আমার বাঙলা ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স্রোতে এক সময় হয়ে উঠে ইতিহাস। পৃথিবীর বয়স যতোই বাড়ে ইতিহাস ততোই সমৃদ্ধ হয়। এ সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনার প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরাচরিত। ইতিহাসের প্রতিটি দিন তাই ভীষণ গুরুত্ব পায় সকলের কাছে।
আমার বাঙলার পাঠকদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে সংযোজন করেছে নতুন আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
আজ সোমবার (৬ মে) ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৪ হিজরী। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনাবলী:
১৫৪২ - প্রথম খ্রিস্টান মিশনারি ফ্রান্সিস খ্যাভিয়ের গোয়ায় আসেন।
১৭৩৩ - প্রথম আর্ন্তজাতিক বক্সিং ম্যাচে বব হুইটেকার টিটু ডি কার্নিকে হারায়।
১৭৫৭ - দীর্ঘ ৭ বছর প্রাগযুদ্ধ শেষে অস্ট্রীয়রা বিজয় লাভ করে।
১৭৬৩ - আমেরিকান আদিবাসী নেতা পন্টিয়াক নিউ ইয়র্কে বৃটিশদের বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।
১৭৭৫ - ব্রিটিশ রাজের হাতে মহারাজ নন্দকুমার গ্রেফতার হন।
১৮৩১ - ভারত উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের বালাকোট উপত্যাকায় মুক্তি বা আজাদী আন্দোলনের নেতা সাইয়েদ আহমাদ ব্রেলভী ইংরেজ ও শিখ বাহিনীর সাথে এক লড়াইয়ে শতাধিক মুজাহিদসহ শহীদ হন।
১৮৩৫ - জেমস গর্ডন ব্যানাট বিখ্যাত নিউইয়র্ক হেরাল্ড পত্রিকার প্রথম সংখ্যা প্রকাশ করেন।
১৮৪০ - ইংল্যান্ডে প্রথম ডাকটিকেট চালু হয়।
১৮৫৭ - ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ বেঙ্গল নেটিভ ইনফ্যান্ট্রিকে বিলুপ্ত করে। মঙ্গল পাণ্ডেকে সিপাহি বিপ্লবের প্রথম শহীদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১৮৮৯ - প্যারিসের আইফেল টাওয়ার সকলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করা হয়।
১৯১০ - বাবার মৃত্যুর পর পঞ্চম জর্জ ব্রিটেনের রাজা মনোনীত হন।
১৯১১ - পিকাসোর আঁকা ৩ কোটি ডলার মূল্যমানের ছবি প্রাগ ন্যাশনাল গ্যালারি থেকে চুরি হয়।
১৯৩৯ - জার্মানী ও ইতালী সামরিক ও রাজনৈতিক মৈত্রী ঘোষণা করে, যা বার্লিন-রোম অক্ষ নামে পরিচিত।
১৯৪০ - উইন্সটন চার্চিল বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
১৯৪৫ - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর জর্মানী ফ্রান্সের রাইমে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে।
১৯৫৪ - রজার ব্যানিস্টারই প্রথম ৪মিনিটে এক মাই দূরত্ব দৌড়ে অতিক্রম করেন।
১৯৬৫ - ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার বিল লরি ও সিম্পসন ৩৮২ রান করেন।
