নিজস্ব প্রতিবেদক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স্রোতে এক সময় হয়ে উঠে ইতিহাস। পৃথিবীর বয়স যতোই বাড়ে ইতিহাস ততোই সমৃদ্ধ হয়। এই সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনার প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরাচরিত। ইতিহাসের প্রতিটি দিন তাই ভীষণ গুরুত্ব পায় সকলের কাছে।
দৈনিক আমার বাঙলার পাঠকদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে সংযোজন করেছে নতুন আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
সোমবার (২ অক্টোম্বর), ১৭ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৪ হিজরী। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনাবলী:
১১৮৬ - ক্রুসেডের যুদ্ধে মুসলিম সেনাপতি সালাউদ্দীন আইয়ুবি বায়তুল মোকাদ্দাস মুক্ত করতে সক্ষম হন।
১৭১৮ - স্পেনের বিরুদ্ধে লন্ডনে ব্রিটেন, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া ও হল্যান্ড-এই চতুঃশক্তির মৈত্রী জোট হয়।
১৭৮০ - মার্কিন স্বাধীনতা আন্দোলন জন এ্যান্ড্রে কে ফাঁসি দেওয়া হয়।
১৭৯০ - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম আদমশুমারি শুরু হয়।
১৮৬৮ - কলকাতায় জেনারেল পোস্ট অফিস উদ্বোধন হয়।
১৯২২ - চীনে টাইফুনের আঘাতে ৬০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
১৯৩৪ - জার্মানির স্বৈরশাসক রূপে এডলফ হিটলারের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
১৯৩৫ - বেনিতো মুসোলিনির নেতৃত্বে ইথিওপিয়া (আবিসিনিয়া ) আক্রমণ ঘটে।
১৯৪১ - জার্মানীর নাৎসী বাহিনীর নেতা হিটলার রাশিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় হামলার নির্দেশ জারী করে।
১৯৫৫ - সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়।
১৯৫৮ - ঘানা ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে।
১৯৭২ - বোম্বেতে ভারতের প্রথম টেলিভিশন কেন্দ্র চালু হয়।
১৯৭৭ - ঢাকা সেনানিবাস ও বিমান বন্দরে সেনা বিদ্রোহ ঘটে এতে বিমান বাহিনীর ১১ জন অফিসার নিহত হন।
১৯৭৯ - ঢাকায় রিয়াদ সরাসরি ট্রাংক ডায়ালিং চালু করে।
১৯৮৩ - বাংলাদেশ গ্রামীণ ব্যাংকের আত্বপ্রকাশ ঘটে।
১৯৯০ - ইরাকি ট্যাঙ্ক ও পদাতিক বাহিনী কুয়েত দখল করে।
১৯৯৫ - বাংলাদেশ সরকার সাপটা অনুমোদন করে।
১৯৯৬ - মাদার তেরেসা আমেরিকার সম্মানিক নাগরিকত্ব লাভ করেন।
১৯৯৬ - প্রশান্ত মহাসাগরে পেরুর যাত্রবিাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে ক্রসহ ৭০ জন নিহত হয়।
২০০২ - তেহরানে ইরান ও কুয়েতের মধ্রে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
জন্মদিন:
১৫৩৮ - চার্লস বরমেও, ইতালীয় গণিতবিদ ও সন্ত।
১৮১৪ - সমাজ সংস্কারক দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়। (মৃ.১৮৭৮)
১৮৪৭ - পল ভন হিন্ডেনবার্গ, পোলিশ বংশোদ্ভূত জার্মান ফিল্ড মার্শাল, রাজনীতিবিদ ও প্রেসিডেন্ট।
১৮৫২ - উইলিয়াম র্যামজে, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী স্কটিশ ইংরেজ রসায়নবিদ।
১৮৬৬ - স্বামী অভেদানন্দ ভারতীয় হিন্দু সন্ন্যাসী ও রামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠের প্রতিষ্ঠাতা। (মৃ.১৯৩৯)
১৮৬৯ - মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সবচেয়ে গুরূত্বপূর্ণ নেতা। (মৃ.৩০/০১/১৯৪৮)
