আমার বাঙলা ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স্রোতে এক সময় হয়ে উঠে ইতিহাস। পৃথিবীর বয়স যতোই বাড়ে ইতিহাস ততোই সমৃদ্ধ হয়। এ সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনার প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরাচরিত। ইতিহাসের প্রতিটি দিন তাই ভীষণ গুরুত্ব পায় সকলের কাছে।
আমার বাঙলার পাঠকদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে সংযোজন করেছে নতুন আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
আজ শনিবার (১৮ মে) ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ জিলক্বদ ১৪৪৪ হিজরী। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনাবলী:
১৭৯৮ - লর্ড ওয়েলেসলি গভর্নর জেনারেল হয়ে কলকাতায় আসেন।
১৮০৪ - ফ্রান্সের সংসদ সিনেটে এক আইন পাশের মধ্য দিয়ে নেপোলিয়ান বেনাপার্ট সেদেশের সম্রাট হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন।
১৮৩০ - ফ্রান্স আলজেরিয়া দখলের জন্য ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে।
১৮৬০ - আব্রাহাম লিংকন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
১৮৯৯ - হেগে শান্তি সম্মেলনে ২৬টি দেশ আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে বিবাদ মীমাংসায় সম্মত হয়।
১৯৪৩ - জাতিসংঘ ত্রাণ ও পুনর্বাসন এজেন্সি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৪৫ - ইউরোপে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
১৯৭২ - বাংলা একাডেমী অর্ডার ১৯৭২ জারি করা হয়।
১৯৭৪ - রাজস্থানের পোখরানে ভারতের প্রথম পরমাণু পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরমাণু বিস্ফোরণটিকে স্মাইলিং বুদ্ধ সাংকেতিক নামে অভিহিত করা হয়।
১৯৭৬ - ভারত প্রথম পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায়।
১৯৮০ - চীন আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের সকল পরীক্ষা সম্পন্ন করে।
জন্মদিন:
১০৪৮ - ওমর খৈয়াম, ইরানের কবি, গণিতবেত্তা, দার্শনিক ও জ্যোর্তিবিদ। (মৃ. ১১৩১)
১৮৫০ - অলিভার হেয়াভিসিডে, ইংরেজ প্রকৌশলী, গণিতবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী।
১৮৬৮ - দ্বিতীয় নিকোলাস (রুশ সম্রাট) রাশিয়ার সর্বশেষ সম্রাট। (মৃ. ১৯১৮)
১৮৭২ - বারট্রান্ড রাসেল, একজন ইংরেজ বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, লেখক এবং সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী। (মৃ. ১৯৭০)
১৮৭৬ - হারমান মুলার, জার্মান সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ ও ১২ তম চ্যান্সেলর।
১৮৮৩ - ওয়াল্টার গ্রপিউস, জার্মান বংশোদ্ভূত আমেরিকান স্থপতি ও জন এফ কেনেডি ফেডারেল ভবন পরিকল্পাকারী।
১৮৯১ - রুডলফ কারনাপ, জার্মান-আমেরিকান দার্শনিক। (মৃ. ১৯৭০)
১৮৯৭ - ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রা, ইতালীয় আমেরিকান চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক এবং লেখক। (মৃ. ১৯৯১)
১৯০১ - ভিঞ্চেন্ত দু ভিগ্নেয়াউদ, মার্কিন প্রাণরসায়নবিদ। (মৃ. ১৯৭৮)
১৯০৫ - হেডলি ভেরিটি, পেশাদার ইংরেজ ক্রিকেটার।
১৯১৩ - চার্লস ট্রেনেট, ফরাসি গায়ক ও গীতিকার।
১৯৩৩ - এইচ. ডি. দেব গৌড়া, ভারতীয় রাজনীতিবিদ।
১৯৩৬ - এস এম আহমেদ হুমায়ুন, বাঙালি লেখক ও সাংবাদিক। (মৃ. ১৯৯৯)
১৯৩৭ - জ্যাক স্যানটার, লুক্সেমবার্গ আইনজ্ঞ, রাজনীতিবিদ ও ২২তম প্রধানমন্ত্রী।
১৯৩৮ - রবীন্দ্রজীবনকার প্রশান্তকুমার পাল। (মৃ. ২০০৭)
১৯৪২ - নবি স্টিলেস, সাবেক ইংরেজ ফুটবল খেলোয়াড়।
১৯৪৪ - ডব্লিউ. জি. সেবাল্ড, জার্মান লেখক ও শিক্ষাবিদ।
১৯৫৫ - চও ইউন-ফাট, হংকং অভিনেতা।
১৯৬০ - ইয়ানিক নোয়া, সাবেক ফরাসি টেনিস খেলোয়াড় ও গায়ক।
১৯৭০ - টিনার ফেয়, আমেরিকান অভিনেত্রী, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।
১৯৭৫ - জ্যাক জনসন, আমেরিকান গায়ক, গীতিকার ও গিটার।
১৯৭৮ - রিকার্ডো কারভালহো, পর্তুগিজ ফুটবলার।
১৯৮৬ - কেভিন অ্যান্ডারসন, দক্ষিণ আফ্রিকার টেনিস খেলোয়াড়।
১৯৯০ - ইয়ুইয়া ওসাকো, জাপানি ফুটবলার।
মৃত্যুবার্ষিকী:
১৭৯৯ - পিয়ের বিউমার্কাইজ, ফরাসি বহুবিদ্যাজ্ঞ। (জ. ১৭৩২)
১৮০০ - আলেকজান্ডার সুভোরোভ, রাশিয়ান সাধারণ।
১৮৮৬ - অক্ষয়কুমার দত্ত, বাংলা সাহিত্যের প্রবন্ধকার ও সাংবাদিক। (জ. ১৮২০)
১৯০৯ - ইসহাক আলবেনিজ, স্প্যানিশ পিয়ানোবাদক ও সুরকার।
১৯২২ - শার্ল লুই আলফোঁস লাভরঁ, ফরাসি চিকিৎসক। (জ. ১৮৪৫)
১৯৩৪ - চারণ কবি মুকুন্দ দাস, স্বদেশী ও অসহযোগ আন্দোলনের সময় বহু স্বদেশী বিপ্লবাত্মক গান ও নাটক রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন।
