর্তমান ঢাকা) রক্ষা করতে ষোল শতকের দিকে হাজীগঞ্জ, সোনাকান্দা ইদ্রাকপুরে তিনটি দুর্গ নির্মাণ করা হয়। তারই একটি হাজীগঞ্জ দুর্গ। দুর্গটি রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
জনশ্রুতি আছে- মুঘল সুবাদার ইসলাম খান কর্তৃক ঢাকায় মুঘল রাজধানী স্থাপনের পর পরই শীতলক্ষা নদীর সাথে পুরাতন বুড়িগঙ্গার মিলনস্হলে নির্মিত হয় এই জলদুর্গ। নদীপথে পর্তুগিজ এবং মগ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যেই এই দুর্গ নির্মিত হয়। দুর্গের অভ্যন্তরে খালি মাঠ ব্যতীত কোনো স্থাপনা নেই। ধারণা করা হয়- বর্ষাকালে জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে সৈন্যরা দুর্গের অভ্যন্তরে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান করতো।
মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার লক্ষে নির্মিত তিনটি জলদুর্গ বা ‘ট্রায়াঙ্গেল অব ওয়াটার ফোর্ট’গুলোর মধ্যে হাজীগঞ্জ অন্যতম। অপর দুইটির মধ্যে একটি শীতলক্ষার পূর্ব প্রান্তে বন্দরে অবস্থিত সোনাকান্দা দুর্গ নামে পরিচিত। অপরটি মুন্শীগন্জ শহরে ইদ্রাকপুর দুর্গ নামে পরিচিত।
১৬১০ খ্রিস্টাব্দে হাজীগঞ্জ দুর্গটি নির্মিত হয়। মতান্তরে মিরজুমলা কর্তৃক ১৬৬০ থেকে ১৬৬৩ সালের মধ্যে নির্মাণের কথাও জানা যায়। প্রকৃত অর্থে দুর্গটি কে নির্মাণ করেছিলেন তা নিয়ে বেশ মতপার্থক্য রয়েছে।
দুর্গের চারকোনে চারটি বুরুজ এবং পঞ্চভূজ আকৃতির সীমানা প্রাচীরের দেয়ালে বন্দুক দিয়ে গুলি করার ফাঁকা জায়গা রয়েছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের অধীনে থাকা এই দুর্গটি বহুবার সংস্কার করা হলেও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে দুর্গটি বেহাল অবস্থায় পরে আছে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