১৮৭১ - করডেল হুল, মার্কিন আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও রাজ্য ৪৭তম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সচিব, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী।
১৮৮৯ - শিশিরকুমার ভাদুড়ী, খ্যাতনামা বাঙালি অভিনেতা ও নাট্যাচার্য। (মৃ.৩০/০৬/১৯৫৯)
১৮৯৬ - লিয়াকত আলি খান, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রখ্যাত মুসলিম লীগ নেতা।
১৯০০ - লীলা নাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী। (মৃ.১১/০৬/১৯৭০)
১৯০৪ - লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, ভারতের প্রাক্তন (তৃতীয়) প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের দলনেতা। (মৃ.১১/০১/১৯৬৬)
১৯০৪ - গ্রাহাম গ্রিন, ইংরেজ ঔপন্যাসিক, গল্পকার ও সমালোচক। (মৃ.০৩/০৪/১৯৯১)
১৯০৭ - আলেক্সান্ডার রবার্টাস টড, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্যারন টড ও স্কটিশ প্রাণরসায়নী।
১৯১৭ - খৃস্টান ডি ডুভে, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ বংশোদ্ভূত বেলজিয়ান সাইটোলগিস্ট ও প্রাণরসায়নবিদ।
১৯২৪ - তপন সিংহ, প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক। (মৃ.১৫/০১/২০০৯)
১৯৩৩ - স্যার জন বার্ট্রান্ড গার্ডন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ জীববিজ্ঞানী।
১৯৫০ - ভারতের কিংবদন্তি ফুটবলার ও কোচ সুভাষ ভৌমিক। (মৃ.২০২২)
১৯৫০ - পার্সিস খামবাট্টা, ভারতীয় মডেল ও অভিনেত্রী।
১৯৬২ -‘টারজান’ খ্যাত হলিউড তারকা জো লারা। (মৃ. ২৯/০৫/২০২১)
১৯৬৪ - ফারুক মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশী রক সঙ্গীত শিল্পী, যিনি জেমস নামে পরিচিত।
১৯৭৮ - আয়ুমি হামাসাকি, জাপানি কন্ঠশিল্পী, গীতিকার, প্রযোজক ও অভিনেত্রী।
১৯৮৪ - মারিওন বারতোলি, ফরাসি টেনিস খেলোয়াড়।
মৃত্যুবার্ষিকী:
৫৩৪ - আতালারিক, ইতালীয় রাজা।
১৮৫০ - সারাহ বিফফেন, ইংরেজ চিত্রশিল্পী।
১৮৫৩ - ফ্রঁসোয়া জিয়ান ডোমিনিক আরাগো, ফরাসি গণিতবিদ, পদার্থবিদ, জ্যোতির্বিদ, রাজনীতিবিদ ও ফ্রান্সের ২৫ তম প্রধানমন্ত্রী।
১৯০৬ - রাজা রবি বর্মা, ভারতীয় চিত্রশিল্পী। (জ. ১৮৪৮)
১৯১৭ - অক্ষয়চন্দ্র সরকার, বাঙালি কবি ও সাহিত্য সমালোচক। (জ.১১/১২/১৮৪৬)
১৯২৭ - সভান্টে অগস্ট আরেনিউস, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুইডিশ পদার্থবিদ ও রসায়নবিদ।
১৯৪৭ - পি. ডি. অউস্পেনস্কাই, রুশ বংশোদ্ভূত ইংরেজ গণিতবিদ ও দার্শনিক।
১৯৭১ - খালেক নওয়াজ খান, ভাষাসৈনিক ও বাঙালি রাজনীতিবিদ, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। (জ. ১৯২৬)
১৯৭৪ - নুরুল আমিন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭৫ - কুমার স্বামী কামরাজ নাদার, ভারতরত্ন পদকপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ, তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। (জ.১৫/০৭/১৯০৩)
১৯৮১ - হ্যারি গোল্ডেন, মার্কিন সাংবাদিক ও লেখক।
১৯৮৫ - রক হাডসন, মার্কিন অভিনেতা। (জ. ১৯২৫)
১৯৮৭ - পিটার মিডাওয়ার, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত ইংরেজ জীববিজ্ঞানী।
১৯৯৬ - আন্দ্রেই লুখানভ, সমাজতান্ত্রিক যুগ-পরবর্তী বুলগেরিয়ার প্রথম প্রধানমন্ত্রী।
২০০৭ - ক্রিস্টোফার ডেররিক, ইংরেজ লেখক ও সমালোচক।
২০১৩ - কারে অরনুং, নরওয়েজীয় পিয়ানোবাদক ও শিক্ষক।
২০২১ - পাকিস্তানের কমেডি রাজা হিসেবে পরিচিত উমর শরিফ। (জ. ১৯/০৪/১৯৫৫)