১৯৭৫ - মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফোর্ড ভিয়েৎনাম যুদ্ধ সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
১৯৮৮ - গ্রায়েম হিক উরচেস্টার এর হয়ে সমারসেটের বিপক্ষে একাই ৪০৫ রান করেন।
১৯৯১ - পিকাসোর আঁকা ৩ কোটি ডলার মূল্যমানের চারটি ছবি চেকোস্লোভিয়ার প্রাগস্থ ন্যাশনাল গ্যালারি থেকে চুরি হয়ে যায়।
১৯৯৪ - ব্রিটিশ রাণী এলিজাবেথ ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সিস মিতেরাঁ ২ দেশের মধ্যে চ্যানেল টানেল উদ্বোধন করেন।
১৯৯৪ - চীন-জাপান পারমাণবিক নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৯৭ - প্রয়াত গ্রেট পপ তারকা মাইকেল জ্যাকসন এবং বিখ্যাত ব্যান্ড দল বি গিস কে “রক এন্ড রোল” এর হল অব ফেইমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১৯৯৯ - সাবেক যুগোশ্লাভিয়ার বেলগ্রেডে ন্যাটোর ‘ভুলবশত’ চীনা দূতাবাসের উপর বোমা নিক্ষেপে দুইজন চীনা নাগরিক নিহত ও ২০ জন আহত হন।
২০০১ - সিরিয়া সফরের সময় প্রথম কোন পোপ হিসেবে পোপ পল ২ মসজিদে প্রবেশ করেন।
২০০২ - দীর্ঘ ১৯ মাস গৃহবন্দী থাকার পর মিয়ানমারের নেত্রী নোবেল বিজয়ী অংসান সুচি মুক্তিলাভ করেন।
জন্মদিন:
১৭৫৮ - ম্যাক্সিমিলিয়েন দ্য রোবসপিয়ের, ফরাসি আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ।
১৮৫৬ - সিগমুন্ড ফ্রয়েড, প্রখ্যাত অষ্ট্রীয় মনোবিজ্ঞানী। (মৃ. ১৯৩৯)
১৮৫৬ - এডুইন পিয়ারি, একজন মার্কিন মেরু অভিযাত্রী।
১৮৬১ - মতিলাল নেহেরু, ভারতের বিখ্যাত আইনজীবী ও ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর পিতা। (মৃ. ১৯৩১)
১৮৬৮ - গ্যাস্টোন লেরোউক্স, ফরাসি সাংবাদিক ও লেখক।
১৮৭১ - ভিক্টোর গ্রিগ্নারড, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি রসায়নবিদ ও শিক্ষাবিদ।
১৮৭২ - উইলেম ডে সিটার, নেদারল্যান্ডের বিখ্যাত গণিতবিদ, পদার্থবিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী। (মৃ. ১৯৩৪)
১৮৭২ - জামাল পাশা, উসমানীয় সামরিক নেতা। (মৃ. ১৯২২)
১৯০৪ - হ্যারি মারটিনসোন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুইডিশ লেখক ও কবি।
১৯১৫ - অরসন ওয়েলস, মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা, লেখক এবং প্রযোজক। (মৃ. ১৯৮৫)
১৯১৬ - রবার্ট হেনরী, মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী। (মৃ. ১৯৯৭)
১৯১৮ - জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান, আবুধাবির আমির এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম রাষ্ট্রপতি। (মৃ. ২০০৪)
১৯২৯ - পল লাউটারবার, মার্কিন রসায়নবিদ। (মৃ. ২০০৭)
১৯৩২ - আলাউদ্দিন আল আজাদ, বাংলাদেশী বাংলাদেশের খ্যাতিমান ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, কবি, নাট্যকার, গবেষক ও অধ্যাপক। (মৃ. ২০০৯)
