নিজস্ব প্রতিবেদক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স্রোতে এক সময় হয়ে উঠে ইতিহাস। পৃথিবীর বয়স যতোই বাড়ে ইতিহাস ততোই সমৃদ্ধ হয়। এই সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনার প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরাচরিত। ইতিহাসের প্রতিটি দিন তাই ভীষণ গুরুত্ব পায় সকলের কাছে।
আমার বাঙলার পাঠকদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে সংযোজন করেছে নতুন আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর), ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৪ হিজরী। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনাবলী:
১০৯১ - টর্নেডোতে লন্ডনে দুজনের মৃত্যু হয়।
১১৫৭ - ডেনমার্কে গৃহযুদ্ধের অবসান হয়।
১৫২০ - অভিষিক্ত হন জার্মানির রাজা প্রথম কার্লোস।
১৬৮১ - ফরাসি সেনাবাহিনী স্টাটসবুর্গ দখল করে।
১৭৬৪ - বক্সারের যুদ্ধে মীর কাশিম ব্রিটিশদের কাছে পরাজয় বরণ করেন।
১৭৯০ - হাইতিতে দাস বিদ্রোহ হয়।
১৮১৪ - ইংল্যান্ডে প্রথম প্লাস্টিক সার্জারি করা হয়।
১৮৫৩ - রুশ-তুরস্ক মহাযুদ্ধ শুরু হয়।
১৯১৫ - নিউ ইয়র্কে ভোটাধিকারে দাবিতে ২৫ হাজার নারীর মিছিল।
১৯১৮ - চার্লি চ্যাপলিন মিলড্রেড হ্যারিসকে বিয়ে করেন।
১৯২৩ - দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ‘ফরওয়ার্ড’ পত্রিকা প্রকাশ করেন।
১৯৩২ - রেডিওতে ফ্রেড অ্যালেন শো শুরু হয়।
১৯৪১ - ওয়াল্ট ডিজনির ডাম্বো মুক্তি পায়।
১৯৪৩ - আজাদ হিন্দ সরকার ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
১৯৫৬ - সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আধিপত্যের বিরুদ্ধে হাঙ্গেরির জনগণ বিদ্রোহ শুরু করে।
১৯৫৯ - কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-চীন সংঘর্ষ শুরু হয়।
১৯৮৩ - বৈরুতে মোতায়েন মার্কিন ও ফরাসী সেনাদের ঘাটিতে লেবাননের মুসলমান জঙ্গি হামলায় ২৪১ জন মার্কিন ও ৫৮ জন ফরাসী সেনা নিহত হয়।
১৯৮৯ - হাঙ্গেরি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
১৯৯১ - কম্বোডিয়ায় গৃহযুদ্ধ অবসানে ১৩ বছর পর শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৯১ - ২১ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহণের অধিকার পায়।
১৯৯৩ - সকাল ১০টায় চীনের ইয়াং ফু সেতু সাফল্যের সঙ্গে নির্মিত এবং চালু হয়।
জন্মদিন:
১৫০৩ - জার্মান সম্রাজ্ঞী ইসাবেলা।
১৮৩৮ - গোবিন্দচন্দ্র রায়, ভারতীয় বাঙালি কবি।
১৮৮৬ - সুখলতা রাও, প্রখ্যাত বাঙালি শিশু সাহিত্যিক ও সমাজসেবী।
১৯২৯- শামসুর রাহমান, বাঙালি কবি ও লেখক।
আজ কবি শামসুর রাহমানের ৯১ তম জন্মদিন। তাকে বলা হয় কবিতার বরপুত্র। তিনি ছিলেন জনতার কবি।
শামসুর রাহমানের জন্ম ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরনো ঢাকার মাহুতটুলিতে। আর পৈতৃক ভিটা নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার পাড়াতলী গ্রাম। ১৩ জন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ।
১৯৪৫ সালে তিনিপুরনো ঢাকার পোগোজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন এবং ১৯৪৭ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ পাশ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হন শামসুর রাহমান।
তিনি ১৯৫৩ সালে পাস কোর্সে বিএ পাশ করে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলেও শেষ পর্বের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি।