১৯৪৩ - নীলরতন সরকার, প্রখ্যাত বাঙালি চিকিৎসক ও শিক্ষাবিদ। (জ. ১৮৬১)
১৯৫৬ - মরিস টেট, ইংল্যান্ডের বিখ্যাত আন্তর্জাতিক তারকা ছিলেন। (জ. ১৮৯৫)
১৯৮১ - আর্থার ওকনেল, আমেরিকান অভিনেতা। (জ. ১৯০৮)
১৯৮৪ - নলিনীকান্ত সরকার, বাঙালি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কবি, গায়ক, সাহিত্যবোদ্ধা ও ছন্দশ্রী। (জ. ১৮৮৯)
১৯৯৯ - জপমালা ঘোষ, বাংলা ছড়ার গানের জনপ্রিয় গায়িকা। (জ. ১৯৩১)
২০০১ - ডব্লিউ এ এস ওডারল্যান্ড, অস্ট্রেলীয় নাগরিক, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত একমাত্র বিদেশী মুক্তিযোদ্ধা।
২০০৭ - পিয়ের-জিল দ্য জেন, ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী। (জ. ১৯৩২)
২০০৯ - ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ, শ্রীলঙ্কার বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল দল লিবারেশন টাইগার্স অফ তামিল ইলম এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক নেতা। (জ. ১৯৪৪)
২০১৫ - হাল্ডোর আসগ্রিমসন, আইসল্যান্ডীয় একাউন্টেন্ট, রাজনীতিবিদ ও ২২তম প্রধানমন্ত্রী।
দিবস:
আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস
জাদুঘর মানেই হারিয়ে যাওয়া সব ব্যতিক্রমী জিনিসের সংগ্রহশালা। এটি ইতিহাস-ঐতিহ্য, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি বহন করে। এটি যদি হয় অদ্ভুত ও উদ্ভট সবকিছুর সংগ্রহশালা, তাহলে সেসব নিয়ে জানার কৌতূহলটাও বেড়ে যায় বহুগুণে।
আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস হল প্রতি বছরের ১৮ মে বা তার কাছাকাছি সময়ে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক দিবস। আন্তর্জাতিক জাদুঘর পরিষদ এটির সমন্বয় করে থাকে। প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে প্রতিপাদ্য করে দিবসটি আয়োজন করা হয়।
আন্তর্জাতিকভাবে জাদুঘরগুলো যে সব সমস্যার মুখোমুখি হয়, সেগুলিকে প্রতিফলিত করে বা কোনও প্রাসঙ্গিক আবহকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর প্রতিপাদ্য পরিবর্তন করা হয়।
দিবসটিতে সভা, সেমিনারের আয়োজন করা হয়, জাদুঘরের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সাথে জনসাধারণের দেখা করার সুযোগ করে দেয়া হয় এবং জাদুঘর গুলি যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় সে সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করা হয়। দিবসটি সমাজের উন্নয়নে জাদুঘরগুলি যে ভূমিকা পালন করে সে সম্পর্কে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
আন্তর্জাতিক জাদুঘর পরিষদের আহ্বানে ১৯৭৭ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস পালন করা হয়।[২]
প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী যাদুঘরের ভূমিকা প্রচারের জন্য এই দিবসে অংশগ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে যাদুঘর গুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বার্ষিক প্রতিপাদ্য, ইভেন্ট এবং ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে জাদুঘরগুলো এ দিবস আয়োজন করে।
১৯৯২ সালে এ আয়োজনের জন্য একটি বার্ষিক প্রতিপাদ্য প্রথম গৃহীত হয়। ১৯৭৭ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক পোস্টার তৈরি করা হয়, এবং সেই বছর ২৮টি দেশ তা অভিযোজন করে।
আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আজ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।
সকাল ১০ টায় ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর উদ্বোধন, সকাল ১০.৩০ মিনিটে র্যালি, সকাল ১১ টায় ‘শিক্ষা ও গবেষণায় জাদুঘর’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা এবং তৃতীয় পর্ব বিকেল ৩টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং সেমিনার ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব জনাব মো. আবুল মনসুর।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মো. ইমরুল চৌধুরী এবং আইকম বাংলাদেশ জাতীয় কমিটির চেয়ারপার্সন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের উপ-কীপার ও আইকম বাংলাদেশ জাতীয় কমিটির সেক্রেটারি জনাব মো. সেরাজুল ইসলাম এবং প্রবন্ধের ওপরে আলোচনা করবেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মালিহা নার্গিস আহমেদ।
এতে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব মো. কামরুজ্জামান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন শিল্পী সুজিত মোস্তফা।
এবি/এইচএন