১৯৪৩ - আন্দ্রিয়াস বাডের, জার্মান সন্ত্রাসী ও সহ-প্রতিষ্ঠিত রেড আর্মি দল।
১৯৪৬ - রজতকান্ত রায়, প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি ইতিহাসবিদ।
১৯৫০ - জেফ্রি ডেভার, মার্কিন রহস্য ও অপরাধ সাহিত্য লেখক।
১৯৫১ - স্যামুয়েল ডো, লাইবেরিয়া সার্জন, রাজনীতিবিদ ও ২১তম প্রেসিডেন্ট।
১৯৫৩ - টনি ব্লেয়ার, ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
১৯৬১ - জর্জ ক্লুনি, মার্কিন অভিনেতা, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সমাজকর্মী।
১৯৭৫ - অ্যালান রিচার্ডসন, ইংরেজ ক্রিকেটার।
১৯৮১ - লক্ষ্মী রতন শুক্লা, ভারতের পেস বোলার।
১৯৮৩ - দানি আলভেস, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার।
১৯৮৭ - মোন গেউন-ইয়উং, দক্ষিণ কোরিয়ার অভিনেত্রী।
১৯৮৭ - ড্রিস মের্টেনস, বেলজিয়ামের পেশাদার ফুটবলার।
১৯৮৯ - ডোমিনিকা কিবুল্কোভা, স্লোভাকিয়ান টেনিস খেলোয়াড়।
১৯৯২ - তাকাশি উসামি, জাপানি ফুটবলার।
১৯৯৪ - মাতেও কোভাচিচ, ক্রোয়েশীয় পেশাদার ফুটবলার।
মৃত্যুবার্ষিকী:
১৫৪০ - জুয়ান লুইস ভিভেস, স্প্যানিশ পণ্ডিত। (জ. ১৪৯২)
১৫৮৯ - তানসেন, উত্তর ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ সঙ্গীতজ্ঞ, আকবরের সভার নবরত্নের অন্যতম। (জ. ১৫০৬)
১৭৫৮ - ম্যাক্সিমিলিয়েন দ্য রোবসপিয়ের, ফরাসি বিপ্লবের নেতা, জঁ-জাক রুসোর অনুরাগী, জ্যাকোবিন টেররের নেতা। (মৃ. ১৭৯৪)
১৮৩১ - সাইয়েদ আহমাদ ব্রেলভী, ভারতের মুসলিম সংস্কার আন্দোলনকারী এবং “নবী মুহাম্মদের পথ” (তারিকাহ মুহাম্মাদিয়াহ), একটি বিপ্লবী ইসলামী আন্দোলন এর প্রতিষ্ঠাতা।
১৮৫৯ - আলেকজান্ডার ফন হুমবোল্ড্ট্, জার্মান অভিযাত্রী ও বিজ্ঞানী। (জ. ১৭৬৯)
১৮৭৭ - জোহান লুডভিগ রুনেবেরগ, সুইডিশ বংশোদ্ভূত ফিনিশ কবি ও স্তবগান লেখক।
১৯১৯ - এল. ফ্রাঙ্ক বাউম, আমেরিকান সাংবাদিক ও লেখক।
১৯৩০ - রজতকুমার সেন, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী নেতা। (জ. ১৯১৩)
১৯৪৯ - মোরিস মাতরলাঁক, বেলজীয় নাট্যকার, কবি এবং প্রবন্ধকার। (জ. ১৮৬২)
১৯৫১ - এলি কারতঁ, প্রভাবশালী ফরাসি গণিতবিদ। (জ. ১৮৬৯)
১৯৫২ - মারিয়া মন্টেসরি, ইতালীয় চিকিৎসক, শিক্ষাবিদ, এবং "মন্টেসরি শিক্ষাপদ্ধতি"র জন্য সুপরিচিত। (জ. ১৮৭০)
১৯৫২ - রেবতী মোহন বর্মণ, বিংশ শতাব্দীর বাঙালি লেখক। (জ. ১৯০৫)
১৯৬৩ - মন্টি উলি, মার্কিন অভিনেতা। (জ. ১৮৮৮)
১৯৭৩ - বৈজ্ঞানিক ও শিক্ষাবিদ ডা. সতীশরঞ্জন খাস্তগীর।
১৯৯২ - মারলেনে ডিট্রিশ, জার্মান অভিনেত্রী ও গায়িকা ছিলেন। (জ. ১৯০১)
২০০২ - পিম ফরটুয়ন, ডাচ সমাজবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ।
২০১১ - কাজী নূরুজ্জামান, বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্ত বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধা, সেক্টর কমান্ডার।