শামসুর রাহমানের কবিতায় বাঙালির স্বাধীনতা প্রাপ্তির চেতনার দীপ্তস্বর উচ্চারিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন যুদ্ধের ধ্বংসলীলায় আক্রান্ত ও বেদনামথিত কবিতা 'স্বাধীনতা তুমি' ও 'তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা', যা আজো মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত।
‘‘স্বাধীনতা তুমি/শ্রাবণে অকূল মেঘনার বুক/স্বাধীনতা তুমি পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন।/স্বাধীনতা তুমি/উঠানে ছড়ানো মায়ের শুভ্র শাড়ির কাঁপন।/স্বাধীনতা তুমি/বোনের হাতের নম্র পাতায় মেহেদীর রঙ।/স্বাধীনতা তুমি/ বন্ধুর হাতে তারার মতন জ্বলজ্বলে এক রাঙা পোস্টার।’’
১৯৬০ সালে কবির প্রথম কবিতার বই ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’ প্রকাশ পায়। এরপর ষাট দশকে প্রকাশিত হয়- ‘রুদ্র করোটিতে’, ‘বিধ্বস্ত নীলিমা’, ‘নিরালোকে বসতি’, ‘নিজ বাসভূমে’।
দেশ স্বাধীনের পর প্রকাশ পায় ‘বন্দি শিবির থেকে’, ‘মাতাল ঋতিক’সহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শামসুর রাহমানের ৬০ টি কবিতার বই। পাশাপাশি শিশুতোষ, গল্পগ্রন্থ, উপন্যাস- ‘অক্টোপাস’ ও ‘অদ্ভুত আঁধার’, নাটক ও কবিতাগ্রসহ অনুবাদগ্রন্থ, নির্বাচিত কলাম, নির্বাচিত কবিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা শতাধিক।
তিনি সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, আদমজী পুরস্কার, একুশের পদক, কলকাতা থেকে আনন্দ পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন।
শামসুর রাহমান পেশায় সাংবাদিক ছিলেন। তিনি দৈনিক মর্নিং নিউজ-এ সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এছাড়া রেডিও পাকিস্তানের অনুষ্ঠান প্রযোজক ছিলেন। এছাড়া তিনি দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক-এর দায়িত্বও পালন করেন।
কবি শামসুর রাহমান ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার ইচ্ছানুযায়ী, ঢাকার বনানী কবরস্থানে নিজ মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
১৯৪০ - ফুটবল জাদুকর পেলে।
১৯৪১- চাষী নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পরিচালক।
১৯৪৩ - মোহাম্মদ রফিক, বাংলাদেশি কবি।
১৯৪৬ - সৈয়দ আবুল মকসুদ, কবি, লেখক, গবেষক, কলামিস্ট।
১৯৫৮ - হানিফ সংকেত, বাংলাদেশি টেলিভিশন উপস্থাপক, লেখক ও নির্মাতা।
১৯৭০ - চীনের বিখ্যাত সংবাদদাতা ফান ছাং চিয়াং।
২০০১ - রানা হোসেন, বাগেরহাটের ছেলে।
মৃত্যুবার্ষিকী:
১৬২৩ - তুলসীদাস, বিশিষ্ট হিন্দি কবি ও রামায়ণ রচয়িতা।
১৮৬৭ - ফ্রান্ৎস বপ, জার্মান ভাষাবিজ্ঞানী।
১৮৭২ - ফ্রান্সের বিখ্যাত লেখক ও কবি থিওফিল গৌতিয়া।
১৯১০ - থাইল্যান্ডের রাজা চুলালংকর্ন।
১৯১২ - রামতারণ সান্যাল,বিখ্যাত সংগীতাচার্য ও মঞ্চাভিনেতা।
১৯২১ - জন ব্যুও ডানলপ, টায়ারের উদ্ভাবক।
১৯৭৩ - নেলী সেনগুপ্তা, রাজনৈতিক কর্মী ও সমাজসেবী,স্বাধীনতা নিরলস সংগ্রামী।
১৯৮৩ - খন্দকার আবদুল হামিদ, বাংলাদেশের সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ।
২০০৫ - আবদুর রাজ্জাক, বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর।
২০১২ - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, বাঙালি সাহিত্যিক।
২০১৪ - গোলাম আযম, বাংলাদেশের একজন অবসরপ্রাপ্ত ইসলামী রাজনীতিবীদ এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দন্ডপ্রাপ্ত একজন যুদ্ধাপরাধী।
২০২৩ - বিষেন সিং বেদী, ভারতের সাবেক ও প্রথিতযশা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
এবি/এইচএন