দিবস:
জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবস (বাংলাদেশ)।
গান্ধী জয়ন্তী (ভারত), আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস।
বিশ্ব থেকে হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি, অসহিষ্ণুতা ও রক্তপাত বন্ধে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতে প্রতি বছর ২ অক্টোবর বিশ্ব অহিংস দিবস পালন করা হয়। অহিংসা বলতে বোঝায় হিংসা থেকে দূরে থাকা। হিংসা থেকে দূরে থাকাই এ দিবসের মূল কথা।
প্রতি বছর ২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে বিশ্ব অহিংস দিবস পালিত হয়। ভারতে দিনটি গান্ধী জয়ন্তী হিসেবে পালিত হয়।
২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে প্যারিসে ইরানি নোবেলবিজয়ী শিরিন এবাদী তার একজন হিন্দী শিক্ষকের কাছ থেকে দিবসটির ব্যাপারে একটি প্রস্তাবনা গ্রহণ করেন ৷
সিদ্ধান্তটি ধীরে ধীরে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কিছু নেতাদের আকর্ষণ করতে থাকে ৷ ২০০৭ সালে সোনিয়া গান্ধী এবং ডেসমন্ড টিটু জাতিসংঘে সিদ্ধান্তটি পেশ করেন ৷
২০০৭ সালের ১৫ জুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সদস্যবৃন্দ ২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস করার ব্যাপারে ভোট দেন ৷ এরপর সাধারণ পরিষদ তার সদস্যদের কাছে অহিংসার বার্তা দিয়ে ২ অক্টোবর দিবসটি পালনের ব্যাপারে ঘোষণা দেয় ৷
পৃথিবীর অসহিষ্ণুতা, উত্তেজনা, সহিংসতা বন্ধে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অবিসংবাদিক নেতা মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তাই মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
পথশিশু দিবস ৷
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। মায়ের কোল তাদের নিরাপদ আশ্রয়। কিন্তু যেসব শিশু এ আশ্রয় থেকে বঞ্চিত হয়, তাদের পথশিশু হিসেবে ধরা হয়। আজ সেই পথশিশু দিবস।
এসব শিশুর সুরক্ষা ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতি বছর ২ অক্টোবর বাংলাদেশে দিবসটি পালিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে পথশিশুর সংখ্যার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। রাজধানীর অলিগলি থেকে শুরু করে বাস স্ট্যান্ড, রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন বড় বড় সড়কের ধারে অসংখ্য পথশিশু লক্ষ করা যায়।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার পথশিশু রয়েছে। পথই তাদের আবাস, পথেই তাদের বসবাস। জন্মের পর থেকেই যারা জীবন যুদ্ধের সাথে পরিচিত। তারা বড় হয় অবহেলা আর বঞ্চনার মধ্য দিয়ে।
১/২ টাকার জন্য তারা পথচারীকে নানাভাবে অনুরোধ করে। আবার কেউ কেউ কাগজ কুড়ায়, ময়লা আবর্জনার মধ্যে থেকে বিভিন্ন প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবন ধারণ করে থাকে। রোদ, ঝড়, বৃষ্টি কিংবা তীব্র শীত- কোনো কিছু যেন তাদের ছুঁয়ে যায় না।
প্রতি বছরের মতো এবারও দিবসটিকে ঘিরে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
জাতিসংঘ ও এর অঙ্গ সংগঠন ইউনিসেফ শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশে এসব পথশিশুদের নিয়ে কাজ করে আসছে। তবে পথ শিশুদের সুরক্ষায় ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় এসব উদ্যোগ যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এবি/এইচএন