২০১৩ - গিউলিও অ্যান্ডরেওটি, ইতালীয় সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ ও ৪১ তম প্রধানমন্ত্রী।
২০১৫ - নভেরা আহমেদ, বাংলাদেশি ভাস্কর। (জ. ১৯৩৯)
নভেরা আহমেদ (২৯ মার্চ ১৯৩৯ - ৬ মে ২০১৫) ছিলেন একজন বাংলাদেশী ভাস্কর। তিনি বাংলাদেশের আধুনিক ভাস্কর্যশিল্পের অন্যতম অগ্রদূত এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথম বাংলাদেশী আধুনিক ভাস্কর।
১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদক প্রদান করে। তিনি প্রায় ৪৫ বছর মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত প্যারিসে বসবাস করেন।
নভেরার জন্ম বাংলাদেশের সুন্দরবনে মার্চ ২৯, ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে। চাচা নাম রাখেন নভেরা। ফার্সি শব্দ ‘নভেরা’র অর্থ নবাগত, নতুন জন্ম। কর্মসূত্রে তার বাবা সৈয়দ আহমেদ কর্মরত ছিলেন সুন্দরবন অঞ্চলে। তবে পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামের আসকারদিঘির উত্তর পাড়।
পরবর্তীতে তার বাবা চাকরিসূত্রে কিছুকাল কলকাতায় অবস্থার করায় নভেরার শৈশব কেটেছে কলকাতা শহরে। বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেই তিনি নাচ, গান শেখার পাশাপাশি মাটি দিয়ে মূর্তি তৈরী (মডেলিং) করতেন। তিনি কলকাতার লরেটা স্কুল থেকে প্রবেশিকা (ম্যাট্রিক) পাস করেন।
একজন ভাস্কর্য্য শিল্পী হিসেবে নভেরা আহমেদের মূল প্রবণতা ফিগারেটিভ এক্সপ্রেশন। তার কাজের প্রধান বিষয়বস্তু হচ্ছে নারী প্রতিমূর্তি। তবে নারী প্রতিমূর্তি নির্মাণে তিনি বিমূর্ততার দিকে ঝুঁকেছেন।
কাজের স্টাইলের দিক থেকে তিনি ব্রিটিশ ভাস্কর হেনরি মুর (১৮৯৮ - ১৯৮৬ খ্রি.) অনুবর্তী। পরবর্তী কালে আরো একজন ভাস্কর একইভাবে হেনরী মূর দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়েছেন তিনি হলেন জুলিয়া কেইক (১৯৭৩ - )। নভেরা আহমেদ এবং জুলিয়া কেইক-এর কাজের মধ্যে আশ্চর্যজনক সমিলতা রয়েছে।
সমসাময়িক পুরুষ শিল্পীরা ইউরোপীয় ইন্দ্রিয় সুখাবহ নারীদেহে একটি রোমান্টিক ইমেজ দেবার চেষ্ট করেন। এমনকি জয়নুল, কামরুলরা নারীকে মাতা, কন্যা, স্ত্রী এবং অনুভূতিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে দেখালেও নারীদের যথার্থ কর্মময় জীবন উহ্যই ছিল।
নভেরা আহমেদ নারীকে দেখেছেন সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে, পুরুষ শিল্পীদের উপস্থাপনার বিপরীতে। তার কাজে নর-নারীর গ্রন্থনা একটি ঐক্য গঠন করে। তিনি ভাসা ভাসা সুন্দর আনন্দময়ী আদর্শ ফর্ম করার পরিবর্তে তার ফর্মগুলোকে সরল, অর্থপূর্ণ, স্বকীয়তায় সমৃদ্ধ করেছেন।
২০২১ - পশ্চিমবঙ্গে জনশিক্ষা আন্দোলনের নেতা শক্তি মণ্ডল।
দিবস:
আন্তর্জাতিক নো-ডায়েট দিবস
এবি/এইচএন